রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১

দুর্গাপূজাতেও জমে উঠেনি রাজশাহীর বেচাকেনা


প্রকাশিত:
৭ অক্টোবর ২০২১ ১৫:২৬

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৫০

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

গত বছরের মার্চে সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও হানা দেয় অদৃশ্য ভাইরাস কোভিড-১৯। করোনার থাবায় স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো পৃথিবী। অর্থনীতি, শিল্প, বাণিজ্য, কল-কারখানা, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ প্রায় সব ধরনের কর্মযজ্ঞ হয়ে যায় বন্ধ। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির আঘাতে বিদায় নিতে থাকে একের পর এক প্রিয় মুখ। এর মধ্যেই পালিত হয় ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযহা, দূর্গাপূজাসহ বড় বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান। লকডাউনের মুখে পড়ে ২০২০ সালের বড় একটা সময়ই বন্ধ ছিল প্রায় সব রকমের দোকানপাট। ফলে কিঞ্চিৎ পরিমাণও বিক্রি করতে পারেনি ব্যবসায়ীরা।

এ বছরের শুরুতে আবারও নতুন করে হানা দেয় করোনা। সারাদেশের ন্যায় রাজশাহীতেও প্রতিদিনই গড়তে থাকে শনাক্ত ও মৃত্যুর রেকর্ড। বাঙ্গালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখেও আলোর মুখ দেখে নি ব্যবসায়ীরা। লকডাউনের মধ্যে পালিত হওয়া ঈদুল ফিতরেও নাম মাত্র বেচা কেনা হয় তাদের। পরিশেষে আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে আশায় বুক বাঁধলেও শেষমেশ হতাশ দোকান মালিকরা।

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসবটির বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। তবে শেষ সময়েও জমে উঠেনি রাজশাহী নগরীর বিপণি বিতানগুলোর বিকিকিনি। ক্রেতার আশায় নতুন পোশাকের আমদানি থাকলেও আশানুরূপ বিক্রি না হওয়ায় হতাশ ব্যবসায়ীরা। দোকান ভাড়া, কর্মচারীদের বেতনসহ আনুসঙ্গিক খরচ যোগাতে ক্রমেই ঋণের বোঝা বাড়ছে দোকান মালিকদের। জিনিসপত্রের দাম খুব একটা না বাড়লেও আগ্রহ নেই ক্রেতাদের।

বুধবার নগরীর গণকপাড়া, সাহেব বাজার, আরডিএ মার্কেট, নিউ মার্কেটসহ আশপাশের দোকানগুলো ঘুরে দেখা যায়, ক্রেতাশূন্য দোকানে অলস সময় পার করছেন বিক্রেতারা। ক্রেতার অপেক্ষায় প্রহর গুণতে দেখা যায় বিক্রেতাদের। সামনের দিনগুলোতে বিকিকিনি বাড়ার কোনো সম্ভাবনাও দেখছেন না ব্যবসায়ীরা। অনেকে শীতকালীন পোশাক আনার জন্য দোকান ফাঁকার কাজও শুরু করেছেন জোরেসোরে।

নগরীর আরডিএ মার্কেটের মা-মারিয়াম ফ্যাশানের বিক্রেতা রকি বলেন, পূজা উপলক্ষে নতুন করে বিভিন্ন কালেকশনের দেশি-বিদেশি শার্ট, প্যান্ট, গেঞ্জি, থ্রী-পিস ও বাচ্চাদের বাহারি রকমের পোশাক আনা হয়েছে। গত বছর কিছুটা বিক্রি হলেও এবার লোকজনের উপস্থিতি একেবারেই নেই। দোকান মালিক মনির হোসেন বলেন, পূজাকে ঘিরে আমাদের নানা আয়োজন থাকে। সেই আশায় এবারও বিভিন্ন পোশাক আনা হলেও পূজার কেনাকাটা এখনও শুরু হয়নি। করোনার কারণে ব্যবসায় ভাটা যাচ্ছে অনেক আগে থেকেই। এখন পূজাতেও যদি আশানুরূপ বিক্রি না হয় তাহলে অনেক লোকসানে পড়তে হবে।

নগরীর নিউ মার্কেটের রেডি ফ্যাশানের মালিক শুভ্রজিত রায় বলেন, করোনার কারণে ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। যারাও আসে শুধু দামাদামি করেই চলে যায়। ক্রেতার সংখ্যা তুলনামূলক নেই বললেই চলে।

এবিষয়ে নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতির সাধারন সম্পাদক ও রিসেন্ট টেইলার্সের মালিক মঞ্জুর হোসেন বলেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় রাজশাহীতে এবার ক্রেতার সংখ্যা খুবই কম। করোনা থাকলেও গত বছর কিছুটা বিক্রি করেতি পেরেছি। পূজার তো আর দেরি নেই, সামনের দিনগুলোতে খুব বেশি বেচাকেনা হবে বলেও তো মনে হয় না।

রাজশাহী ব্যবসায়ী ঐক্য পরিষদের সাধারন সম্পাদক ও আরডিএ মার্কেট মালিক সমিতির সভাপতি ফরিদ মামুদ হাসান বলেন, করোনা মহামারীতে এক বছরেরও অধিক সময় সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। মন্দা পরিস্থিতিতে আমরা অনেক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছি। লকডাউন শেষ হলেও লোকজনের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকায় বেচাকেনা খুবই কম। আর পূজাকেন্দ্রিক বেচা বিক্রি নেই বললেই চলে।

 

 

আরপি/এসআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top