রাজশাহী রবিবার, ৫ই মে ২০২৪, ২৩শে বৈশাখ ১৪৩১

অডিট

বাংলালিংকের ৮২০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি


প্রকাশিত:
২৬ জুলাই ২০২২ ০৭:৪৪

আপডেট:
৫ মে ২০২৪ ১৮:৩৮

ছবি: সংগৃহীত

বাংলালিংকের অডিট প্রতিবেদন এখনও চুড়ান্ত হয়নি তবে সর্বশেষ প্রতিবেদন পর্যন্ত ৮২০ কোটি ৭২ লাখ টাকার ফাঁকি বের হয়েছে। ভ্যাট, ট্যাক্স, রেভিউনিউ শেয়ারিং, হ্যান্ডসেট রয়্যালিটি, অ্যাকসেস ফ্রিকোয়েন্সি পেইমেন্ট, মাইক্রোওয়েভ ফ্রিকোয়েন্সি পেইমেন্ট, পাওয়ার আউটপুট চার্জ, লাইসেন্স ফিসহ অনেকগুলো ক্যাটাগরিতে এই ফাঁকির হিসাব মিলেছে অডিটে।যদিও চুড়ান্ত প্রতিবেদনে এই অর্থ কমবেশি বা অপরিবর্তিত থাকতে পারে।

বিটিআরসির নিয়োগ করা বাংলালিংকের অডিটর মেসার্স মসিহ মুহিত হক এন্ড কোম্পানি এখন পর্যন্ত ‘চারটি প্রতিবেদন’ জমা দিয়েছে। যেখানে অডিট আপত্তিতে (প্রভিশনাল) বাংলালিংকের কাছে এই পরিমাণ অর্থ বিটিআরসির পাওনা দাবি, এই টাকার মধ্যে অবশ্য করও রয়েছে।

রাবির ভর্তি পরীক্ষা: রাজশাহীতে যানজটে জনদূর্ভোগ

ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার জানান, রাষ্ট্রের পাওনার ক্ষেত্রে কোনো ছাড় নয়। এ বিষয়ে আগেও আমরা সঠিক অবস্থানে ছিলাম। পাওনা পেলে দিতে হবে।

অডিটে বাংলালিংকের কাছে পাওনা এবং তা আদায়ে কবে নাগাদ কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, এমন প্রশ্নে বিটিআরসির ভাইস-চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র জানান, অডিট প্রতিবেদন এখনও চুড়ান্ত হয়নি। চুড়ান্ত হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।অডিট আপত্তিতে (প্রভিশনাল) বাংলালিংকের কাছে বিটিআরসির এই বিপুল পরিমাণ অর্থ পাওনার বিষয়ে বাংলালিংকের মতামত জানতে চায় ।

বাংলালিংকের হেড অফ কর্পোরেট কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড সাস্টেনিবিলিটি আংকিত সুরেকা জানান, ‘এটি সম্পূর্ণভাবে ভিত্তিহীন একটি তথ্য। অডিট প্রক্রিয়া এখনও চলমান এবং মাঝামাঝি পর্যায়ে রয়েছে। অডিট শেষ হওয়ার আগেই এই ধরনের বিভ্রান্তিকর তথ্য আলোচনায় আসা অত্যন্ত আপত্তিকর।

সম্পূর্ণ প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত এই ব্যাপারে কোনো মন্তব্য করা যৌক্তিক নয়।’বাংলালিংকের অডিটের জন্য মেসার্স মসিহ মুহিত হক এন্ড কোম্পানিকে বাংলালিংকের জন্য অডিটর নিয়োগ করে কার্যাদেশ দেয়া হয়েছিলো ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট। বিটিআরসির সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী এই অডিট শেষ করার কথা ছিলো ২০২২ সালের ২৩ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।নির্ধারিত সময়ে অডিট শেষ না করতে পেরে অডিটর বিটিআরসির কাছে আরও সময় চায়। বিটিআরসি ২০২২ সালের ৩১ জানুয়ারি এই মেয়াদ বাড়ানো বিষয়ে সভায় বসে।

ভর্তি পরীক্ষা: ৫৫ বছর বয়সেও স্বপ্নপূরণে বেলায়েত

সেখানে চুক্তির মূল্য ও কার্যপরিধি অপরিবর্তিত রেখে বাড়তি ৩ মাস সময় বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়। সেই বৈঠকে এটিও সুপারিশ করা হয় যে, এরপর যদি আরও সময় লাগে তাহলে আবার সময় বাড়ানোর ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে। সেই দফায় ২৩ মে পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়েছিলো।বাংলালিংকের এই অডিট করতে মসিহ মুহিত হক এন্ড কোম্পানিকে ৮ কোটি ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা দিতে হয়েছে বিটিআরসিকে।

এই কোম্পানি ভারতীয় এক অডিট কোম্পানির সঙ্গে যৌথভাবে রবিরও অডিট করেছিলো, এরজন্য তারা নিয়েছিলো ৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা।বাংলালিংকের অডিট করার কয়েক দফার মধ্যে শেষে দফার উদ্যোগে অডিটর নিয়োগে দরপত্র আহবান করা হয় ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বর ।

এতে ৯ কোম্পানির সাড়া পেয়েছিলো নিয়ন্ত্রণ সংস্থা।এরপর সর্বনিম্ন দরদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সুপারিশ, কমিশন সিদ্ধান্ত এবং নেগোশিয়েশনের ভিত্তিতে সংশোধিত আর্থিক প্রস্তাবে ৮ কোটি ৭৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকায় মেসার্স মসিহ মুহিত হক এন্ড কোম্পানির নিয়োগ চূড়ান্ত করা হয়।এর আগে বাংলালিংকে অডিট করতে ২০১১ সালে অডিটর নিয়োগ দেওয়ার পর ওই প্রতিষ্ঠানটি কাজ শুরু করেছিল।

কিন্তু মাঝপথে এসে অডিটর কাজ করবে না বলে জানায়।ওই সময় অডিটর বদলে নতুন কোম্পানিকে দায়িত্ব দিলেও তারাও এক পর্যায়ে অডিট করতে অস্বীকৃতি জানায়। তবে অডিট প্রতিষ্ঠান আহমেদ জাকের অ্যান্ড কোম্পানি কখনোই এর সুনির্দিষ্ট কারণ উল্লেখ করেনি।পরে ২০১৭ সালে আবারও বাংলালিংকের হিসাব অডিটের উদ্যোগ নেয় বিটিআরসি।

ওই বছর বেশ খানিকটা সময় নিয়ে দাফতরিক কাজকর্ম অনেকটা এগিয়ে নেওয়া হয়।সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দিয়ে আগ্রহীদের কাছ থেকে প্রস্তাবও নেওয়া হয়। অডিটর বাছাই করতে গিয়েও সময় বেশি চলে যাওয়ায় এক পর্যায়ে তা বাতিল করে দেয় কমিশন।

ইতোমধ্যে গ্রামীণফোন ও রবির অডিট সম্পন্ন করার পর গ্রামীণফোনের কাছে অডিট আপত্তির ১২ হাজার ৫৭৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা হতে ২ হাজার কোাটি টাকা এবং রবির অডিট আপত্তির ৮৬৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা হতে ১৩৮ কোটি টাকা আদায় করছে বিটিআরসি। সূত্র: টেকশহর

আরপি/হাসান

 



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top