রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১

ভোলাহাট-রহনপুর সড়কটি জোড়া-তালি দিয়ে কত কাল চলবে!


প্রকাশিত:
১৫ এপ্রিল ২০২১ ২০:৫৯

আপডেট:
১৮ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:১১

ছবি: সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভোলাহাট-রহনপুর সড়কটি প্রতিনিয়ত এ ভাবেই জোড়া-তালির কাজ চলে

বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ভাবে উন্নয়ন করতে যখন বিভিন্ন সড়কের উন্নয়নে সরকার ব্যাপক তৎপর। কৃষি পণ্য এক স্থান থেকে অন্য স্থানে সরবরহ করে মধ্যস্বত্ব ভোগিদের দৌরাত্ব কমিয়ে কৃষকদের উৎপাদিত পণ্যের নায্য মূল্য পাইয়ে দিতে সারা দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন চোখে পড়ার মত।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে অর্থনৈতিক ভাবে দেশের উন্নয়নে যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক উন্নয়ন করেছেন। ঠিক এমন সময় দেশের সর্ব কনিষ্ঠ ও ভারত সীমান্তবর্তী অবহেলিত চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার ভোলাহাট উপজেলাটি যোগাযোগ ব্যবস্থা রয়ে গেছে সরকারের চোখের আড়ালে।

ভোলাহাট হতে রহনপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা, বিভাগ, রাজধানীসহ বিভিন্ন অঞ্চলে যাওয়ার ২২ কিলোমিটারের এক মাত্র মূল সড়কটি এখনো কারো চোখে পড়ে না। রাস্তাটি দিয়ে চলাচল করেন বড় বড় কর্মকর্তা, কর্মচারী, সকল রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, জনপ্রতিনিধি। কিন্তু তারা দেখেও না দেখার ভান করে চলাচলা করছেন।

ভোলাহাট উপজেলাকে বলা হয় আমের রাজধানী। আম মৌসুমে কোটি কোটি টাকার আম এ সড়কটি ব্যবহার করে শত শত আম বোঝাই ট্রাক ছুটে চলে এ সড়ক দিয়ে। রয়েছে দেশের ২য় বৃহত্তম বিল বিলভাতিয়া। যেখানে কোটি কোটি টাকার মাছ ও ধান উৎপাদন হয়।

এছাড়াও বেকার যুবকেরা বেকারত্ব দূর করতে ঝুঁকে পড়েছেন পিয়ারা ও বরই চাষে। রয়েছে ঐতিহ্যবাহি রেশম চাষ। সব কিছুই পরিবহণের জন্য নির্ভর করতে হয় সড়ক ও জনপথ বিভাগের ভোলাহাট হতে রহনপুরের মাত্র ২২ কিলোমিটারের মূল সড়কটির উপর। ১৯৮৬ সালে কাঁচা রাস্তা থেকে হিয়ারিং হয়। পরে কার্পেটিং । যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন দেখে চোখে মুখে আনন্দের জোয়ার নেমে আসে ভোলাহাটবাসির।

ব্যবসা বাণিজ্যসহ বিভিন্ন উন্নয়নের দ্বার খোলায় অর্থনৈতিক উন্নয়নের স্বপ্নে আনন্দের বন্যায় ভেসে যায় মানুষ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আনন্দ আর আনন্দ রইলো না। রাস্তা ভাঙ্গে পড়লে পূণঃনির্মাণ আর হলো না। দফায় দফায় সংস্কারের নামে সরকার অর্থ খরচ করলেও কিছু অসাধু কর্মকর্তাদের কারণে রাস্তাটি ভেঙ্গে গিয়ে যানবাহন চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পড়ে। এমন কি রাস্তাটি চলাচলে অনুপযোগি হয়ে পড়লে গণপরিবহণ বাস চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এখন বাস চলাচল সম্পন্ন বন্ধ। উ

পজেলার মানুষকে এখন নির্ভর করতে হয় অটো, সিএনজির উপর। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে উন্নয়নের জন্য রাস্তাটি প্রস্থ্য করে উন্নত মানের সড়কের দাবী এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের। নির্বাচন আসলে সর্বপেশাজীবিদের মূল সড়কটি পূনঃনির্মাণের দাবীর মুখে পড়েন জনপ্রতিনিধিরা। জনপ্রতিনিধিরা প্রতিশ্রুতি দিলেও এখন পর্যন্ত রাস্তাটির কোন উন্নয়ন হয়নি বরং ফিরে গেছে ১৯৮৬ সালের হিয়ারিং রাস্তায়।

জনপ্রতিনিধিদের মিথ্যা আশ্বাস হতাশ গোটা উপজেলা। সরজমিন দেখা গেছে, ভোলাহাট হতে রহনপুর পর্যন্ত ২২ কিলোমিটার রাস্তাটি সম্প্রতি জায়গা জায়গা সংস্কারের নামে হিয়ারিং ও কার্পেটিং করলে দায়সারা কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করে এলাকাবাসি।

ঠিকাদার ও জনপ্রতিনিধিরা এলাকাবাসির চাপের মুখে পড়েন। এলাকাবাসির দাবী সড়কটিতে জোড়া-তালি দিয়ে সড়ক ও যোগাযোগ বিভাগ যা করছে তাতে জনগণের উপকার না করে কিছু অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের পকেট ভর্তি ছাড়া কিছু হচ্ছে না।

রাস্তাটিতে প্রতিনিয়ত চলছে জোড়া-তালি। দিনের পর দিন চলছে সংস্কার। রাস্তাটি টিকসই সংস্কার হচ্ছে না পূণঃনিমার্ণও হচ্ছে না। এ রাস্তা এলাকাবাসির জন্য চরম ভোগান্তি। অপরদিকে সারা বছর সংস্কারের নামে অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদারের নিরাপদ আয়ের উৎস।আর কত কাল চলবে জোড়া-তালি? এমন প্রশ্ন সরকারের কাছে অবহেলিত ভারত সীমান্তবর্তী উপজেলাবাসির।

উপজেলাবাসি অভিযোগ করে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক সেতু ও পরিবহণ মন্ত্রী ওবাইদুল কাদের দক্ষতার সাথে তার মন্ত্রনালয় পরিচালনা করার পরও একটি উপজেলার মূল সড়ক মরণ ফাঁদ হয়ে ভোগান্তির শিকার হয়ে এলাকাবাসিকে ভুগতে হবে এটা সরকারের বৈষম্য না হয় মফস্বল এলাকার অসাধু কর্মকর্তারা দরজা বন্ধ করে সড়কটিকে আয়ের উৎস বানিয়ে যে নৈরাজ্য করছেন তার দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তির দাবী করেছেন। অপরদিকে একটি বঞ্চিত উপজেলাবাসিকে নাগরিক সুবিধা দিতে ২২ কিঃমিটারের রাস্তাটি দ্রুত পূণঃনির্মাণে দাবী সুবিধা বঞ্চিত উপজেলাবাসির। ভোলাহাট উপজেলার ভোলাহাট-রহনপুর সড়কটিতে হাজার হাজার খানাখন্দে ভরে যাওয়ায় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ফলে দ্রুত রাস্তাাটি পূণঃনির্মাণ করার দাবী করেছেন উপজেলার সকল পেশাজীবিরা।

সচেতনমহল দাবী করেছেন, রাস্তাটি প্রস্থ্য করে পূণঃনির্মাণ করা না হলে দূর্ঘটনা বেড়েই চলবে। ছোট বড় পরিবহণ মালিক ও চালকেরা অভিযোগ করে বলেন, এ সড়কটি দিয়ে যাবাহন চলাচল করতে গিয়ে অটো, সিএনজির আয়ু অর্ধেকে নেমে আসছে। রাস্তাটি খুক সরু হওয়ায় বড় যানবাহন পারাপারে ঝুঁকির মুখে পড়তে হয়। অনেক জায়গায় যাত্রীসহ যানবাহন উল্টে সড়ক দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছেন যাত্রীরা। সকলের দাবী আর কত কাল জোড়া-তালি। সরকারের কাছে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী উপজেলাবাসির। সড়কটি প্রস্থ্য করে পূণঃনির্মাণ করা হলে ভোলাহাট উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন কয়েক গুণ বৃদ্ধি পাবে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদরা।

আরপি/ এসআই



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top