রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ১৮ই এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১


যে দুই কারণে মানুষ বেশি বেহেশতে যাবে


প্রকাশিত:
১৫ আগস্ট ২০২২ ০২:২৫

আপডেট:
১৮ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:২৮

ফাইল ছবি

জান্নাত চির শান্তির জায়গা। নেককার বান্দার জন্য আল্লাহর প্রতিশ্রুত স্থায়ী নিবাস। সেখানে আরাম- আয়েশ, সুখ-শান্তি, আমোদ-প্রমোদ, চিত্ত বিনোদন ও আনন্দ-আহ্লাদের চরম ও পরম ব্যবস্থা রয়েছে। রয়েছে ভোগ-বিলাস ও পানাহারের আতিশয্য। জান্নাতের অধিবাসীদের কোনো ইচ্ছে-প্রত্যাশা অপূর্ণ থাকবে না। সেখানে সবাই যুবক হয়ে বাস করবে। কোনো রোগ-শোক, জরাজীর্ণতা, মন্দা, বার্ধক্য, দুর্বলতা ও অপারগতা থাকবে না।

আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণনা করেন, মানুষকে সবচেয়ে বেশি জান্নাতে নেবে এমন কিছু সম্পর্কে রাসুল (স.)-কে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি বলেন, ‘আল্লাহর ভয় ও সুন্দর চরিত্র।’ অতঃপর মানুষকে যা জাহান্নামে বেশি নেবে এমন বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়। তিনি বলেন, ‘মুখ ও লজ্জাস্থান।’ (তিরমিজি: ২০০৪)

উপরোক্ত হাদিসে প্রিয়নবী (স.) জান্নাতে যাওয়ার মৌলিক দুটি কাজের কথা উল্লেখ করেছেন, যা অধিক পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। নিচে সে দুটি কাজের আলাদা ব্যাখ্যা করা হলো—

১) আল্লাহর ভয়
তাকওয়া বা আল্লাহভীতি হচ্ছে সব ভালো কাজের উৎস। ভালো কাজের মাধ্যমে আল্লাহর আজাব থেকে বেঁচে থাকার নাম তাকওয়া। আগের ও পরের সব উম্মতকে তাকওয়া অর্জনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘আর নিশ্চয়ই আমি নির্দেশ দিয়েছিলাম তোমাদের আগে যাদের কিতাব দেওয়া হয়েছিল তাদের এবং তোমাদেরও; যেন তোমরা তাকওয়া অবলম্বন করো।’ (সুরা নিসা: ১৩১)

কোরআন শিক্ষা, আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে গবেষণা এবং ইখলাসের সঙ্গে ইবাদত ছাড়া যেমন তাকওয়া অর্জন হয় না, রাসুলুল্লাহ (স.)-এর প্রতি শ্রদ্ধাশীল না হলেও তাকওয়া অর্জন করা অসম্ভব। বরং তা ইসলামি দৃষ্টিকোন থেকে তাকওয়াহীনতারই পরিচয়। নবীজির প্রতি শ্রদ্ধার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে মহান আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহর রাসুলের সামনে নিজেদের কণ্ঠস্বর নিচু করে, আল্লাহ তাদের অন্তরকে তাকওয়ার জন্য পরিশোধিত করেছেন। তাদের জন্য রয়েছে ক্ষমা ও মহা পুরস্কার। (সুরা হুজরাত: ৩)

২) উত্তম চরিত্র
হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী, বেশি পরিমাণ মানুষকে জান্নাতে নেওয়ার দ্বিতীয় গুণটি হলো উত্তম চরিত্র। এই গুণটি নির্ধারণের জন্য নবীজির (স.) চরিত্রের দিকে তাকাতে হবে। তাঁর চরিত্র সম্পর্কে মহান আল্লাহ সাক্ষ্য দিচ্ছেন, ‘আর নিশ্চয়ই আপনি মহান চরিত্রের ওপর অধিষ্ঠিত।’ (সুরা কালাম: ৪)

আয়েশা (রা.)-কে নবীজির চরিত্র সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেছিলেন, ‘জেনে রাখো! পুরো কোরআনই হলো রাসুল (স.)-এর চরিত্র।’ অর্থাৎ তিনি ছিলেন আল-কোরআনের বাস্তব নমুনা। (মুসনাদে আহমদ: ২৫৮১৩)

বোঝা গেলো, মহৎ চরিত্র নির্ধারণে পবিত্র কোরআনে বর্ণিত নিয়ম-নীতির পূর্ণ অনুগামী হতে হবে। আলী (রা.) বলেন, মহৎ চরিত্র হলো কোরআনে বর্ণিত শিষ্টাচার। (কুরতুবি)

ইসলামে উত্তম চরিত্র গঠনের মৌলিক উপায়গুলোর মধ্যে সত্যবাদিতা, আমানতদারিতা, বিনয় ও নম্রতা, পিতা-মাতার প্রতি সদ্ব্যবহার, আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা, অঙ্গীকার পূর্ণ করা, প্রতিবেশীর সঙ্গে সদ্ব্যবহার, ধৈর্য ও সহিষ্ণুতা, লজ্জা, ন্যায়পরায়ণতা, দয়া অন্যতম।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে তাকওয়ার গুণে গুণান্বিত হওয়ার এবং মহৎ চরিত্রের অধিকারী হওয়ার তাওফিক দান করুন। পরম সুখের চীরস্থায়ী জান্নাত দান করুন। আমিন।

 

আরপি/ এমএএইচ

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top