রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৪ই বৈশাখ ১৪৩১

চাঁপাইনবাবগঞ্জে ডিলারদের কাছে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ


প্রকাশিত:
৯ জুলাই ২০২০ ০৩:১২

আপডেট:
২৬ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:১৭

ছবি: অভিযুক্ত মতিউর রহমান

চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল, গোমস্তাপুর, ভোলাহাট, শিবগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিএডিসি সার ডিলারদের কাছে বরাদ্ধকৃত সারের অতিরিক্ত সার পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে উৎকোচ নেয়ার অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) সার ও বীজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিলার সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান হাজির বিরুদ্ধে।

উৎকোচের টাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি উপ-পরিচালককে লাগবে বলে ডিলারদের কাছে থেকে এসব টাকা উৎকোচ হিসাবে উত্তোলন করে বিএডিসি সার ও বীজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিলার সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান হাজি।

সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা যায়, গত জুন মাসের শেষের দিকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিএডিসি ও বিসিআইসি সার ডিলারদের জন্য ২ হাজার মেঃটন সার বরাদ্দ দেয় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন। আর এই অতিরিক্ত বরাদ্ধের ডিএপি সারের বস্তা ডিলারদের পাইয়ে দেওয়ার নাম করে বস্তা প্রতি ১০টাকা করে সার ডিলারদের কাছে উৎকোচ নেয় বিএডিসি সার ও বীজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিলার সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান হাজি। সার ডিলাররা উৎকোচ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে তাদের ডিলারশীপ লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে হুমকি দেয় বিএডিসি সার ও বীজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিলার সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান হাজি।

চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাঁচ উপজেলায় বিএডিসির সার ডিলার রয়েছেন প্রায় ৩২জন এর মতো। জেলার ২জন সার ডিলার বাদে ৩০ জন সার ডিলার এই অতিরিক্ত সার পেতে বস্তা প্রতি ১০টাকা করে মোট একলক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা উৎকোচ দিয়েছে বলে জানাগেছে।

জেলার শিবগঞ্জ উপজেলার রহমান ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী সার ডিলার মিলন বলেন, গত জুন মাসে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার বিএডিসি সার ডিলারদের জন্য অতিরিক্ত বরাদ্ধ হিসাবে ১৪২০৮ ডিএপি সারের বস্তা বরাদ্ধ দেয় চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন। আমি ৪৪৪ বস্তা ডিএপি সারের বস্তা বরাদ্ধ পাই। আর এই বরাদ্ধের জন্য ডিএপি সারের বস্তা প্রতি ১০টাকা করে নিলে আমার কাছে ৪৪৪বস্তার জন্য মোট ৪,৪৪০টাকা উৎকোচ হিসাবে নিয়েছে মতিউর হাজি। আমি প্রথমে উৎকোচ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে মতিউর রহমান আমার বিএডিসি সারের লাইসেন্স বাতিলের হুমকি দেয়। আর এই উৎকোচের টাকা নাকি চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি উপ পরিচালককে দিতে হবে বলে জানায় মতিউর হাজি। এ কারনে আমি টাকা দিয়েছি মতিউর রহমানকে।

এ বিষয়ে নাচোল এন আর ট্রেডার্স এর স্বত্বাধিকারী নারায়ন বলেন, আমাকে ডিএপি সারের অতিরিক্তি বরাদ্ধের জন্য উৎকোচ হিসাবে বিএডিসি সার ও বীজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিলার সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান হাজি আমার কাছে উৎকোচ চেয়েছিলো কিন্তু সংকটের কারণে আমি দিতে পারিনী।

নাচোল বাজারের নাম না প্রকাশ করার শর্তে অন্য একজন বিএডিসি সার ডিলার জানান,উৎকোচ হিসাবে আমি সারের জন্য বিএডিসি সার ও বীজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিলার সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান হাজি কে প্রায় সাড়ে চার হাজার টাকা দিয়েছি।

এ বিষয়ে বিএডিসি সার ও বীজ চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা ডিলার সমিতির সভাপতি মতিউর রহমান হাজির সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, সেভাবে আমি কারো কাছে উৎকোচ হিসাবে টাকা নেয়নি। টাকা নেওয়ার প্রমান আছে এমন প্রশ্নের জবাবে সে ফোনটি কেটে দেয়।

এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃনজরুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমি মতিউর রহমানকে কখনো দেখেনি বা চিনিনা। সে আমার দপ্তরের কখনো আসেনী। চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় সারের সংকট দূরে আমি নিরলস ভাবে কাজ করতেছি। আমি সার ডিলারদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই আমার নাম করে কেউ টাকা চাইলে প্রশাসনকে জানান।

আরপি/আআ-১১



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top