রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ


প্রকাশিত:
২৮ অক্টোবর ২০২০ ২১:০৬

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ০৩:২৪

টানা কয়েক দফা বন্যায় সবজি বিনষ্ট হওয়ায় বাড়তি চাপ পড়েছে আলুর উপর। তাই রাজশাহী জেলায় চলতি মৌসুমে ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হচ্ছে বলে জানিয়েছেন রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। জেলায় আলু চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে ইতিমধ্যে দফায় দফায় উঠান বৈঠক এবং বিভিন্ন সমাবেশ করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।


জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর বলছে, রাজশাহীতে কার্ডিনাল, ডায়মন্ড ও এ্যাস্টেরিক জাতের আলু বেশি চাষ হয়। গত রবি ২০১৯-২০ মৌসুমে জেলায় ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলুর চাষ হয়েছে। এতে হেক্টর প্রতি গড় ফলন ছিলো ২৬ টন। মোট উৎপাদন ছিলো ৯ লক্ষ ৬৩ হাজার মেট্রিক টন। চাষিরা বলছেন, বিগত কয়েক বছর ধরে তারা আলুর নায্য দাম পান না। তবে গত দুই বছর থেকে দাম ভালো পাওয়ায় আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন তারা।


তানোর যোগীশহ এলাকার আলু চাষি রেজাউল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রতি বছর ২০ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করি। বর্তমানে আলুর দাম ভালো দাম রয়েছে। এ বছরও কৃষি র্কর্মকতাদের পরামর্শ নিয়ে ২০ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করবো। পাশা-পাশি কিছু জমি কনটাক্ট নিয়েও ভালো দামের আশায় বাণিজ্যিকভাবে আলুর চাষ করবো বলে জানান তিনি।


একই উপজেলার পাঁচন্দর ইউনিয়নের আলু চাষি আব্দুর রাকিব এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, গত বছর ৫০ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছিলাম। কিন্তু এবছর আলুর বীজ সংকট এবং দাম বেশি হওয়ায় ৩০ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করবো। আব্দুর রাকিব বলেন, বেশি দামে আলুর বীজ কিনে চাষ করলে কতটা লাভ হবে সেটা বলতে পারছি না। আলুর দাম বেশি হলে বীজের দামও বেশি হয়। আমরা যে দামে বীজ কিনে আলুর চাষ করি ভরা মৌসুমে নায্য দাম পাইনা বলে জানান আলু চাষি আব্দুর রাকিব। বাগমারা উপজেলার আউচপাড়া ইউনিয়নের স্থায়ী বাসিন্দা লায়েব আলী এগ্রিকেয়ার২৪.কমকে বলেন, প্রতি বছর আলুর চাষ করি। গত বছর দুই বিঘা জমিতে আলুর চাষ করেছিলাম।

কৃষি কর্মকর্তাদের পরামর্শে আলু চাষ করায় ফলনও ভালো হয়েছিলো। আমাদের গ্রামে অনেকেই আলুর চাষ করেছিলো। কিন্তু ভরা মৌসুমে আমরা তেমন নায্য দাম পাইনি। তিনি বলেন, বীজ হিসেবে আলু ব্রিক্রি করলে ভালো দাম পাওয়া যায়। এ বছর ৫ বিঘা জমিতে আলুর চাষ করবো বলে জানান তিনি।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামছুল হক রাজশাহী পোস্ট কে বলেন, এ বছর জেলায় আগাম আলু চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে ইতিমধ্যে একটি পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪২ হেক্টর জমিতে আগাম আলুর চাষ করা হয়েছে। ভালো দাম পাওয়ায় এ বছর আলু চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন কৃষক।

আর নির্ধারিত সময়ে আলু চাষের জন্য উঠান বৈঠক ও বিভিন্ন সমাবেশের মাধ্যমে তাদেরকে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। এছাড়া কৃষকরা যাতে আলুর ভালো ফলন পান সেই জন্য সার, সেচ ও পোকামাকড় ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, এ বছরও ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষের জন্য লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। আর এই নির্ধারিত পরিমাণ হেক্টর জমিতে আলুর চাষ করা হলে সেখান থেকে উৎপাদিত আলু জেলার চাহিদা মিটিয়ে অন্য জেলায় বিক্রি করতে পারবে।

রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে ৩৫ হাজার হেক্টর জমিতে আলু চাষ হলে কৃষকরা লাভবান হবেন। কৃষি বিভাগ থেকে আলু চাষের প্রশিক্ষণ ব্যবস্থাসহ উৎপাদিত আলু দেশের সরকার সরাসরি কৃষকের কাছ থেকে ক্রয় করে তবে আলু চাষ আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

 

আরপি/ এআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top