রাজশাহী বুধবার, ১লা মে ২০২৪, ১৯শে বৈশাখ ১৪৩১


শান্তিতে ঘুমের জন্য সরকারি চাকরি ছাড়লেন সুনীল


প্রকাশিত:
১২ আগস্ট ২০২৩ ০১:৫১

আপডেট:
১ মে ২০২৪ ০৭:০৩

ছবি: সংগৃহীত

ঘুমপ্রেমী মানুষ হয়তো অনেকেই আছেন। কিন্তু এমন মানুষ কি কেউ দেখেছেন? যিনি শান্তি করে ঘুমানোর জন্য নিজের চাকরিটাই ছেড়ে দিয়েছেন! এমনই এক ঘুমপ্রেমী মানুষ রাজবাড়ী সদর উপজেলার বানীবহ গ্রামের সুনীল কুমার দে। অবশ্য ইচ্ছা করে এমন ঘুমপ্রেমী হননি তিনি।

সুনীল কুমার জানান, ১৯৯৬ সালে তিনি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফরে সিপাহী পদে চাকরিতে যোগ দেন। কিন্তু এ চাকরিতে রাতে সময়মতো ঘুমাতে পারতেন না। পরে উপপরিদর্শক (এসআই) পদে পদোন্নতি পেলে কাজের চাপ আরও বেড়ে যায়। ডিউটি শেষে অনেক সময় ঘুমাতে ঘুমাতে ভোর হয়ে যেত। ভোরে ঘুমিয়ে আবার ঘুম ভাঙতে গড়িয়ে যেত দুপুর। সেই থেকে তার অভ্যাস হয়ে যায় দুপুর পর্যন্ত ঘুমানোর। কিন্তু তার শান্তির ঘুমে বাগড়া দিত চাকরি। সময়ে-অসময়ে ডাক পড়তো ডিউটিতে যাওয়ার। এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নেন চাকরি ছেড়ে দেওয়ার। তবে পরিবার ও স্বজনদের চাপে সেটিও করতে পারছিলেন না।

অবশেষে ২০২১ সালে চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নেন সুনীল কুমার। চাকরি শেষে বাড়ির পাশে বানীবহ বাজারে ওষুধের দোকান দেন। এখন আর তার শান্তির ঘুমে বাগড়া দেয় না কেউই। দুপুর ১২টা পর্যন্ত ঘুমিয়ে এরপর দোকান খোলেন বলে জানান সুনীল কুমার।

তিনি আরও বলেন, ‘২০২৬ সাল পর্যন্ত আমার চাকরির মেয়াদ ছিল। কিন্তু এই ঘুমের কারণে চাকরিটা আর করতে পারলাম না। এখন আর ডিউটির কোনো চাপ নেই। স্বাধীনভাবে ঘুমিয়ে তারপর দোকান খুলি।’

স্ত্রী, এক ছেলে ও এক মেয়েকে নিয়ে সুনীল কুমারের সংসার। স্ত্রী তাপসী দাস গৃহিনী। ছেলে রজনীকান্ত দে ঢাকার একটি বেসরকারি কলেজ থেকে এবছর এইচএসসি পরীক্ষা দেবেন। আর মেয়ে প্রার্থনা রাণী দে স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে।

সুনীল কুমারের স্ত্রী তাপসী দাস বলেন, ‘আমার স্বামী সকালে ঘুম থেকে উঠতে পারেন না। দুপুর ১২টার আগে তার ঘুম ভাঙে না। যে কারণে তিনি চাকরি থেকে স্বেচ্ছায় অবসর নিয়ে চলে এসেছেন। বর্তমানে অবস্থা এমন হয়েছে যে, দুপুর ১২টা পর্যন্ত না ঘুমালে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন।’

সুনীল কুমারের পাশের ওষুধের দোকানি আব্দুস সবুর মোল্লা বলেন, ‘ঘুমে ব্যাঘাত ঘটার কারণে সুনীলদা চাকরি ছেড়ে এসেছেন। বর্তমানে তিনি ওষুধের দোকান করছেন। আমরা দোকান খুলি সকাল ১০টায়। কিন্তু তিনি দোকান খোলেন দুপুর ১টায়। তবে অনেক রাত পর্যন্ত দোকান খোলা রাখেন তিনি। তার মতো বিনয়ী মানুষ খুব কমই আছেন।’

 

আরপি/এসআর-০৫


বিষয়: ঘুম


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top