রাজশাহী বুধবার, ৮ই মে ২০২৪, ২৫শে বৈশাখ ১৪৩১


কমিটির জেরে ছাত্রলীগ সভাপতিকে পেটালেন সাধারণ সম্পাদক


প্রকাশিত:
৬ মার্চ ২০২৩ ০৫:১৬

আপডেট:
৮ মে ২০২৪ ০৩:৫১

প্রতীকী ছবি

নোয়াখালীর সোনাইমুড়ীর চাষিরহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি তারেকুল ইসলামকে আটকে রেখে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে একই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন আরাফাত বাদশার বিরুদ্ধে।

গত বৃহস্পতিবার (২ মার্চ) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে উপজেলার চাষিরহাট ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। আহত ছাত্রলীগ নেতা বর্তমানে নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

ভুক্তভোগী চাষিরহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি তারেকুল ইসলাম জানায়, আমাকে সভাপতি করে গত ১৮ দিন আগে উপজেলার ৩ন‍ং চাষিরহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে গত ১ মার্চ নবনির্বাচিত সাধারণ সম্পাদক বাদশা আমাকে না জানিয়ে ৬নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কমিটি প্রকাশ করে। এরপর রাতে সে আমাকে জানায়। তখন আমি তাকে বলি তুই আমাকে ছাড়া কমিটি দিলি। আচ্ছা অসুবিধা নেই, যারা সংশ্লিষ্ট আছে তাদের সাথে কথা বলে এটা আমি সহি শুদ্ধ করে দেব। তবে এসব কাজ আর করিসনা। 

তারেকুল বলেন, পরবর্তীতে নোয়াখালী-১ আসনের (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) স্থানীয় সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিম সাহেবের সাথে আমার কথা হয়। পরবর্তীতে এমপি আমাকে ফোন দিয়ে বলে, এ তুমি কোথায়, তুমি বাদশাকে ফোন দাও। পরে আমি এবং এমপি সাহেব বাদশাকে ফোন করি। কিন্তু সে কারো ফোন রিসিভ করেনি। তখন এমপি আমাকে জানায় কালকে ১১টার মধ্যে তুমি বাদশার কাছে যাবে। সে কেন এমন করতেছে আমার মাথায় ধরছেনা।

তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, পরের দিন চাষিরহাট ইউনিয়ন পরিষদের সামনে বাদশার সাথে আমার দেখা হয়। পরে সে সেখান থেকে আমাকে মহিনের অফিসে নিয়ে যায়। ওখানে নিয়ে যাওয়ার পর সে আমাকে বলে ৬নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের কমিটিতে স্বাক্ষর করতে। আর বাকী ৮টি ওয়ার্ডের কমিটি কোন দিন দিবেন। এ বলে চাপ সৃষ্টি করে। তখন আমি তাকে জানায় আমাদের ইউনিয়ন কমিটিও এখানো পূর্ণাঙ্গ হয়নি।

তাছাড়া উপজেলা ছাত্রলীগ ও এমপির দিকনির্দেশনা ছাড়া আমি কিভাবে কমিটি দেব। তখন সে আমাকে বলে আপনি এখনই কমিটি দিবেন। আমার কাছে ৮টি ওয়ার্ডের সব কাগজ রেডি আছে। আপনি এখন স্বাক্ষর দেন। একপর্যায়ে আমার মা-বাবা ধরে আমাকে গালমন্দ করে গলায় থাকা স্বর্ণের চেইন ছিড়ে ফেলে। একই সাথে আমাকে বেধড়ক পেটাতে শুরু করে। আমার নাক,কান, চোখে জখম করে রক্তাক্ত করে ফেলে। সে আমার রক্ত বের হওয়া পর্যন্ত আমাকে পেটাতে থাকে। এখন আমি আমার চোখ নিয়ে দুচিন্তায় আছি। আমার চোখের অবস্থা বিষণ খারাপ। আমি বাম চোখে ঝাপসা দেখছি। আমি চোখ হারাতে বসেছি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তারেকুল বলেন, হামলাকারী ছাত্রলীগ নেতা বাদশা নেশামুক্তির জন্য রিহ্যাবে ছিল। পেটানোর পর থেকে স্থানীয় এমপি এইচ এম ইব্রাহীম সাহেব আমার কোন খোঁজ নেয়নি। বাদশা তার অনুসারী। এই হামলা পূর্বপরিকল্পিত ভাবে হয়েছে বলে এ ছাত্রলীগ নেতা দাবি করেন।

তবে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে চাষিরহাট ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন আরাফাত বাদশা অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন,সভাপতি নিজে আমার সাথে ঝামেলা করেছে।

সোনাইমুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি দেলোয়ার হোসাইন সুজন বলেন,এ ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রলীগ নেতা মৌখিক ভাবে অভিযোগ দিয়েছেন। তাকে এখন চিকিৎসা নিতে বলা হয়েছে। পরবর্তীতে দলীয় ফোরামে বসে এ বিষয়ে সিন্ধান্ত নেওয়া হবে।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জিয়াউল হক জিয়া বলেন,এ ঘটনায় দুই পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার নোয়াখালী-১ আসনের (চাটখিল-সোনাইমুড়ী) স্থানীয় সংসদ সদস্য এইচ এম ইব্রাহিমের মুঠোফোনে কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তাই এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

 

 

আরপি/এসআর-১২


বিষয়: ছাত্রলীগ


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top