রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১


বাস এলেই হুমড়ি খেয়ে পড়েন যাত্রীরা


প্রকাশিত:
১৮ জুলাই ২০২২ ০৩:৫৩

আপডেট:
১৮ জুলাই ২০২২ ০৭:১৫

পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর থেকেই শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহণ বাসমালিক গ্রুপের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে শরীয়তপুর-ঢাকা সড়কে রয়েছে বাস সংকট।

শরীয়তপুর-থেকে ঢাকাগামী এবং ঢাকা থেকে শরীয়তপুরগামী পরিবহণ সংকটে যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। ঈদের পর সরকারি ছুটি শেষে এর প্রভার পড়েছে শরীয়তপুর থেকে ঢাকাগামী যাত্রীদের।

এমনিতেই পরিবহণ সংকট, তার ওপরে ঈদের পর যাত্রীদের চাপ বেড়ে যাওয়ার কারণে শরীয়তপুর পৌরসভার বাস টার্মিনালে দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে শত শত যাত্রীকে। সড়কে যানজটের কারণে অনেক পরিবহণ সময়মতো টার্মিনালেও আসতে পারছে না।

শরীয়তপুর পৌরসভার বাস টার্মিনালে নেই কোনো যাত্রী ছাউনি, তাই ঘণ্টার পর ঘণ্টা টার্মিনালে দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে যাত্রীদের। ফলে চরম দুর্ভোগে পড়েন শত শত যাত্রীসাধারণের।

গত বৃহস্পতিবার থেকেই কর্মস্থলে যোগ দেওয়ার জন্য মানুষ ঢাকায় ফিরতে শুরু করেন। অনেকে বাড়তি ছুটি কাটিয়ে আজ রোববার ঢাকায় যাওয়ার জন্য রওনা হন।

শরীয়তপুর জেলা শহর থেকে ৪০টি বাস ঢাকায় চলাচল করছে। সকাল ১০টার পর থেকে পৌর বাস টার্মিনালে বাসের সংকট দেখা দেয় তীব্র আকারে। ঢাকা যাওয়ার জন্য শত শত মানুষ টার্মিনালে জড়ো হন বলে শরীয়তপুর জেলা সড়ক পরিবহন বাস মালিক গ্রুপের সহ-সভাপতি আবদুল বারেক হোসেন জানান।

রোববার বেলা ১১টার দিকে শরীয়তপুর পৌর বাস টার্মিনালে গিয়ে দেখা যায়, একটি বাস এলেই শত শত মানুষ হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। কার আগে কে উঠবেন, তা নিয়ে হুড়োহুড়ি করছেন। ভিড় ঠেলে বাসে উঠতে বেগ পেতে হয় বয়স্ক ব্যক্তি, নারী ও শিশুদের। অনেকে টিকিট কেটেও বাসের জন্য দু-তিন ঘণ্টা অপেক্ষা করেন।

আধা ঘণ্টা পরপর একটি বাস এলে তাতে ৫০ থেকে ৮০ জন যাত্রী উঠতে পারেন। অনেক যাত্রী বাসে দাঁড়িয়েও ঢাকার দিকে রওনা দিচ্ছেন। অনেকে আবার বাস না পেয়ে অতিরিক্ত টাকা দিয়ে মাইক্রেবাসসহ বিভিন্ন পরিবহনে গন্তব্যে ছুটে যাচ্ছে কর্মমুখী মানুষ।

শরীয়তপুর থেকে পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের সঙ্গে সংযোগ সড়ক না থাকা, ২৭ কিলোমিটার এ সড়কটি ভাঙাচোরা ও অপ্রশস্ত।

তাই নিদিষ্ট কোনো জায়গা ছাড়া একটি গাড়ি অন্য একটি গাড়িকে সাইড দিতে পারে না। ফলে চরম যানজটের সৃষ্টি হয়ে ২ ঘণ্টার রাস্তায় ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা সময় লেগে যায়। এ রাস্তা দিয়ে যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হচ্ছে।

বোরবার সকাল ৮টা থেকে সড়কের জাজিরার টিএনটি মোড়, কাজিরহাট, গনির মোড়সহ বিভিন্ন স্থানে চরম যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা বাসগুলো সড়কে আটকে থাকছে। এই বাসগুলো পৌর বাস টার্মিনালে পৌঁছাতে না পারায় যাত্রীদেরও অপেক্ষায় থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।

ডামুড্যা উপজেলার কনেকশ্বর এলাকার এনামূল হক খান বলেন, এক আত্মীয়ের বিয়ের জন্য ঈদের ছুটির সঙ্গে বাড়তি ছুটি নিয়ে গ্রামে এসেছিলাম। ঈদের আগে ঢাকা থেকে শরীয়তপুর আসার সময় বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয়েছে। আজ পরিবারের সদস্যদের নিয়ে ঢাকায় রওনা হই। সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পৌর বাস টার্মিনালে অপেক্ষা করে কোনো বাসে উঠতে পারিনি। এর চেয়ে কষ্ট আর কি হতে পারে।

গোসাইরহাট উপজেলা নাগেরপাড়া এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন বেপারি বলেন, ঢাকা যাওয়ার জন্য শরীয়তপুর পৌর বাস টার্মিনাল আসি। সকাল ১০টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত অপেক্ষা করেও বাসে উঠতে পারিনি। এখানে নেই কোনো যাত্রী ছাউনি ও কোনো টয়লেট নেই। তাই প্রখর রোদের মধ্যে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকতে অসুস্থ হয়ে গেছি।

শরীয়তপুর সদর উপজেলার বালুচরা গ্রামের হামেদ খাঁ বলেন, অসুস্থ রোগী নিয়ে এসেছি পৌর টার্মিনালে। ৩ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও বাস পেলাম না। এখন কি করব, তা বুঝতে পারছি না।

পরিবহণ কোম্পানি শরীয়তপুর সুপার সার্ভিসের চেয়ারম্যান ও শরীয়তপুর বাস মালিক সমিতির সভাপতি ফারুক আহম্মেদ তালুকদার বলেন, আজ জাজিরায় যানজট সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বাসের সংকট রয়েছে।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top