রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১

নাচোলে আ’লীগকর্মী ও সংখ্যালঘুর বসতবাড়ি ভাঙ্গার অভিযোগ ইউএনওর বিরুদ্ধে


প্রকাশিত:
২৫ জুলাই ২০২০ ০৩:৩২

আপডেট:
২৫ জুলাই ২০২০ ০৩:৩৬

আ’লীগকর্মী ও সংখ্যালঘুর বসতবাড়ি উচ্ছেদ

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে এক আওয়ামীলীগ কর্মী ও সংখ্যালঘুর বাড়ি ভাঙ্গার অভিযোগ উঠেছে নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবহিা সুলতানার বিরুদ্ধে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রায় ৬০বছর আগে নির্মিত বাড়ি দুটি কোন ধরণের নোটিশ ছাড়াই ভেঙ্গে ফেলেছে ইউএনও সাবিহা সুলতানা।

এই কঠিন দুঃসময়ে করোনার মধ্যে অসহায় ভাবে জীবন যাপন করছে পরিবার দুটির লোকজন। ভুক্তভোগি পরিবার দুটি ন্যায় বিচার পেতে বিভাগীয় কমিশনার ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।

লিখিত অভিযোগ ও সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজেলার গনইর গ্রামের হাল দাগ ১৬,জমির পরিমান ০.০৪শতক। এই জমির উপরে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে গনইর গ্রামের মৃতঃগোলমোহাম্মদের ছেলে (আওয়ামীলীগ কর্মী) মুকুল। মুকুলের বাড়ির দক্ষিন প্রান্তে সরকারি খাস খতিয়ানভুক্ত জমিতে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছে মৃতঃকষ্টধর এর ছেলে রঞ্জিত বর্মন।একই এলাকার খালেক নামের (অবঃপুলিশ সদস্য) এক ব্যক্তির অভিযোগ মুকুল ও রঞ্জিত খাসজমিতে রাস্তার উপর বাড়ি করে বসবাস করছে। ওদের কারনে আমার যাতায়াতাতের ব্যাঘাত ঘটছে।

এমন অভিযোগের প্রেক্ষিতে গত ২০ জুলাই সোমবার বেলা আনুমানিক এগারটার দিকে নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার নির্দেশে নাচোল ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার মাহামুদুল হাসান ও তহশীলদার রফিকুল ইসলাম অজ্ঞাতনামা ২৫/৩০জনের একটি সন্ত্রাসী বাহিনী নিয়ে মুকুল ও রঞ্জিত বর্মনের তফশীল বর্নিত জমির উপর নির্মিত ৮০ বছরের পুরাতন বাড়িতে হামলা চালিয়ে অর্ধেক বাড়ি ঘর ভেঙ্গে ফেলে। অন্যদিকে রঞ্জিত বর্মণের নতুন টিনের চালা ঘর ও দেওয়ালের প্রাচীর ভেঙ্গে ঘুড়িয়ে দেয় তহসিলদার রফিকুল ইসলাম।

কোন নোটিশ ছাড়া এত বছরের পুরাতন বাড়ি ভেঙ্গে ফেলা ক্ষমতার চরম অপব্যবহার ও সীমাহীন দুর্নীতি ও বাড়ি ভাঙ্গার সময় ভুক্তভোগি মুকুল ও রঞ্জিত বর্মন বাঁধা দিতে গেলে সার্ভেয়ার মাহামুদুল হাসান ও তহশলিদার রফিকুল ইসলাম একলক্ষ টাকা দাবি করে বলে, এ মুহুর্তে টাকাটা দিলেই বাড়িভাঙ্গা রোধ হবে। এটা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার নির্দেশ। তোরা জানিস না উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানা যেদিকে তাকায় সেদিক মরুভূমি হয়ে যাই। বাড়ির বাকি অংশ রেখে গেলাম টাকানা পেলে বাড়ির বাকি অংশ আবার ভেঙ্গে যাব। তাদের এমন হীন বক্তব্য ভুক্তভোগিদের নানা দুঃচিন্তায় ফেলেছে। করোনা ও বৃষ্টির মধ্যে খুব অসহায় ভাবে ভুক্তভোগিদের জীবন পার করছেন।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগি মুকুল জানান, আমরা গরীব মানুষ। বাড়ির জায়গাটুকই আমাদের শেষ সম্বল। আমাদের পরিবার দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামীলীগ করে। নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার গনইর গ্রামের অবঃপুলিশ সদস্য খালেকের ইশারায় এসব তান্ডব চালিয়েছে। কোন রকম নোটিশ এবং কোটের উচ্ছেদ অভিযানের আদেশ ছাড়াই এমন হীন তান্ড চালিয়েছে ইউএনও। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে নায্য বিচার দাবি করছি। একজনকে উঠাতে হলে ঐ ব্যক্তিকে অবশ্যই আগে পূর্নবাসন করতে হবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এমন বক্তব্যকে ও হার মানিয়েছে ইউএনও সাবিহা।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগি রঞ্জিত বর্মন জানান,মোটা অংকের ঘুষের বিনিময়ে সার্ভেয়ার ও তহসিলদার ইউএনওর নির্দেশে আমাদের শত বছরের বাড়িঘর ভেঙ্গে ফেলেছে। আমরা সংখ্যালঘু গোষ্টী প্রধান মন্ত্রীর নিকট নায্য বিচার দাবি করছি।

এ বিষয়ে সার্ভেয়ার মাহমুদুল হাসান জানান, আমরা ইউএনওর নির্দেশে তাদের খাস জায়গার উপর নির্মিতবাড়ি ভেঙ্গে ফেলেছি।

এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাবিহা সুলতানার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,গনইর গ্রামের অধিকাংশ লোকের অভিযোগের ভিত্তিত্বে তাদের বাড়ি ভাঙ্গা হয়েছে।

কোন নোটিশ ছাড়াই বা কোর্টের আদেশ ছাড়া এমন নির্দেশ দেওয়া কতটুকু আইন সঙ্গত জানতে চাইলে তিনি তা এড়িয়ে প্রতিবেদককে বলেন, ওদের বলে দিয়েন,খাস জমিতে বসবাস করে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ লেখা তা বুঝতে পারবে।

এ বিষয়ে জেলা আওয়ামীলীগের মহিলা সহ সভাপতি ও হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সম্পাদিকা রঞ্জনা রানী জানান,সংখ্যা লঘুদের নোটিশ ছাড়াই বাড়ি ভেঙ্গে ফেলা এটি চরম অন্যায় করেছে প্রশাসন। একজনের জন্য দুজনের বাড়ি ভেঙ্গে রাস্তা দেওয়া কতটুকু যুক্তিসঙ্গত!আমি এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে নাচোল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দুল কাদের এর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন,কোনরকম নোটিশ ছাড়াই অসহায় গরীব দুখী ও সংখ্যালঘুদের বাড়ি ভেঙ্গে ফেলা চরম অন্যায়। আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং তদন্ত করে ভুক্তভোগিদের পূর্নবাসনের জন্য জেলা প্রশাসকের দৃষ্টিআকর্ষন করছি।

 

আরপি/আআ-১৭



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top