রাজশাহী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে নারী কৃষি কর্মকর্তার লাশ উদ্ধার


প্রকাশিত:
৩০ জুন ২০২১ ২০:৪৮

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৩৫

প্রতীকী ছবি

রাজশাহীর পুঠিয়ায় খাদিজা আক্তার (৪০) নামে একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার রহস্যজনক লাশ উদ্ধার করেছেন পুলিশ। তবে নিহতের পরিবার দাবি করছেন শ্বশুড়বাড়ির লোকজন তাকে হত্যা করেছেন।

অপরদিকে তার স্বামী দাবি করছেন তিনি রাতের যে কোনো সময় ঘরের তীরে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। খবর পেয়ে পুলিশ লাশ ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছেন।

খাদিজা আক্তার উপজেলার জিউপাড়া ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের আব্দুল ওহাবের স্ত্রী ও পবা উপজেলা কৃষি অফিসের অধীনে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা হিসেবে চাকুরি করতেন। আর তার স্বামী রাজশাহী পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের সহকারী শিক্ষক।

মঙ্গলবার (২৯ জুন) দিবাগত রাতের যে কোনো সময় তাদের নিজ বাড়ি ডাঙ্গাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। আর বুধবার (৩০ জুন) দুপুর ১২ টার দিকে পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছেন।

খাদিজা আক্তারের ভাই আবুল কালাম বলেন, লাশের শরীরে আত্মহত্যার কোনো আলামত নেই। তাকে কৌশলে মেরে ফেলা হয়েছে। তাছাড়া ওই বাড়ির পাশের কোনো লোক খাদিজাকে ফাঁসিতে ঝুলতে দেখেনি। আমরা বিষয়টি আইনীভাবে লড়ব।

প্রতিবেশী আব্দুল্লাহ বলেন, আব্দুল ওহাব ও খাদিজা আক্তার বিয়ে হয়েছে প্রায় ২০ বছর আগে। খাদিজার বাপের বাড়ি বগুড়া জেলা সদরে। আর তারা র্দীঘদিন যাবত দুজনেই চাকুরির সুবাদে রাজশাহী শহরে ভাড়া বাড়িতে থাকেন। কিন্তু প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও শনিবার গ্রামের বাড়িতে চলে আসেন। আব্দুল ওহাব একজন শিক্ষিত মানুষ ও শিক্ষক হলেও তার স্ত্রীর উপর মাঝে মধ্যেই অমানুষিক অত্যাচার করতো। প্রকাশ্যে মারধর করতো। এতো অত্যাচার লাঞ্চনা সয়েও তার তিনটি সন্তানের দিকে তাকিয়ে সব ভুলে এখানেই থাকতো। সে সূত্রে মঙ্গলবার বিকেলেও তাদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছে। এরপর রাতে কি হয়েছে তা পাশের বাড়ির কেউ জানেন না। ভোরে তার স্বামীর বাড়ির লোকজন বলছেন সে আত্মহত্যা করেছেন।

নিহতের ছেলে গালিব (৯) বলেন, ঘটনার রাতে এই বাড়িতে তারা তিন ভাই মা-বাবা ও দাদী ছাড়া কেউ ছিলেন না। রাতে আমরা সবাই ঘুমিয়ে ছিলাম। বাবা ও মার মধ্যে কোনো ঝগড়া বা মারামারি আমরা দেখতে পাইনি। এরপর অনেক রাতে দাদী আমাদের ঘুম থেকে ডেকে তুলেছেন। এরপর গিয়ে দেখি মা মরে গেছে। তবে কিভাবে মরেছে তা আমি জানি না।

নিহতের স্বামী আব্দুল ওহাব বলেন, আমরা রাতের খাবার শেষ করে শুয়ে পড়ি। এরপর সে কখন উঠে গিয়ে গলায় দড়ি দিয়েছে তা বুঝতে পারিনি। পরে রাত সাড়ে ১২টার দিকে ছোট ছেলে ঘুম থেকে উঠে কান্নাকাটি শুরু করে। এরপর তাকে রুমে না পেয়ে খুজাখোঁজি শুরু করি। এক পর্যায়ে পুরনো ঘরের তীরে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পাই। এরপর সকালে থানায় খবর দেয়া হয়।

এ ব্যাপারে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহরাওয়াদী হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করেছেন। লাশের ময়নাতদন্তের জন্য বিকেলে মর্গে পাঠানো হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে এটা আত্মহত্যা হতে পারে। তবে ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না। আর নিহতের পরিবারের পক্ষে দুপুর ১টা পর্যন্ত কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি।

 

 

আরপি/এসআর-০৪



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top