ঘরে ঘরে মানুষ, সঙ্গী সোস্যাল মিডিয়া

বিশ্বব্যাপী বড় সংকটের নাম করোনা ভাইরাস। প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের সংক্রমণরোধে বাংলাদেশজুড়ে চলছে অঘোষিত লক ডাউন। এ সময়টাতে নিজেদের বাঁচাতেই মানুষ ঘরবন্দি বা হোম কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন। এছাড়াও মানুষকে ঘরে রাখতে মাঠে নেমেছে প্রশাসন। প্রশাসনের কর্তা ব্যক্তিরা বেশ কিছু বিতর্কিত ও প্রশংসনীয় ঘটনার জন্মদিলেও তাদের তৎপরতায় ঘরের বাইরে অহেতুক চলাফেরা করছেন না কেউই।
গত ২৬ মার্চ থেকেই রাজশাহীর রাস্তাঘাট ফাঁকা হতে শুরু করে। দিন যত গড়িয়েছে ততই জনশূণ্য হয়েছে নগরী। শহরের স্থায়ী বাসিন্দা ছাড়া বেশিরভাগ মানুষই নগরী ছেড়েছেন। গতকাল নগরীর বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, কোথাও অহেতুক মানুষের সমাগম নেই। মানুষ ও যানবাহনশূণ্য নগরীর রাস্তাঘাট। তবে প্রয়োজনীয় দোকানপাট খোলা ছিল। মানুষ অবাধে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি সংগ্রহ করেছে। এছাড়া কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।
গত ২৬ মার্চ থেকে আগামী ৪ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সরকারিভাবে ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়াও ৯ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি। ঘরে বসে এই অলস সময় কাটাতে মানুষের বড় সঙ্গী এখন সোস্যাল মিডিয়া। করোনা সচেতনতা, সংক্রমণ প্রতিরোধে করণীয়, করোনা নিয়ে বিভিন্ন মজার মজার ট্রল ও লেখালেখি ঘরে বসে মানুষের সময় কাটানোর প্রধান উপজীব্য হয়ে উঠেছে।
ভাইরাল হওয়া বিভিন্ন ছবির ভঙ্গিতে ছবি তুলে সোস্যাল মিডিয়ায় আপলোড চ্যালেঞ্জ, মাথার চুল কামিয়ে ছবি আপলোড করা ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে ও গ্রহণ করে সময় কাটাচ্ছেন অনেকেই। সরকারি মন্ত্রী আমলাদের অসংলগ্ন মন্তব্যে ট্রল, সমালোচনা ও করোনা নিয়ে বিভিন্ন তথ্য আদান প্রদানে সোস্যাল মিডিয়া প্রধান প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। হাসি মজাতেও সীমাবদ্ধ নেই, লক ডাউনের কারনে কাজে বের হতে না পারা দরিদ্র মানুষের অসহায়ত্বের চিত্রও প্রতিকী ছবি, কার্টুন ও বিভিন্ন লেখায় উঠে আসছে।
এদিকে, দেশজুড়ে চলমান সংকটে দরিদ্র ও অসহায় মানুষের পাশে দাড়ানোর চিত্রও প্রশংসার দাবি রাখে। দরিদ্র মানুষের সাহাযার্থে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন, জেলা প্রশাসন, রাজশাহী কলেজেসহ বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি দপ্তর, প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি উদ্যোগেও মানুষ খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। এছাড়াও বিতরণ করা হচ্ছে হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক, সাবান ও ভাইরাস প্রতিরোধে করণীয় লিফলেট।
এছাড়াও বিভিন্নরকম গুজবের কথা ছড়িয়ে পড়লেও সর্বমহলের সচেতনতায় সেগুলো চাপা পড়ে গেছে। এদিকে, রাজশাহীর বিভিন্ন বাজারে, মোড়ে, দোকানে চলছে মাস্ক বিক্রির হিড়িক। নানারকমের ও দামের এই মাস্কগুলো আগ্রহভরে কিনতে দেখা গেছে সাধারণ মানুষকে।
অন্যদিকে, হাট গুটিয়ে বসে থাকার অভিযোগে জনপ্রতিনিধিদের সমালোচনা করছেন সাধারণ মানুষ। সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভা মেয়র, ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
আরপি/ এএন
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: