রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১

অসুস্থতাকে পাশ কাটিয়ে হুইলচেয়ারেই ভোটকেন্দ্রে শাহরিয়ার


প্রকাশিত:
৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১১:৪২

আপডেট:
৩০ ডিসেম্বর ২০২২ ১১:৫৫

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

রাজশাহী নগরীর ২৮ নং ওয়ার্ডের কাজলা এলাকার বাসিন্দা হাসান শাহরিয়ার। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে পাশ কাটিয়েই রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) একটি ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে ভোট দিতে এসেছেন তিনি।

একা হাঁটা চলা করতে না পারলেও ছোট ভাইকে নিয়ে হুইলচেয়ারে বসেই কেন্দ্রে এসেছেন পঞ্চাশোর্ধ এই ব্যক্তি। অসুস্থ হলেও প্রতিটি নির্বাচনেই ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন তিনি। তবে জীবনের প্রথম ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত ছিলেন তিনি।

বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) দুপুর সোয়া ১টার দিকে নগরীর কাজলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ছোট ভাইকে সাথে নিয়ে ভোট দিতে আসেন তিনি। এসময় তিনি বলেন, আমি মহিলা সংরক্ষিত ওয়ার্ডের উপ-নির্বাচনে ভোট দিতে এসেছি। আমি আমার নাগরিক দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের জন্য ভোট দিতে এসেছি। প্রতিটি নাগরিকেরই ভোট দেওয়া উচিত। এর মাধ্যমেই তো আমাদের স্থানীয় প্রতিনিধি নির্বাচিত হবে।

ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে তিনি বলেন, আমার ছোট ভাই গ্যারিনকে নিয়ে ভোট দিতে এসেছি। সব জায়গায় চলাচলের জন্য কারো সহায়তা নিতে হয়। আমি বরাবরই ভোট দিতে চাই, তবে আজকে চরম ভোগান্তির শিকার হয়েছি। আমার মতো যারা প্রতিবন্ধী তাদের জন্য এই ভোট দেওয়ার পদ্ধতি না, এটা হতেই পারে না।

দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন এরকম অবস্থায় ভোট গ্রহণ হতে পারে না। কল্পনাও করা যায় না, আমার মতো প্রতিবন্ধী মানুষকে হুইলচেয়ারে করে তিন তলায় গিয়ে ভোট দিতে হচ্ছে। স্কুলের ছোট সিড়ি দিয়ে, এটা অস্বাভাবিক, এরকম হলে আমি আর কোনোদিন ভোট দিতে আসবো না। যদি আমাদের জন্য নিচতলায় পরিবেশ তৈরি করা হয় তাহলে আমি ভোট দিতে আসবো।

আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে তীব্রভাবে প্রতিবাদ করছি, যদি আমাদের ভোটের প্রয়োজন হয় বা আমাদের ভোটের দরকার হয় তাহলে আমাদের ভোট দেওয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি করতে হবে। আর যদি আমাদের ভোটের দরকার না হয় তাহলে এরকমই যথেষ্ট। আমাদের ভোট দিতে হলে আমাদের সুষ্ঠু পরিবেশ দিতেই হবে বলেও দাবি করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, আমি বাংলাদেশের গোল্ডেন সিটিজেন, কিন্তু এখানে আমার কোনোই মর্যাদা নেই। প্রচন্ড অসুবিধা, এই তিন তলা বেয়ে ওঠা যায়? একটি স্কুলের চিকন সিড়ি দিয়ে ওঠা যায় না, তারপরও আমাকে নিয়ে গেল, ভোট দিলাম অনেক কষ্ট করে।

বিজয়ী প্রার্থীর প্রতি প্রত্যাশা জানিয়ে তিনি বলেন, আমি যাকে ভোট দিবো বা আমার এলাকার মানুষের ভোট প্রদানের মাধ্যমে যিনি পাশ করবেন, সকল নাগরিকের প্রতি তার দায়িত্ব আছে। বিশেষ করে আমি মনে করি, আমার প্রতি একটু হলেও বেশি দায়িত্ব থাকবে। আমিসহ সকল মানুষের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়টি দেখা তার দায়িত্বের মধ্যেই পড়ে। যেই জয়ী হোক আমাদের নাগরিকদের সার্বিক খোঁজ খবর রাখবেন বলেও আশাবাদি তিনি।

 

 

আরপি/এসআর-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top