রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ১৬ই মে ২০২৪, ৩রা জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১


ইজতেমা: প্রতিদিন ৩ কোটি গ্যালন পানি উত্তোলন হবে


প্রকাশিত:
১৬ জানুয়ারী ২০২০ ২২:৪২

আপডেট:
১৬ জানুয়ারী ২০২০ ২২:৪৩

ছবি: সংগৃহীত

সিটি করপোরেশনের সাড়ে ৪০০ পরিচ্ছন্নতাকর্মী এবং ২৯টি বর্জ্য পরিবহনের মাধ্যমে সব আবর্জনা অপসারণ করা হচ্ছে। সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে ময়দানে নতুন করে ৫০০ ট্রাক বালি ফেলে ময়দান উঁচু করা হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্বের মুসল্লিদের সুবিধার্থে ইজতেমার পুরো ময়দানে ৮০০ ড্রাম ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে। মুসল্লিদের পানির সুবিধার্থে প্রতিদিন ৩ কোটি গ্যালন পানি উত্তোলনের সুবিধা থাকছে ইজতেমা ময়দানে বলে জানান গাজীপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর আলম।

বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে আগামীকাল ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার ফজর পর। সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের সব আয়োজন থাকছে প্রথম পর্বের মতোই। মঙ্গলবার থেকেই মাওলানা সা’দপন্থী মুসল্লিরা আসতে শুরু করেছেন। দ্বিতীয় পর্বের ইজতেমায় রেকর্ড সংখ্যক দেশি-বিদেশি মুসল্লি অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করছেন আয়োজকরা।

 

সেইসাথে তিন দিনের এই বিশ্ব ইজতেমায় আমল, আখলাক, দুনিয়া ও আখেরাতে সুখ-শান্তির লক্ষ্যে দিন-রাত বয়ান চলবে প্রথম পর্বের মতোই। ময়দানের নিচু স্থানে বালি ফেলা হচ্ছে, ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও চারপাশে ব্লিচিং পাউডার ছিটানো হচ্ছে।

ইজতেমা ময়দানে আজ বৃহস্পতিবারের মধ্যেই দেশের বিভিন্ন এলাকা ও বিদেশ থেকে তাবলিগ জামাতের অনুসারীরা জড়ো হবেন। তবে ১৯ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাত পর্যন্ত মুসল্লিদের আসা অব্যাহত থাকবে। রবিবার বেলা ১১টার দিকে আখেরি মোনাজাতের মধ্য দিয়ে শেষ হবে ২০২০ সালের বিশ্ব ইজতেমা। ভারতের মাওলানা সা’দ কান্দলভীর অনুসারীর সমন্বয়কারী হাজী মনির হোসেন বিষয়গুলো নিশ্চিত করেছেন।

৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের সমন্বয়কারী হাজী মনির হোসেন জানান, বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্বের কার্যক্রম চালানোর জন্য ময়দানের দায়িত্বও বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্টদের। স্থানীয় প্রশাসন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ও তাবলিগের সাথিরা ইতোমধ্যে ইজতেমা ময়দানের ভেতর এবং বাইরের প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছেন। দ্বিতীয় পর্বের আয়োজনে নেতৃত্বে রয়েছেন সা’দপন্থী মুরুব্বি ওয়াসেকুল ইসলাম ও শাহাবউদ্দিন নাসিম। 

ইতোমধ্যে নজমের জামাতের (মাঠ কন্ট্রোল করা) হাজার হাজার জিম্মাদার সারাদেশ থেকে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) রাতেই ইজতেমা ময়দানে প্রবেশ করেছেন। নজমের জামাতগুলোর মধ্যে রয়েছেন সব জেলা, মহানগর ও ঢাকা শহরের খিত্তার জামাত, মসজিদওয়ার খুঁটির জামাত, তাশকিলের জামাত, জুড়নেওয়ালি জামাত, পাহাড়ার জামাত, মিম্বরের জামাত, মুকাব্বিরের জামাত, ইস্তেকবালী জামাত, মাসআলা হলের জামাত, খোমতের জামাত, ফরেন (বিদেশি) জিম্মাদারদের জামাত, পানি ব্যবস্থাপনার জামাত, মাইক ব্যবস্থাপনার জামাত, বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার জামাত, সাফাইর (পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার) জামাত।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপির) কমিশনার আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বেও থাকবে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা। দ্বিতীয় পর্বের বিশ্ব ইজতেমায় থাকছে পাঁচ স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। র‍্যাব, পুলিশ ও সাদা পোশাকে থাকছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় আট হাজার সদস্য। পুরো ইজতেমা ময়দান জুড়ে সিসিটিভি, ওয়াচ টাওয়ার ও মেটাল ডিটেক্টরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হবে। নিরাপত্তা বলয় থাকবে ইজতেমা মাঠ ও মাঠের বাইরে।’

গাজীপুরের জেলা প্রশাসক (ডিসি) এসএম তরিকুল ইসলাম জানান, ‘প্রথম পর্বের ইজতেমা শেষে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ইজতেমা ময়দান স্থানীয় প্রশাসন বুঝে নিয়ে দ্বিতীয় পর্বের মুরুব্বিদের কাছে হস্তান্তর করে। ময়দানের মাইক, লাইট, শামিয়ানার চটসহ যাবতীয় মালামাল বুঝিয়ে দেওয়া হয়। বিশ্ব ইজতেমা উপলক্ষে প্রথম পর্বের মতো দ্বিতীয় পর্বের মুসল্লিদের জন্যও থাকবে বিশেষ কিছু ব্যবস্থা। আয়োজকদের সঙ্গে স্থানীয় প্রশাসন এসব কাজে সমন্বয় করছে। ২০২১ সালের ইজতেমাও দুই পর্বে অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পর্ব হবে ৮, ৯ ও ১০ জানুয়ারি এবং দ্বিতীয় পর্ব অনুষ্ঠিত হবে ১৫, ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি।’

উল্লেখ্য, গত চার বছর ধরে ৬৪টি জেলার মধ্যে ৩২ জেলা করে দুই পর্বে তাবলিগ জামাতের ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছিল। গত বছর ইজতেমার একক নিয়ন্ত্রণ নিতে ইজতেমা ময়দানে দুই পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে কয়েকজন মুসল্লি হতাহত হন। এরপর থেকে যোবায়েরপন্থী এবং সা’দপন্থী নামে তাবলিগ জামাতের ইজতেমায় দুটি গ্রুপের সৃষ্টি হয়। ১৯৬৭ সাল থেকে টঙ্গীর এই ময়দানে বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

 

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top