রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১

হিম বাতাসেও জমেনি লেপ-তোশকের দোকান


প্রকাশিত:
১২ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৫৬

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০০:৪৩

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

শীতকাল আসার আগেই শীতের পরশ বুলিয়ে যাচ্ছে প্রকৃতি। ভোরের শিশিরকণায় সিক্ত হচ্ছে সমস্ত বৃক্ষ ও ফসলের ক্ষেত। মুক্তার মতো জ্বলজ্বল করছে শীতের সকালের কোমল রোদ। ক্রমেই কমতে শুরু করেছে সূর্যের প্রখরতা। রাতের গভীরতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতের তীব্রতা। গ্রামবাংলা তো বটেই, শহুরে জীবনেও ছুঁয়ে যাচ্ছে শিরশিরে উত্তরা সমীরণ।

আবার ঠাণ্ডায় কাবু হতে বসেছে বৃদ্ধ কিংবা শিশুরা। ক্রমেই শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার শঙ্কা বাড়ছে কয়েকগুণ। অসুস্থ প্রিয়জনের সেবা-শুশ্রূষা করতে গিয়ে নাজেহাল অভিভাবকরা। ইতোমধ্যে শীতের অনুভূতি উপভোগ করতে গ্রাম বাংলার ঘরে ঘরে তুলে রাখা লেপ-কাঁথা ও চাদর-কম্বলের স্থান পেতে শুরু করেছে খাট-চৌকিতে। কিছুটা দেরিতে হলেও প্রকৃতির এই পরিবর্তনই জানান দিচ্ছে শীতের উপস্থিতি।

ধনী, মধ্যবিত্ত কিংবা গরিব, সকল শ্রেণিপেশার মানুষের শীত নিবারণের অন্যতম উপকরণ এই লেপ-তোশক। শীত মোকাবিলায় সেই আদি যুগ থেকেই বেশ কার্যকরি এসব লেপ-তোশক। শীতের ঠাণ্ডা দূর করে একটু ওম (গরম) পেতে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে লেপ-তোশকের ব্যবস্থা করতো যে কেউই। এক সময় মেয়ের বিয়ের পর শীতে জামাই বাড়ি এসব লেপ-তোশক পৌঁছানো ছিল অপরিহার্য।

তবে চলতি বছর শীতের আগমনেও জমে নি রাজশাহীর লেপ-তোশকের দোকানগুলো। শীত মোকাবিলার প্রধান উপকরণ তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করলেও আগের চেয়ে চাপ কমেছে বলে দাবি কারিগরদের। নিত্যপ্রয়োজনীয় অন্যান্য জিনিসপত্রের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তুলা ও কাপড়ের দাম বাড়ায় কারিগরদের কপালেও চিন্তার ভাঁজ। ক্রেতাদেরও গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। আবার দামে কম ও শীত নিবারণে অধিক কার্যকরি হওয়ায় কম্বলের দিকেও ঝুঁকছেন অনেক ক্রেতা।

রাজশাহী নগরীর আরডিএ মার্কেট, গণকপাড়া, রাণীবাজার, নিউ মার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, দম ফেলার অবস্থা নেই লেপ-তোশকের কারিগরদের। কয়েকদিনের শীতল হাওয়ায় লেপ-তোশকের দোকানে ক্রেতার চাপ বেড়েছে চোখে পড়ার মতো। খদ্দেরদের সঙ্গে দামাদামি ও উপকরণ যোগাড়ে ব্যস্ত দোকান মালিকরা। তবুও সন্তুষ্ট নন বিক্রেতারা, অন্য বছরের তুলনায় অনেক কম ক্রেতা আসছেন বলে দাবি তাদের।

বেচাকেনার বিষয়ে জানতে চাইলে নগরীর গণকপাড়ার বাবুল অ্যান্ড ব্রাদার্স বেড হাউসের বিক্রেতা বাবুল ইসলাম বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার শীতের আগমন একটু দেরিতে। তবে শীতের ঠান্ডা হাওয়া শুরু হওয়ায় ক্রেতারা আসতে শুরু করছেন। কিন্তু আগের চেয়ে লোক কমই আসছেন। যারা আসছেন বেশিরভাগই দেখে, দাম শুনে চলে যাচ্ছেন।

কায়েস নামের এক লেপের কারিগর বলেন, কম্বলের কারণে লোকজনের লেপের চাহিদা কমে যাচ্ছে। দামে কম হওয়ায় তারা সেদিকেই বেশি ঝুঁকছে। আর লেপের তুলনায় কম্বল রাখা, ধোঁয়াও অনেক সহজ হয়। তবে পৌষের শুরুতে ক্রেতা চাহিদা একটু বাড়বে বলেও আশাবাদী তিনি।

বিক্রেতা জুবায়ের রহমান বলেন, সব রকমের তুলার দাম কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। কাপড়ের দামও প্রতি গজে ১০ টাকার মতো বেড়েছে। কাপড়, সুতা, মজুরিসহ সব খরচ বেড়ে গেছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী বিক্রি করা যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে খুব বেশি লাভ করা যাচ্ছে না।

ওমর আলী নামের আরেক কারিগর বলেন, এবার শীত কম, তাই লেপের চাহিদাও কম। এছাড়া সব কিছুর দাম বেড়ে গেছে, খুব বেশি প্রয়োজন না হলে কেউ এসব কিনছে না।

বাজারে ১ হাজার থেকে শুরু করে ২ হাজার টাকা দামের সিঙ্গেল লেপ বিক্রি হচ্ছে। আর ডাবল লেপ পাওয়া যাচ্ছে ১ হাজার থেকে দেড় হাজার টাকার মধ্যেই। সুতা ও তুলার দাম যে পরিমাণে বেড়েছে সেই হিসেবে লেপের দাম বাড়ানো যাচ্ছে না বলেও দাবি করেন তিনি।

 

 

 

আরপি/এসআর-০৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top