রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

লকডাউনে চড়া রাজশাহীর কাঁচাবাজার


প্রকাশিত:
১২ জুন ২০২১ ০৩:৩১

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৭:১১

ছবি প্রতিনিধি

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকায় শুক্রবার বিকেল পাঁচটা থেকে ১৭ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত লকডাউন ঘোষণা করা হয়েছে। লকডাউনের ঘোষণায় যেন আগুন লেগেছে রাজশাহীর কাঁচাবাজারে। শুক্রবার সকালে বাজার স্থির থাকলেও বেলা বাড়ার সাথে বাজারে বাড়তে থাকতে ক্রেতার সংখ্যা। উপচে পড়া ভিড়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে দাম।

শুক্রবার রাজশাহীর সাহেববাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজার বসার শুরুতে দাম স্থির থাকলেও ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। দুপুরের মধ্যেই বেচাকেনা শেষ করেছেন বেশিরভাগ ব্যবসায়ী। সবজি ছাড়াও এদিন দাম চড়া ছিল মাছের বাজারে। বেশিরভাগ মাছের কেজিতে ১০০ থেকে দেড়শো টাকা বেশিতে বিক্রি করেছেন বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

প্রতি কেজিতে ১০০ থেকে দেড়শো টাকা দাম বেড়ে প্রতি কেজি ট্যাংরা ৬০০ টাকা, পিয়ালি ৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০ টাকা, মোয়া ৪০০ টাকা, কাতল ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, সিলভার ২০০ টাকা, মৃগেল ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, রুই ৩০০ টাকা, বোয়াল ৮০০ টাকা, চিংড়ি ১০০০ টাকা দামে বিক্রি হয়েছে। এছাড়াও ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭৫০ থেকে ১০০০ টাকায়।

মাছ বিক্রেতা নুরুল ইসলাম বলেন, গাড়িঘোড়া বন্ধের কারনে বাজারে মাছের আমদানি কম। তার ওপর আজ থেকে লকডাউন। বাজারে ক্রেতার সংখ্যা বেশি। চাহিদা প্রচুর। এজন্য দেখেন, বাজারের মাছ দুপুরের মধ্যেই প্রায় শেষ হয়ে গেছে। দাম এজন্য কিছুটা বেশি।
মাছের দাম বাড়লে স্থির ছিল মাংসের বাজার। গত ঈদের পরে প্রায় সপ্তাহ দুয়েক বাজারে গরুর মাংসের দাম ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ৫৬০ টাকা কেজিতে। বর্তমানে সেটা কমে পূর্বের মত ৫৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া খাশির মাংস ৮০০ থেকে ৮৫০ টাকা ও ছাগলের মাংস ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

বিক্রেতা মো. কাজিম জানিয়েছেন, মুরগির মধ্যে ব্রয়লার ১৩০ টাকা, সোনালী ১৯০ টাকা, সাদা লেয়ার ২০০ টাকা ও দেশি মুরগি ৪২০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহে হুট করে রাজশাহীতে কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে যায় পেঁয়াজের দাম। সেই দামেই বিক্রি হচ্ছে পেঁয়াজ। বিক্রেতা মো. রাজু জানিয়েছেন, শুক্রবার বাজারে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, আদা ৮০ টাকা, রসুন ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ও শুকনা মরিচ ২২০ থেকে ২৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

দাম বেড়েছে কাঁচামরিচের। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, সকালের শুরুতে কাঁচামরিচ ২০ থেকে ২৫ টাকা কেজিতে বিক্রি শুরু হয়। ক্রেতা ও চাহিদা বাড়ার সঙ্গে দাম বেড়ে শেষ পর্যন্ত ৬০ টাকা কেজিতেও মরিচ বিক্রি করতে দেখা গেছে।
এছাড়াও বাজারে ৫ থেকে ১০ টাকা বেশি দামে বিক্রি হয়েছে সবজি। জানতে চাইলে বিক্রেতারা বিভিন্ন সময়ের দাম গড় করে জানান, প্রতি কেজি আলু ১৮ থেকে ২০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ১৫ থেকে ২০ টাকা, ঝিঙে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, পেপে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বেগুন ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, ঢেড়স ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বরবটি ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।

জানতে চাইলে ক্রেতা মোছা. নাহার বলেন, বাজারে সবকিছুর দাম একটু বেশিই মনে হচ্ছে। আর আজকে প্রচুর ভিড়। বাজারে হাটা যাচ্ছে না। লকডাউনের ঘোষণা শুনেই মানুষের মিছিল লেগে গেছে বাজারের দিকে।

তবে মোটামুটি স্থির রয়েছে চালের দাম। বাজারে প্রতি কেজি আটাশ নতুন ৫২ টাকা, পুরাতন ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা, মিনিকেট নতুন ৫৮ টাকা, পুরাতন ৬২ টাকা, জিরাশাল নতুন ৫৮ টাকা, পুরাতন ৬০ থেকে ৬২ টাকা, বাসমতি নতুন ৬৬ টাকা, পুরাতন ৬৮ টাকা, নাজিরশাল ৬৮ টাকা, কাটারীভোগ সেদ্ধ নতুন ৬০ টাকা, পুরাতন ৭৫ টাকা, স্বর্ণা ৪৮ টাকা, কালজিরা ৮০ থেকে ৯০ টাকা, চিনিগুড়া ৯৫ থেকে ১০০ টাকা, বালাম ৬৫ ও রনজিত ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।

সাহেববাজারের বড় খুচরা ব্যবসায়ী এপি চাউল ভান্ডারের মালিক অশোক প্রসাদ বলেন, বাজারে চালের দাম স্থির রয়েছে। বাজারে চালের আমদানি হচ্ছে না। আমদানি যদি বাড়ে তবে দাম কমতে পারে।

আরপি/ এসআই



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top