রাজশাহীতে লবনকাণ্ড: `আজকে ৫০০ বস্তা থাকলে বিক্রি হয়ে যেত'
‘আজকে বিকালে ১৮ থেকে ২০ বস্তা লবণ বিক্রি করেছি। এ লবণ দিয়ে আমার ৫-৭ দিন চলে যেত কিন্তু সব লবণ আজকে শেষ হয়ে গেছে। আমি ১৯৮২ সাল থেকে ব্যবসা করি কিন্তু আজকের মতো মানুষের কাড়াকাড়ি কোনদিন দেখিনি। ৫০০ বস্তা লবন থাকলে বিক্রি হয়ে যেত’ টিক এভাবেই বলছিলেন রাজশাহী উপশহর নিউমার্কেট কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান মেসার্স ভ্যারাইটি স্টোরের মালিক রুমিন।
এক ক্রেতা আয়না খাতুন বলেন, লবনের দাম বাড়বে বলে আমি একশ টাকা দরে দুই কেজি কিনেছি। আগে কিনেছি ৩ কেজি ৫০ টাকা দরে। বলাতো যায় না, পেঁয়াজের মতো ২৫০ টাকা কেজি লাগতে পারে। পেঁয়াজতো আগে লবনের মতোই দাম ছিল।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি আক্ষেপ করে বলেন, বলা তো যায়না চিনি আর তেলের দাম বাড়তে পারে তাই ৫ কেজি চিনি আর ৫ কেজি তেল কিনে নিলাম। সরকারের কথা তো বলা যায় না। সরকারের কিসের দায় পড়েছে, টিভি নিউজ এ দিয়ে দেওয়া দেশে লবণের ঘাটতি নেই??? এর আগেও তো বলেছিলে পেঁয়াজের ঘাটতি নেই। তারপরও পেঁয়াজ ২৮০ টাকা কেজি কিনতে হয়েছে। লবণের দাম বাড়বে না তা তো বলা যায় না। সরকার ব্যর্থ হয়েছে পেঁয়াজের দাম কমাতে।
এক ক্রেতা জানান, আমি ৩-৪ কেজি কিনেছি। তবে আগের দামে বত্রিশ টাকা কেজিদরে। বলা তো যায়না দাম বাড়তেই পারে। সরকার বলেছে দেশে লবনের ঘাটতি নেই তারপরও কিনে নিলাম ভবিষ্যতের জন্য।
নিউ মার্কেট এলাকার মেসার্স সর্দার স্টোরের মালিক আবদুল খালেক জানান, আমি ৫ বস্তা লবণ রেখেছিলাম ব্যবসার জন্য। কিন্তু, কিছু বুঝে ওঠার আগেই আজকে ১০ মিনিটে বিক্রি হয়ে গেছে সব লবন। আগের দামে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছি। মানুষ মুড়ি-মুড়কির মতো লবণ কিনেছে। চারটার দিকে দোকান খুলে দেখি মানুষের প্রচুর ভিড় তারা লবণ খুঁজছে। আমার কাছে মনে হয় এটি একটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং নিশ্চিত এটি গুজব ছড়ানো হচ্ছে আর এগুলো বেশিরভাগই কান দিয়েছে মেয়েরা। বাজারে মেয়েদের সংখ্যা বেশি তারা ৫ কেজি, ৭ কেজি কিনেছে। কেউ ৩ কেজির কম লবন কিনেনি।
এক ক্রেতা শামীমা ফেরদৌসী জানান, আমি যখন শুনেছি লবণের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে আমি বিষয়টিকে গুজব বলে উড়িয়ে দিয়েছি আমি এক কেজি লবণও কিনতে কিনব না। কারণ গুজবে কান দিলে আমাদের নিজেরই ক্ষতি হবে।
ফ্রেস লবনের বিক্রয়কর্মীসূত্রে জানা গেছে, আজকেও অর্ডাও নিয়েছি। লবনের কোন ঘাটতি নেই। দাম বৃদ্ধিও খবর গুজবে ছড়িয়েছে।
জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রচারনাসূত্রে জানা গেছে, দেশে লবনের কোন প্রকার ঘাটতি নেই। এটি একটি গুজব মাত্র। কেউ লবনের দাম বেশি চাইলে আমাদের সাথে সরাসরি যোগাযোগ করে জানাবেন।
আরপি/এমএইচ
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: