রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৬ই বৈশাখ ১৪৩১

রাজশাহীতে চার্জার ফ্যানের চাহিদা থাকলেও রয়েছে সংকট


প্রকাশিত:
২০ জুলাই ২০২২ ২০:২০

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ০৩:২৬

ফাইল ছবি

পদ্মাপাড়ের রাজশাহীতে চলছে ভ্যাপসা গরম। সেই সঙ্গে যুক্ত হয়েছে লোডশেডিং। দুর্ভোগ ঘোচাতে সোলার কিংবা চার্জার ফ্যানের দিকে ঝুঁকছে লোকজন। কিন্তু এখানেও পিছু ছাড়ছে না দুঃসংবাদ। প্রচন্ড তাপদাহ ও ভ্যাপসা গরমে অতিষ্ট হয়ে উঠেছে পদ্মা পাড়ের জনজীবন। একটু ছায়া কিংবা ঠাণ্ডা বাতাস পেতে হাঁসফাঁস করছে সব বয়সী মানুষ।

সুযোগ বুঝেই এসব ফ্যানের দাম বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। এখন বাড়তি দামেও মিলছে না এসব ধরনের ফ্যান। 

প্রতিটি চার্জার বা সোলার ফ্যানেই দাম বেড়েছে ২০০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত। অনেক ক্ষেত্রে বেশি দাম দিয়েও মিলছে না কাঙ্খিত ফ্যান। তাই অনেকে বাধ্য হয়েই পুরনো ফ্যান সচল করছেন।

রাজশাহী নগরীর নিউ মার্কেট, রানী বাজার, সাহেব বাজার, কোর্ট বাজার সরেজমিনে দেখা যায়, হটাৎ করেই চাহিদা ক্রেতা সমাগম বেড়েছে সোলার ও চার্জার ফ্যানের। তবে চাহিদা অনুযায়ী ফ্যান যোগানে হিমশিম খাচ্ছেন বিক্রেতারা। ফুরিয়ে গেছে বেশির ভাগ দোকানে স্টকে থাকা ফ্যান। সুযোগ বুঝে বাড়তি দামে ফ্যান বিক্রি করছেন অনেক ব্যবসায়ী।

নগরীর নিউ মার্কেটে চার্জার ফ্যান কিনতে আসা শরিফুল নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে কথা হয় ঢাকা মেইলের। তিনি বলেন, দিনের অধিকাংশ সময়ই বিদ্যুৎ থাকছে না। এমন কি বিদ্যুৎ অফিস লোডশেডিংয়ের যে শিডিউল দিয়েছে, তার আগে-পড়েও বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। তাই চার্জার ফ্যান কিনতে বাজারে আসছি। কিন্তু কয়েকটা দোকান খুঁজেও কাঙ্খিত ফ্যান পেলাম না।

একই এলাকার হোসেন ইলেকট্রনিকসের বিক্রেতা ইরফান হোসেনের সঙ্গে কথা হয় ঢাকা মেইলের। তিনি জানান, আমার দোকানে খুব বেশি চার্জার ফ্যান নেই। যে কয়টা আছে সেগুলোও বেশি দামি। গত ৬-৭ দিন থেকে প্রতিদিনই চার্জার ফ্যানের চাহিদা বাড়ছে। কিন্তু সেই অনুযায়ী ডেলিভারি নেই। ঢাকায় যাদের কাছে অর্ডার করি, তাদের স্টকে খুব বেশি মাল নেই বলে জানাচ্ছে।

সাহেব বাজার জিরো পয়েন্টের আশিক ইলেক্ট্রিকের দোকান মালিক আসিফ ইকবাল জানান, শুধু চার্জার ফ্যান না, চার্জিং সব কিছুর দাম বেড়েছে। এমআরপি রেটে আমাদের অর্ডার করতে হচ্ছে। তবুও ফ্যান পাওয়া যাচ্ছে না।

একই এলাকার এজেটি ইলেক্ট্রিকের দোকান মালিক আতাউর রহমান বলেন, গত ৮-৯ জুলাই থেকে আমার দোকানে চার্জার ফ্যান নেই। সপ্তাহ খানেক ধরে শুধু চার্জার ফ্যান টেবিল ল্যাম্প, রিচার্জেবল বাল্ব জাতীয় সবকিছুর চাহিদা বেড়েছে। আর দাম তো ঈদের ১৫-২০ দিন আগে থেকেই বাড়ছে। প্রতিটি পণ্যের দাম গড়ে ৬০ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত বেশি হয়েছে।

এসময় ফ্যানের খোঁজে বাজারে আসা আরিফ মাহমুদ বলেন, কয়েক দোকানে ফ্যান খুঁজেও পেলাম না। সবাই বলছে শেষ হয়ে গেছে। এদিকেও লোডশেডিংয়ে বাসায় থাকা দায়। ছোট বাচ্চা নিয়ে ঝামেলায় পড়তে হয়েছে। তাই ফ্যান ছাড়া বাসাতেও যেতে পারছি না।

সাহেব বাজার বড় মসজিদ মার্কেটের মোহাম্মদ ইলেক্ট্রিকের বিক্রেতা জাহিদ হাসান বলেন, লোডশেডিংয়ের জন্য চার্জার ফ্যান ক্রেতা অনেক বেড়েছে। কিন্তু আমার দোকানে যা ছিল ঈদের আগেই সব শেষ হয়েছে। এখন আর চেষ্টা করেই ডেলিভারি নিতে পারছি না।

জলিল সুপার মার্কেটের এফআর ইলেকট্রনিকসের বিক্রেতা প্যারিস বলেন, ঈদের আগের লোডশেডিং থেকে চার্জিং সবকিছুর চাহিদা বাড়ছে। আমাদের দোকানে মিনি চার্জার ফ্যানগুলো আছে, বড় সাইজের যা ছিল সব বিক্রি হয়েছে। যারা স্টকে রেখেছে তারাও আর দিচ্ছে না। প্রতিটি ফ্যানে ৮০০ থেকে হাজার টাকা বেশি দরে বিক্রি করছে।

এদিকে লোডশেডিংকে ঘিরে চার্জার ফ্যান ও লাইটের দাম মনিটরিং করেছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। প্রতিষ্ঠানের রাজশাহী বিভাগীয় কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক হাসান আল মারুফ।

তিনি বলেন, সরকারের গৃহীত লোডশেডিং সিদ্ধান্তকে কাজে লাগিয়ে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী চার্জার ফ্যান বা চার্জার জিনিসপত্রের দাম বাড়াতে পারে বলে তথ্য ছিল। সেই অনুযায়ী সারা বাংলাদেশে আমরা এক যোগে বিষয়টি তদারকি করেছি। রাজশাহীতে তেমন অপরাধ চোখে পড়ে নি। তবে আমরা সতর্ক করেছি।

ব্যবসায়ীরা যাতে এসব পণ্যের দাম না বাড়ান— সেজন্য সতর্ক করা হয়েছে। অযৌক্তিক ও অস্বাভা‌বিক মূ‌ল্যে বিক্রির প্রমাণ পাওয়া গে‌লে ক‌ঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান হাসান আল মারুফ।

 

আরপি/ এমএএইচ-০৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top