রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১

তীব্র তাপদাহে ঝরছে কৃষকের স্বপ্ন


প্রকাশিত:
৮ এপ্রিল ২০২২ ২২:৪৪

আপডেট:
৮ এপ্রিল ২০২২ ২২:৫৩

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

প্রকৃতিতে এখন ভরা চৈত্র মাস। মেঘের ভেলায় ঝড়-বৃষ্টির উপস্থিতি থাকে না বললেই চলে। ফলে বৃষ্টি না হওয়ায় চৈত্রের খরতাপে পুড়ছে বরেন্দ্র অঞ্চল। পুড়ছে গাছের আম, পুড়ছে জনজীবন। শুরুর দিকে এ অঞ্চলে আম গাছের ডালে মুকুলে ভরে যায়। মুকুলের ভারে আমের ডাল নুঁয়ে পড়েছে মাটিতে এমন দৃশ্যও চোখে পড়ে নীরবেই। গুটি গুটি আম ছেয়ে যায় পুরো গাছ। তা দেখে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন এ এলাকার আম চাষিরা।

তবে রাজশাহীতে টানা বৃষ্টিহীনতার পাশাপাশি নামছেই না তাপমাত্রার সূচক। তীব্র খরার সাথে যেন পাল্লা দিয়ে বেড়েছে গরমও। তাপমাত্রা বাড়তে থাকায় ঝরতে শুরু করেছে বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষকের স্বপ্ন। খরতাপে গাছের তলার মাটিতে ঝরে পড়ছে আম। আকাশের পানি না হওয়ায় বাড়ছে না আমের আকারও।

রাজশাহী অঞ্চলের আম বাগানজুড়ে সোনালী মুকুলের সৌরভ ছড়ালেও চাষীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। টানা বৃষ্টিহীনতায় ফলন নিয়ে চিন্তিত সকলেই। তীব্র খরায় সেচ দিয়েও খুব একটা ফল পাচ্ছে না বাগান মালিকরা। উৎপাদন খরচ বাড়লেও ফলন বিপর্যয়ের আশংকা থেকেই যাচ্ছে। চরম উৎকণ্ঠায় ভুগছেন আম চাষীরা।

আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, বৃষ্টিহীনতার পাশাপাশি তাপমাত্রার সঙ্গে দিয়ে গরমও বেড়েছে। ইতোমধ্যে বুধবার (৬ এপ্রিল) রাজশাহীতে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টি না হলে তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলেও আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর জানায়, গত মৌসুমে রাজশাহী জেলায় আম উৎপাদন হয়েছিল ১৭ হাজার ১২৮ টন। এ বছর জেলায় আম চাষ হচ্ছে ১৮ হাজার ৫১৫ হেক্টর জমিতে। গত বছর যে পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ৯৪৩ হেক্টর। এছাড়াও রাজশাহী কৃষি অঞ্চলে (রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর ও নওগাঁ জেলা) গত মৌসুমে আম উৎপাদন হয়েছিল ১০ লাখ ৩০ হাজার ৬১৪ টন। অঞ্চলে এ বছর আম চাষ হচ্ছে ৮৪ হাজার ৩৮৮ হেক্টর জমিতে।

বাঘার আম চাষি শাহিনুল ইসলাম বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার মুকুলের সংখ্যা কম হলেও প্রায় সবগুলোতেই গুটি বাঁধছে। তবে বৃষ্টি না হওয়ার কারণে গুটি ঝরে যাচ্ছে। সেচ দিয়ে ঝরে পড়া রোধ করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এ বিষয়ে রাজশাহী ফল গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলীম উদ্দীন জানান, মূলত কয়েকটি কারণে আমের গুটি ঝড়ে। এর মধ্যে প্রধান গাছের পুষ্টির অভাব, পোকার আক্রমণ, রোগের আক্রমণ ও ধারণ ক্ষমতার বেশি আমের গুটি আসা। তবে এসময় গরম ও খরার কারণে গুটি ঝরা স্বাভাবিক।

তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর যে পরিমাণ আমের গুটি আসে, তার সব থাকলে গাছ ভেঙে পড়বে। গুটির এক তৃতীয়াংশ থাকলেও গাছে জায়গা দেওয়া যাবে না। গুটি ঝরার ক্ষেত্রে খরার বড় প্রভাব রয়েছে। সে জন্য প্রতি ১০/১৫ দিন পর পর সেচ দিতে হবে। এসব বৈরী আবহাওয়া মোকাবেলা করেই আম টিকে থাকে।

 

 

 

আরপি/এসআর-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top