রাজশাহী রবিবার, ২০শে এপ্রিল ২০২৫, ৭ই বৈশাখ ১৪৩২


মিয়ানমারে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভে প্রথম মৃত্যু


প্রকাশিত:
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ২০:৩৮

আপডেট:
২০ এপ্রিল ২০২৫ ০৩:৩২

ছবি: সংগৃহীত

মিয়ানমারের স্বৈরশাসনবিরোধী বিক্ষোভে প্রথম কারো প্রাণহানি হয়েছে। অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তির পর দীর্ঘ এক সপ্তাহ লাইফ সাপোর্ট থাকা এক তরুণীর মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

মিয়ানমার এর আগেও প্রায় অর্ধশতক সেনা শাসনে ছিল। তবে সে সময়কার বিক্ষোভগুলোতে নিয়মিত রক্তপাতের ঘটনা ঘটলেও এবার তেমনটা দেখা যাচ্ছিল না। অবশেষে মিয়ে থেওয়ে থেওয়ে খাইং নামে বিশ বছরের এক তরুণীর মৃত্যু হলো।

জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ দমনে গত সপ্তাহে মিয়ানমারের পুলিশ সরাসরি গুলি, জল কামান ও রাবার বুলেট ব্যবহার করলে থেওয়ে খাইং নামের ওই তরুণী গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও শেষ পর্যন্ত জীবনযুদ্ধে তিনি হেরে গেলেন।

গুলিবিদ্ধ হওয়ার পরে বিশ বছর বয়সী থেওয়ে খাইং গত ৯ ফেব্রুয়ারি হাসপাতালে নেওয়ার পর থেকে তিনি লাইফ সাপোর্টে ছিলেন। মানবাধিকার সংস্থাগুলো বলছে, থেওয়ে খাইংয়ের মাথায় সরাসরি গুলি আঘাত করেছিল। এক্স-রেতেও দেখা গেছে যে, এই আঘাত গুলির। তার বাঁচার সম্ভাবনা ক্ষীণ বলে আগেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা।

রাজধানী নেপিদোর যে হাসপাতালে থেওয়ে খাইং চিকিৎসাধীন ছিলেন সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ স্থানীয় সময় শুক্রবার বেলা ১১টায় তার মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করে।

একজন চিকিৎসক বার্তা সংস্থা এএফপিকে বলেছেন, ‘আমরা ন্যায়বিচারের সন্ধান করব ও এগিয়ে যাব।’ তিনি আরও বলেন, থেওয়ে খাইংকে নিবিড় পরিচর্যা ইউনিটে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে হাসপাতালের কর্মীরা প্রচণ্ড চাপের মুখোমুখি হয়েছিলেন।

স্বৈরশাসনবিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়ে প্রাণ হারানো ওই তরুণীর ভাই রয়টার্সকে বলেন, তার ‘বলার কিছু নেই’ এবং বোনের মৃত্যুতে তিনি ‘সত্যিই মারাত্মকভাবে ব্যথিত’। থেওয়ে খাইংয়ের শেষকৃত্য কমিটির এক সদস্য বিবিসিকে জানিয়েছেন, থেওয়ে খাইংয়ের শেষকৃত্যের আয়োজন চলছে। এ নিয়ে বিস্তারিত তথ্য পরে সংবাদমাধ্যমকে জানানো হবে।

নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে সামরিক বাহিনীর ক্ষমতা দখল ও নির্বাচিত নেতা অং সান সু চিসহ রাজনীতিকদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষোভ অব্যাহত আছে। মিয়ানমারের জান্তা সরকার দেশজুড়ে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করেছে। কয়েক দফায় বন্ধ করে রেখেছে ইন্টারনেট। বিক্ষোভ দমনে জেনারেলরা আরও আগ্রাসী পদক্ষেপ নিলেও তা উপেক্ষা করে মিয়ানমারজুড়ে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করছেন বিক্ষোভকারীরা।

চলতি মাসের প্রথম দিনে সেনাপ্রধান মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বে সেনাবাহিনী দেশটির রাষ্ট্রক্ষমতা দখলে নেওয়ার কয়েকদিন পর থেকে জনঅসন্তোষ শুরু হয়। রাস্তায় নেমে স্বৈরশাসনবিরোধী বিক্ষোভ শুরু করেন লাখো মানুষ। বিশেষ করে তরুণ ও যুব সম্প্রদায়।

প্রথম দিকে বিক্ষোভে সহিংস পরিস্থিতি না দেখা দিলেও ধীরে ধীরে চড়াও হতে শুরু করে পুলিশ ও সেনাসদস্যরা। তারা বিক্ষোভ দমনে সর্বাত্মক ও আগ্রাসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে শুরু করে। সোমবার থেকে রাস্তায় বের হয় সাঁজোয়া যান। শোনা যেতে থাকে গুলির শব্দ।

বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করদে জলকমান ও রাবার বুলেট ছোড়া শুরু হয় কয়েকদিন আগে থেকে। এদিকে সোমবার সামরিক জান্তা সরকার বিবৃতি দিয়ে বিক্ষোভকারীদের হুমকি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, বিক্ষোভ করলে ২০ বছরের পর্যন্ত জেল হতে পারে।

আরপি / এমবি-৪



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top