‘ভোট চাইতে এসে অযথা সময় নষ্ট করবেন না’
ভোটারদের আকৃষ্ট করতে প্রার্থীর পক্ষে তার কর্মী-সমর্থকরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোট চাইছেন। তবে কেউ কেউ এতে বিরক্তও হচ্ছেন। সেই বিরক্ত থেকে বাঁচতে বাড়ির ফটকে প্রার্থীদের প্রতি অনুরোধলিপি ঝুলিয়ে দিয়েছেন ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের এক বাসিন্দা।
চতুর্থ ধাপে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি ঠাকুরগাঁও পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই পৌর এলাকার মানুষের সঙ্গে বিরামহীন গণসংযোগ করে যাচ্ছেন প্রার্থীরা। চলছে মাইকে প্রচারণা। পৌর এলাকার বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রার্থীর পক্ষে ভোট চাইছেন কর্মীরাও।
তবে প্রচারণার বাড়াবাড়িতে কিছুটা বিরক্ত হয়ে প্রার্থী-সমর্থকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে গেটে একটি অনুরোধলিপি ঝুলিয়ে দিয়েছেন পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফেরদৌস আরা। সেখানে লেখা রয়েছে, ‘এই পৌরসভায় আমাদের ভোট নেই। তাই ভোট চাইতে এসে অযথা সময় নষ্ট করবেন না।’এই অনুরোধলিপিই এখন ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এটি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা ফেরদৌস আরা বলেন, ‘প্রতিদিন মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরের কর্মীরা বাসায় এসে ভোট প্রার্থনা করছে। এতে আমি বিরক্তিবোধ করছি। কারণ এই পৌরসভায় আমার ভোট নেই। তাই বাড়ির গেটে একটি ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছি। পৌরসভায় ভোট নেই, তাই ভোট চেয়ে সময় নষ্ট করার দরকার নেই—এমনটি লেখে দিয়েছি।’
জানা গেছে, এ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন পাঁচজন। সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদে প্রার্থী হয়েছেন তিনজন। এই আট প্রার্থীর পাশাপাশি ওই ওয়ার্ডে প্রচারণা চলছে তিন মেয়র প্রার্থীরও। মাইকে পৃথকভাবে প্রার্থীদের প্রচারণা চালানো হচ্ছে। প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকরা আবার বাড়ি বাড়ি গিয়েও ভোট চাইছেন।
এভাবে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে প্রচারণা চালাচ্ছেন আটজন প্রার্থী। এছাড়া জনসংযোগ করছেন সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর পদের আরও ছয় প্রার্থী। ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবদুর রশিদের অভিযোগ, দুপুর হলেই প্রার্থীদের মাইকের শব্দে থাকা যায় না। একটু বিশ্রাম নেবেন, সেই সময় কলিংবেল বেজে ওঠে। দরজা খুললেই প্রার্থীর লোকজন হাতে একটা প্রতীকের ছবি ধরিয়ে দিয়ে চলে যান।
এ ব্যাপারে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ঠাকুরগাঁও জেলার সভাপতি প্রবীণ শিক্ষাবিদ মনতোষ কুমার দে বলেন, প্রার্থীরা পৌর উন্নয়নের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু পরিকল্পিত ও বাসযোগ্য পৌর শহর বাস্তবায়ন করতে হলে কী কী করবেন, তা কোনো প্রার্থীই সঠিকভাবে তুলে ধরছেন না। ভোটের আগে সব প্রার্থী নিজেকে সৎ, যোগ্য, অন্যায়-দুর্নীতির বিরুদ্ধে নির্ভীক ও সমাজসেবক দাবি করে ভোট চাইছেন। কিন্তু ভোট পেরলেই তাদের মধ্যে সেই চেতনার দেখা আর পাওয়া যায় না।
তিনি আরও বলেন, পৌরবাসীর সুখ-স্বস্তির জন্য ন্যায়পরায়ণ ও পরোপকারী ব্যক্তিকে জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করা গুরুত্বপূর্ণ। যারা শুধু ভোটের সময় নয়, সবসময়ই পৌরবাসীর ভাইবোন হবেন। প্রচারণায় ভোটাররা যেন বিরক্তিবোধ না হয় সেদিকে প্রার্থীদের খেয়াল রাখতে হবে।
তথ্য সূত্র: জাগো নিউজ
আরপি / এমবি-৭
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: