রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


করোনাকালেও নওগাঁয় দিনে ২০ হাজার লিটার ভোজ্য তেল উৎপাদন


প্রকাশিত:
১৩ জুন ২০২০ ০৪:৫০

আপডেট:
১৩ জুন ২০২০ ০৫:১২

নওগাঁয় বিসিক শিল্পনগরীতে দিনে ২০ হাজার লিটার ভোজ্য তেল উৎপাদন

করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যেও নওগাঁয় বিসিক শিল্প নগরী অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখে চলেছে। বাংলাদেশ ক্ষুদ্র কুটির শিল্প করপোরেশন (বিসিক) শিল্প নগরীতে রয়েছে তিনটি অয়েল মিল।

যেখানে শ্রমিকদের স্বাস্থ্য বিধি মেনে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার লিটার ভোজ্য তেলের পাশাপশি ৩৬ হাজার কেজি খৈল উৎপাদিত হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে এসব তেল দেশের বাহিরে রপ্তানি হচ্ছে। তবে তেলের উপর ৫ শতাংশ হারে করআরোপ করায় অনেকটা কষ্টসাধ্য হচ্ছে।

বিসিক শিল্প নগরীতে তিনটি অয়েল মিল চালু রাখা হয়েছে। যেখানে প্রায় দুইশতাধিক শ্রমিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২৪ ঘণ্টাই পর্যায়ক্রমে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। মিলগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় ২০ হাজার লিটার ভোজ্য তেলের পাশাপশি ৩৬ হাজার কেজি খৈল উৎপাদিত হচ্ছে। অত্যন্ত মানসম্মত এই ভোজ্য তেল দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিপণনের পাশাপাশি প্রতিবেশী দেশ ভারতেও রপ্তানি হচ্ছে। মিলগুলোতে উৎপাদিত খৈল স্থানীয় পর্যায়ে পশু খাদ্যের চাহিদা মেটাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

শ্রমিকদের স্বাস্থ্যবিধি বিষয়ে বিসিকের প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশনায় গঠিত মনিটরিং টিম এসকল কারখানা নিয়মিত নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। মনিটরিং টিমের সদস্যরা কারখানার শ্রমিকদের জন্য স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী যেমন: মাস্ক, গ্লোভস, হ্যান্ডওয়াশ, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, জীবাণুনাশক স্প্রে ইত্যাদির ব্যবস্থা নিশ্চিত করে উৎপাদন কাজ অব্যাহত রাখতে প্রতিটি শিল্প মালিককে নির্দেশনা দিচ্ছেন।

জেলায় এখনো সরকারিভাবে গ্যাসের সংযোগ আসেনি। শিল্পনগরীতে বিদ্যুৎ দিয়ে কারখানা চালাতে গিয়ে বাড়তি টাকা খরচ হচ্ছে। তবে গ্যাসের মাধ্যমে কারখানা চালু করা গেলে খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে বলে জানিয়েছে কারখানার মালিকরা।

জিলানী অয়েল মিলসের স্বতাধিকারী আব্দুল কাদের বলেন, তার কারখানায় প্রায় ৭০জন শ্রমিক কাজ করেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২৪ ঘণ্টাই অয়েল মিল চালু রাখা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে শ্রমিকরা কাজ করছেন। তার কারখানা থেকে প্রতিদিন ৭ হাজার কেজি ভোজ্য তেল ও ১৪ হাজার কেজি খৈল উৎপাদন করা হচ্ছে। যা দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন কোম্পানিতে যে তেল সরবরাহ করা হয় তার মধ্যে ‘প্রমি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান তাদের লেগো ব্যবহার করে বিদেশে তেল রপ্তানি করে।
জিলানী অয়েল মিলসের হিসাবরক্ষক সঞ্জিব রায় বলেন, ২০১৯-২০ অর্থবছরে সরকার প্রতিকেজিতে ৫শতাংশ হারে তেলের উপর করআরোপ করেছেন। এতে করে কৃষকরা সরিষার ন্যায্য দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। সরকার যদি কর প্রত্যাহার করে তাহলে কারখানার মালিক এবং কৃষকদের সুবিধা হবে। মালিকরা চাইবেন কৃষকদের কাছ থেকে কিছুটা কম দামে সরিষা কিনতে। আবার যখন তেল বিক্রি করতে হচ্ছে তখন কেজিতে ৫ টাকা করে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। কর প্রত্যাহারের দাবী জানান তিনি।
কারখানার ম্যানেজার মামুনুর রশিদ বলেন, পাশের জেলা রাজশাহী ও বগুড়াতে গ্যাসের সংযোগ আছে। অথচ আমাদের জেলায় এখনো গ্যাসের সংযোগ আসেনি। এ জেলায় অনেক শিল্প কারখানা আছে। যদি কারখানাগুলোতে গ্যাসের সংযোগ দেয়া যেত তাহলে বিদ্যুৎ খরচ অর্ধেকে নেমে আসবে।

শিল্পনগরী কর্মকর্তা আনোয়ারুল আজিম বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ২৪ ঘণ্টাই অটো অয়েল মিলগুলো তাদের উৎপাদন কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। করোনাকালে বাজারে সাপ্লাই চেইন স্বাভাবিক রাখতে এসব কারখানার অবদান প্রশংসা করার মতো। যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ন অবদান রেখে চলেছে। এছাড়া স্বাস্থবিধি নিশ্চিত করতে কারখানাগুলোতে নিয়মিত তদারকি করা হচ্ছে।

নওগাঁ বিসিক শিল্প নগরীর উপ-ব্যবস্থাপক শামীম হোসেন বলেন, শিল্প নগরীতে স্থাপিত ৫৩ টি শিল্পের মধ্যে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে ২১ টি শিল্প চালু রয়েছে। অয়েল মিলগুলোতে দৈনিক ২০ হাজার লিটার ভোজ্য তেল এবং ৩৬ হাজার কেজি খৈল উৎপাদিত হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে তেল দেশের বাহিরে রপ্তানি করা হলেও করোনার কারণে আপাতত বন্ধ রয়েছে।

 

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top