তীব্র গরমে প্রাণ জুড়াচ্ছে বেহাই বাড়ির মাঠা
-2022-04-26-12-12-05.jpg)
রোজা শুরুর আগ থেকেই রাজশাহীর উপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচন্ড খরতাপে অসহনীয় হয়ে উঠেছে পদ্মা পাড়ের জনজীবন। ক্রমাগত তাপপ্রবাহে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন খেটে খেটে খাওয়া ও শ্রমজীবী মানুষজন। হাঁসফাঁস জনজীবন যেন অগ্নিদহনে পুড়তে থাকার বহিঃপ্রকাশ।
অগ্নিস্ফুলিঙ্গের ন্যায় বহমান বাতাসে রোজাদারদের প্রাণ বেরোনোর উপক্রম। সারা দিনের গরমের তীব্রতায় জিহ্বা আর গলা শুকিয়ে যাচ্ছে সকলের। আর তাই তো ইফতারের অন্যতম অনুসঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে মাঠা। এক চুমুক মাঠায় যেন মুহূর্তেই তৃপ্তি এনে দিচ্ছে রোজাদারের মনে।
আর সেই মাঠার জগতে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে ‘বেহাই বাড়ির মাঠা’। পবিত্র মাহে রমজান উপলক্ষে এই বিশেষ ধরণের মাঠা এনেছে রাজশাহীর রহমানীয়া রেস্টুরেন্ট। রোজার শুরু থেকেই নগরীর গণকপাড়া ও নিউ মার্কেট দুই বিক্রয়কেন্দ্রেই পাওয়া যাচ্ছে পানীয়টি।
সোমবার (২৫ এপ্রিল) দুপুরে নগরীর নিউ মার্কেট এলাকার রহমানিয়া প্লাস রেস্টুরেন্টে সরেজমিনে দেখা যায়, এক চুমুক মাঠায় প্রাণ জুড়াতে দুপুরের পর থেকেই ভীড় করছেন তৃষ্ণার্ত রোজাদাররা। রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করলে প্রথমেই চোখ যাবে টেবিলের উপর থরে থরে সাজানো মাঠার বোতলের দিকে।
মাঠা ছাড়াও হরেক রকম মুখরোচক খাবারের পসরা দিয়েছেন দোকানীরা। ইফতারের অনেক সময় থাকলেও ব্যস্ত সময় পার করছেন বিক্রেতারা। ক্রেতারাও আগেভাগেই নিয়ে যাচ্ছেন পছন্দের ইফতার সামগ্রী। আবার কেউ কেউ কিনতে আসার আগেই ফুরিয়ে যাওয়ায় হতাশ মনে ফিরতে হচ্ছে মাঠা ছাড়াই।
এ বিষয়ে কথা হয় রহমানিয়া প্লাস রেস্টুরেন্টের মালিক রেজওয়ান আহমেদ খানের সঙ্গে। তিনি জানান, সিরাজগঞ্জে বেহাইয়ের বাড়িতে এই মাঠা খাওয়ার পর অনেক সুস্বাদু লাগে। তার বেহাইয়ের গরুর খামারের দুধ থেকে তৈরি এই মাঠা খেয়ে মুগ্ধ হন সকলেই। এমন স্বাদের মাঠা আগে কখনো খাওয়ারও অভিজ্ঞতা ছিল না।
রাজশাহীতে ভিন্ন স্বাদের এই মাঠা ভালো সাড়া ফেলার সম্ভাবনাও দেখেন তিনি। সেই চিন্তা থেকেই তাদের রেস্টুরেন্টে পহেলা রোজা থেকেই ইফতারের তালিকায় মাঠা স্থান পায়। প্রথম দিন থেকেই ক্রেতাদের মাঝে নতুন স্বাদের মাঠাটি ব্যাপক সাড়া ফেলে।
তিনি আরও জানান, মাঠাটি নগরীর দুই রেস্টুরেন্টে পাওয়া গেলেও রাজশাহী তৈরি হয় না। প্রতিদিন সিরাজগঞ্জ থেকে তৈরি করে রাজশাহীতে পাঠানো হয়। পরে সেগুলো দুই বিক্রয় কেন্দ্র থেকে প্রতি ৫০০ মি.লি. বোতল ৯০ টাকা ও ১ লিটার বোতল ১৮০ টাকা দরে বিক্রি করা হয়।
খাঁটি দুধ ও চিনির তৈরি মাঠাটি স্বাদে অনন্য হওয়ায় যথেষ্ট ক্রেতা চাহিদা রয়েছে। সর্বোচ্চ তিন দিন ফ্রিজে রেখে খাওয়া যাবে বলেও জানান তিনি।
মাঠার স্বাদ বিষয়ে জানতে কথা হয় রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) সহযোগী অধ্যাপক আব্দুল ওয়াকিলের সাথে। তিনি বলেন, বেহাই বাড়ির এই মাঠাটি অনেক মজাদার ও সুস্বাদু। নগরীতে অনেক জায়গায় মাঠা পাওয়া গেলেও এটি স্বাদে অতুলনীয়। এর আগেও কয়েক বার খেয়ে ভালো লাগায় আজও এসেছি।
আরপি/এসআর-০৫
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: