রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২রা মে ২০২৪, ২০শে বৈশাখ ১৪৩১


বাংলাদেশের কোথাও নিয়ন্ত্রণ বা সরকার আছে বলে টের পাই না: চুন্নু


প্রকাশিত:
১ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:০০

আপডেট:
২ মে ২০২৪ ১২:৩১

ফাইল ছবি

‘বাংলাদেশের কোথাও নিয়ন্ত্রণ বা সরকার আছে’ এমন বিষয় টের পান না বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টির মহাসচিব ও বিরোধীদলীয় সংসদ সদস্য মুজিবুল হক চুন্নু।

বুধবার (১ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় সংসদ অধিবেশনে ‘ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল-২০২৩’র ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন।

মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, লিজিং কোম্পানি বা ফাইন্যান্স কোম্পানির কথা মনে হলে পি কে হালদার যিনি এখন কলকাতায় আছেন, উনি লিজিং কোম্পানির এমডি ছিলেন। বান্ধবীর নামে ১০০ কোটি, তিন নম্বর বান্ধবীর নামে ৫০ কোটি, স্ত্রীর নামে ১০০ কোটি, শ্যালিকার নামে ৫০ কোটি রেখেছেন। আইন তো তখনও ছিল, বাংলাদেশ ব্যাংক তো ছিল কিন্তু করেছেটা কী? বাংলাদেশ ব্যাংক কি তখন ঘাস কেটেছে?

আরও পড়ুন: ক্যাশলেস সোসাইটি হলে দুর্নীতি কমবে আর রাজস্ব বাড়বে: প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, আইন করে লাভ কী? দিয়ে দেন না ফ্রি। গতকাল পত্রিকা আসছে ভারতীয় এক্সপোর্টাররা পেঁয়াজের দাম বাড়াবে বলেছে আর আজ দেড়শ টাকা পেঁয়াজের কেজি। বাংলাদেশের কোথাও নিয়ন্ত্রণ আছে বা সরকার আছে বলে আমরা টের পাই না।

চুন্নু বলেন, শুধু আইন করলে হবে না। আইনের প্রয়োগ না করলে আইন করে লাভ কী? আমরা যখন মহাজোট করি, তখন খেলাপি ঋণ ছিল ২১ হাজার কোটি টাকা। এখন এক লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা। ব্যাংকের অবস্থা ভালো না। টাকা পাচার হচ্ছে সেটি আমরা না বিভিন্ন সোর্সের রিপোর্টে আসছে। বরং আইন না করে যে আইন আছে সেগুলো যাতে বাস্তবায়ন করা হয় সে বিষয়ে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।

‘নিউ ডেভলপমেন্ট ব্যাংক বিল,২০২৩’এর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায় একটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান এক হাজার কোটি টাকা মেরে চলে গেছে, সাউথ বাংলা ব্যাংকের। এরকম জনতা ব্যাংকের এমডি হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণ দিয়েছেন কোনো বাছ-বিচার নাই। টাকাগুলো দেশে নাই, টাকাগুলো যেকোনোভাবে হোক তারা ডলার করে বিদেশে পাচার করেছেন। যার কারণে রাষ্ট্র ডলারের সংকটে পড়েছে। এ সমস্ত লোককে কেন আইনের মুখোমুখি করা হয় না। বাংলাদেশ ব্যাংক কী করে? বিভিন্ন প্রাইভেট ব্যাংক বা সরকারি ব্যাংক থেকে যারা লোন নেন সেটি কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক সুপারভিশন করে। তারা কি সুপারি ভিশন করে যে হাজার হাজার কোটি টাকা লোন নিয়ে যারা ফেরত দেয় না তাদের কিছু হয় না।

জাতীয় পার্টির মহাসচিব আরও বলেন, অনেকে মনে করেন ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে ফেরত দিতে হয় না। আর ফেরত না দিলেও কিছু হয় না। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী পাঁচ বছর কী করেছেন? এটি খুবই দুঃখজনক যে ব্যাংকগুলো মালিক নামধারী কিছু লোক খালি করে দিয়েছে। এমন হয়েছে ব্যাংকের মালিক ৪০০ কোটি টাকা নিয়েছেন কিন্তু তার সুদ মাফ হয়ে গেছে। অথচ ৫০ হাজার টাকা ঋণ নিলে কৃষকের সুদ মাফ হয় না। এটা খুবই দুঃখজনক। এই অনিয়মগুলো অর্থমন্ত্রী দূর করতে পারেননি।

আরও পড়ুন: শেখ হাসিনার স্থান বাংলার জনগণের হৃদয়ে: কাদের

আইনের সংশোধনীর বিষয়ে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি বলেন, এটাই সংসদের শেষ অধিবেশন। আমরা পরে আসি কি না জানি না। উনি (আইনমন্ত্রী) আসেন কি না জানি না। সংশোধনীগুলো খুবই শর্ট, এগুলো নিলে খুব ভালো লাগবে এবং সেজন্য একটু পড়বো আরকি। আর পড়ার সুযোগ পাই কি না। উনিও শুনার সুযোগ পান কি না।

‘ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল-২০২৩’এর ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমাম বলেন, আমাদের ব্যাংকগুলোর অবস্থা বারবার বলেছি, ব্যাংকের ক্যাপিটাল শর্ট হয়েছে। দশটা ব্যাংকের ক্যাপিটাল শর্টের জন্য ২৪ হাজার কোটি টাকা তাদের সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে। সেই টাকা জনগণের ট্যাক্সের টাকা। এই ব্যাংকের লোনের পরিমাণ ১৫ হাজার লাখ কোটি টাকা। তার মধ্যে এক লাখ ৩৩ হাজার কোটি টাকা হলো খেলাপি। এই আইনটা যে উদ্দেশ্যে আনা হয়েছে সেটি কার্যকর হলে আমার মনে হয় নন ফাইন্যান্সিয়াল ব্যাংকিংগুলো একটু ভালো হওয়ার সম্ভবনা আছে।

 

আরপি/এসআর-১৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top