রাজশাহী শনিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৪, ৮ই বৈশাখ ১৪৩১

'একবেলা খেতে না পেলে কেউ খাবার দিয়ে যাবে না'


প্রকাশিত:
৩ এপ্রিল ২০২০ ০৫:১৪

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৪১

ছবি:সংগৃহিত


যখন যেমন তখন তেমনই! তারা যখন যা করবে তাই আমাদের মেনে চলতে হবে। করোনার কারণে কষ্টতে আছি। এই কষ্ট আমার মতো খেটেখাওয়া সব মানুষের। নিজের সংসার নিজেকেই চালাতে হবে। কেউ চালিয়ে দিবে না। একবেলা খেতে না পেলে কেউ খাবার দিয়ে যাবে না।

এই ভাবেই করোনা সংক্রমনের ঝুঁকিতে নগরীতে অঘোষিত লকডাউনে নিজের উপলদ্ধির কথা জানাচ্ছিলেন নগরীর অটো রিকশা চালক লিটন হোসেন। অঘোষিত এ লকডাউনের মাঝেই জীবিকার তাগিদে গতকাল বৃহস্পতিবার অটো চালাতে বের হন তিনি। ফাঁকা নগরীতে তেমন ভাড়া না পাওয়ায় ও পুলিশের তৎপরতার কারণে ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ব্যাতিক্রমী চিন্তা। গাড়ি চালানোর পাশাপাশি গাড়িতেই মাস্ক বিক্রি করা শুরু করেন তিনি। সঙ্গে যাত্রীদের সচেতন করারও প্রচেষ্টা।
লিটন জানান, করোনার কারণে গাড়ি চালাতে অনেক সমস্যা হচ্ছে।

বিগত কয়েক দিন গাড়ি চালিয়েছি কিন্তু পুলিশের ঝাঁড়ি খায় নাই এমন দিন যাইনি। গাড়িতে ২ জনের বেশি লোক তুললেই পুলিশ এসে নামিয়ে দিচ্ছে। কখনো বা যাত্রীর মাস্ক না াকলে নামিয়ে দিচ্ছে। জীবিকার তাগিদে গাড়ি চালনো বন্ধ রাখতে পারছি না। তবে পুলিশ যেন কোন ঝামেলা না করে তার জন্যে সচেতন হয়ে চলার চেষ্টা করছি। সময়টা যখন এমন তখন এভাবেই চলতে হবে। আর যেহেতু গাড়ি চালিয়ে আয় অনেক কমে গেছে তাই সাে মাস্ক বিক্রি করছি।

করোনা সংক্রমনের ঝুঁকিতে সেনাবাহিনী ও আইনগ্রয়োগকারী সংস্থার সচেতনতামূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা ও তৎপরতায় নগরী এখন অনেকটায় ফাঁকা। একান্ত প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না মানুষ। এতে সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ চরম দূর্ভোগে পড়েছে।

নগরীর এক ফল ব্যাবসায়ী নাম না প্রকাশ করার শর্তে জানান, করোনার কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেনা। আর যারা বের হচ্ছেন তারাও প্রয়োজন নিয়ে। এখন দিনের নির্দিষ্ট কিছু সময় ফলের দোকান খুলি। কিন্তুু ক্রেতাই নায়। আবার যখন আসছে তখন একসাথে ু-তিনজন। একসাথেু-তিনজন গ্রাহক দেখলেই পুলিশও তাড়িয়ে দিচ্ছে। এখান থেকে আর কয়টাকায় বা আয় হয়। এটাও যদি না থাকে তাহলে ২ দিনপর না খেয়ে থাকতে হবে।

এদিকে, করোনায় বর্তমান পরিস্থিতিতে সরকারি ও বেসরকারিভাবে বিভিন্ন সংগঠন নগরীতে খাদ্য সহায়তা দিচ্ছে। কিন্তু কয়েকজনের সাথে কথা বলে জানা যায়, এই সহায়তায় অনেক নিম্ন আয়েক মানুষ উপকৃত হলেও অনেকেই আছে যারা সামাজিক মর্যাদার কারণে চাইতে পারে না। কিন্তু তাদের এখন আয় না থাকার কারণে কষ্টে দিনাতিপাত করছেন। আবার অনেকেই করোনা মহামারীর অনিশ্চিত সামনের দিনগুলো নিয়ে ভাবছেন।

এ বিষয়ে রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, বিভাগীয় শহর হিসেবে করোনা মোকাবিলায় যে ব্যাবস্থা নেওয়া প্রয়োজন তা পর্যাপ্ত বলা যায় না। তবে খেটেখাওয়া মানুষের জন্যে আমাদের মেয়র ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন অনেক সহযোগিতা করছে। তবে দেখা যাচ্ছে যারা চাইতে যানে তারা খাদ্য সহযোগিতা বেশি পাচ্ছে কিন্তু যারা চাইতে যানে না তারা সহযোগিতা পাচ্ছেনা। তাই যারা সাহায্য দিচ্ছে তাদের উচিত তালিকা করে এ সহায়তাগুলো দেওয়া।

 


বিষয়: করোনা


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top