রাজশাহী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


রাজশাহীতে ৪৮তম জাতীয় শিক্ষা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত


প্রকাশিত:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:৫০

আপডেট:
১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ১৭:৫১

 

রাজশাহীতে ৪৮তম জাতীয় স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষা ক্রীড়া সমিতির গ্রীষ্মকালীন ক্রীড়া প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার সকাল থেকে রাজশাহী জেলা জাতীয় ঈদগাহ মাঠে এ প্রতিযোগিতার সবগুলো ইভেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়।

গ্রীষ্মকালীন এ প্রতিযোগিতায় ফুটবল, কাবাডি, হ্যান্ডবল ও সাঁতারে অংশগ্রহণকারীরা উপজেলা পর্যায়ে প্রতিযোগিতা শেষে ফাইনালে জায়গা করে নেয়। ফাইনালে ইভেন্ট অনুযায়ী একক ও দলগতভাবে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করে ফাইনালিস্টরা। এগুলোর মধ্যে সাঁতারে বয়সভিত্তিক এবং অন্যান্যগুলোতে ছাত্র ও ছাত্রীদের আলাদা ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়।

ফুটবলে ছাত্র ক্যাটাগরিতে বিজয়ী হয়েছে মতিহার থানার রাজশাহী কোর্ট একাডেমী, রানারআপ হয়েছে দুর্গাপুরের হাট কানপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়। আর ছাত্রী ক্যাটাগরীতে চ্যাম্পিয়ন গোদাগাড়ীর সোনাদিঘী উচ্চ বিদ্যালয় ও রানারআপ পবার দামকুড়া উচ্চ বিদ্যালয়।

কাবাডিতে ছাত্রদের ম্যাচে নগরীর শিক্ষাবোর্ড মডেল সরকারি স্কুল এন্ড কলেজ চ্যাম্পিয়ন ও দুর্গাপুরের আমগাছি সাহার বানু উচ্চ বিদ্যালয় রানারআপ হয়েছে। আর ছাত্রীদের ম্যাচে অধ্যাপক নজিবর রহমান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন ও রহমতুল্লাহ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় রানারআপ হয়েছে।

হ্যান্ডবলে ছাত্রদের ম্যাচে পবার দামকুড়া হাট উচ্চ বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন ও গোদাগাড়ীর বাসুদেব উচ্চ বিদ্যালয় রানারআপ হয়েছে। এছাড়াও ছাত্রীদের ম্যাচে গোদাগাড়ীর আ.ফ. জি. পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় চ্যাম্পিয়ন ও পবার দামকুড়া হাট উচ্চ বিদ্যালয় রানারআপ হয়েছে।

অন্যদিকে, বড় বালক ও বালিকা ক্যাটাগরির সবগুলো সাঁতারই অনুষ্ঠিত হয় ১০০ মিটারে। বড় বালকদের মুক্ত সাঁতারে প্রথম হয়েছে নগরীর মুসলিম হাইস্কুলের মো. স্বাধীন, দ্বিতীয় হয়েছে মসমিদ মিশন একাডেমীর হৃদয় আহমেদ। চিৎ সাঁতারেও তারাই প্রথম ও দ্বিতীয়স্থান অধিকার করে। বুক সাঁতারে আবারো হৃদয় প্রথম ও মুসলিম হাইস্কুলের নিরব দ্বিতীয় হয়েছে। এবং প্রজাপতি সাঁতারে স্বাধীন প্রথম ও নিরব দ্বিতীয় হয়েছে। এছাড়াও ২০০ মিটার মুক্ত সাঁতারে নিরব প্রথম ও বড়গাছী কুঠিপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের রিয়াদ হোসেন দ্বিতীয় হয়েছে।

এদিকে, বালিকা বড় ক্যাটাগরির মুক্ত সাঁতারে রাজশাহী মডেল স্কুল এন্ড কলেজের শারমিন আক্তার ও মর্জিনা আক্তার যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় হয়েছে। চিৎ সাঁতারে শিরোইল কলোনী উচ্চ বিদ্যালয়ের তিশা খাতুন প্রথম ও শারমিন আক্তার দ্বিতীয় হয়েছে। বুক সাঁতারে অবস্থান বদলে শারমিন আক্তার প্রথম ও তিশা খাতুন দ্বিতীয় হয়েছে। প্রজাপতি সাঁতারে আবারো সেই মর্জিনা আক্তার প্রথম ও অ.ফ.জি. পাইলট বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের তানিয়া দ্বিতীয় হয়েছে। এছাড়াও ২০০ মিটার মুক্ত সাঁতারে একমাত্র প্রতিযোগি শারমিন আক্তার পুরস্কার লাভ করে।

অন্যদিকে, মধ্যম বালক-বালিকা ক্যাটাগরীর সকল সাঁতার অনুষ্ঠিত হয় ৫০ মিটার। বালকদের মুক্ত সাঁতারে ইসলামী শিক্ষা ও গবেষণা বিদ্যালয়ের তাহমিদ আহনাফ প্রথম ও পশ্চিম ঝিকড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নাসিম উদ্দীন দ্বিতীয় হয়েছে। চিৎ সাঁতারে আবারো তারাই প্রথম ও দ্বিতীয় হয়েছে। আর বুক সাঁতারে মুসলিম হাইস্কুলের নুরুন্নবী প্রথম শিহাব দ্বিতীয় হয়েছে। প্রজাপতি সাঁতারে আবার সেই তাহমিদ আহনাফ প্রথম ও শ্যামপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের মুয়াজ মাহমুদ দ্বিতীয় হয়েছে।

আর মধ্যম বালিকাদের মধ্যে মুক্ত সাঁতার, চিৎ সাঁতার ও প্রজাপতি সাঁতারে একমাত্র প্রতিযোগি হওয়ায় গুল-গফুর বালিকা বিদ্যালয়ের নাসিমা খাতুন পুরস্কার লাভ করে।

প্রতিযোগিতা শেষে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরন করেন জেলা প্রশাসক ও আয়োজক ক্রীড়া সমিতির সভাপতি হামিদুল হক। প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা চ্যাম্পিয়ন হয়েছে তাদেরকে অভিনন্দন। আর যারা রানারআপ হয়েছে তাদেরকেও অভিনন্দন। আমার মনে হয় মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ছেলেদের চেয়ে মেয়েদেরকে বেশি ভালোবাসেন। এসময় সবার মধ্যে হাসির রোল পড়ে যায়।

তিনিও মৃদু হাসিতে সরসভাবে বলেন, না.. ছেলেদেরকেও ভালোবাসেন, কিন্তু মেয়েদেরকে একটু বেশি ভালোবাসেন। মেয়েদেরকে ক্রীড়াঙ্গনে নিয়ে আসতে তিনি বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। মেয়েরা ক্রীড়াঙ্গনে এলে শারিরীক ও মানসিকভাবে আরো মজবুত হবে। আর তখন রাস্তাঘাটে ছেলেরা বিরক্ত করতে আসলে তাদের ঘাড় ভেঙ্গে দেবে। তারা আর তোমাদের বিরক্ত করতে সাহস পাবেনা। মেয়েদের উন্নতিতে দেশের উন্নতি হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। এছাড়াও তিনি ক্রীড়াক্ষেত্রে উন্নতির জন্য সবধরনের পৃষ্ঠপোষকতা ও সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

তিনি আরো বলেন, যেকোন সময় খেলাধুলার চর্চা-বিকাশে ও অন্য যেকোন সমস্যায় চলে আসবে আমার অফিসে। আমি প্রতি বুধবার তোমাদের কথা শোনার জন্য বসে থাকি। এছাড়াও তিনি এ আয়োজনের সাথে জড়িত সকলকে ধন্যবাদ দেন।

আয়োজক ক্রীড়া সমিতির সম্পাদক ও জেলা শিক্ষা অফিসার মোহাঃ নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সহ-সভাপতি ও জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মুহম্মদ শরিফুল হকসহ জেলার বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

 

আরপি/ এএন



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top