রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৮শে মার্চ ২০২৪, ১৫ই চৈত্র ১৪৩০

বাল্যবিয়ে, যৌতুকের ১০ লাখ টাকায় কারারক্ষীর চাকরী!


প্রকাশিত:
২৩ মে ২০২১ ১৮:৫৮

আপডেট:
২৩ মে ২০২১ ১৯:০২

ছবি: সজন হোসেন

কারারক্ষী নিয়োগে দালাল চক্রের মাধ্যমে টাকা লেনদেনের ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে অনেক আগেই। এক চাকরী প্রার্থী নিজেই জানিয়েছেন, ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে সকল পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে নিয়োগপত্রও হাতে পেয়েছেন তিনি! চাকরী প্রত্যাশী ওই যুবকের নাম মো. সজন হোসেন। তিনি নওগাঁর মান্দা উপজেলার কালিনগর এলাকার সেলিম হোসেনের ছেলে। চাকরীর আবেদনে তার বিডিজেএম নম্বর ১১০৩৮৮। একটি দালাল চক্রের সঙ্গে চাকরীর বিষয়ে ১৫ লাখ টাকা লেনদেনের চুক্তি হয় সজনের।

তবে অনুসন্ধানে এবার বেরিয়ে এসেছে নিয়োগের ভেতরের অনিয়ম ও অস্বচ্ছতার আরো নানা তথ্য। সজন নিয়োগপত্র পেয়েছেন ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে। যার মধ্যে ১০ লাখ টাকাই কনে পক্ষের কাছ থেকে যৌতুক হিসেবে আদায় করা। অর্থাৎ চাকরীতে যোগদানের পূর্বেই বিয়ে করেছেন সজন। তবুও তিনি হাতে পেয়েছেন নিয়োগপত্র। অথচ বিধি অনুযায়ী, চাকরি প্রার্থীকে অবশ্যই অবিবাহিত হতে হবে। নিয়ম ভেঙ্গে ও টাকার বিনিময়ে পাওয়া নিয়োগে তাকে আগামী ১ জুন বিভাগীয় কারা মহাপরিদর্শকের কাছে নিয়োগপত্র ও প্রয়োজনীয় সকল কাগজপত্র নিয়ে হাজির হতে বলা হয়েছে।

সূত্র জানায়, গত এপ্রিল মাসে মান্দার কালিকাপুর ইউনিয়নের কাজী মো. আলমগীরের রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে ওই এলাকার এক ব্যক্তির নাবালিকা মেয়ের সঙ্গে খুব গোপনে বিয়ে হয় সজনের। মেয়ে নাবালিকা হওয়ায় জানতে দেয়া হয়নি প্রতিবেশীদেরকেও। তবে বিয়ের আগেই সরকারী চাকরীর প্রলোভন দেখিয়ে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে সজনের পরিবার। সরকারী চাকুরে জামাই পাওয়ার আশায় রাজিও হয়ে যায় কনেপক্ষ। বিয়ে হয় সজনের এক মামার বাড়িতে, গোপনে রাতের আধারে। শেষ পর্যন্ত যৌতুকের ১০ লাখ এবং নিজেদের ৫ লাখ টাকায় বগুড়ার একটি দালাল চক্রের মাধ্যমে চাকরী জোটে তার। যদিও লিখিত পরীক্ষায় সকল প্রশ্নের উত্তর না দিয়ে এবং মৌখিক পরীক্ষায় নিজের নাম ও বাবার নাম বলেই কাকতালীয়ভাবে পাশ করেছেন তিনি।

কারারক্ষী নিয়োগে টাকা লেনদেনের বিষয়টি মো. সজন হোসেন নিজেই স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, ‘স্বপ্ন ছিল সরকারী একটা চাকরী করব। এ যুগে তো আর টাকা ছাড়া চাকরী হয় না। তাই বাধ্য হয়ে টাকার বিনিময়ে চাকরী নিতে হয়েছে। তবে এত টাকা তো আর জোটানো সম্ভব ছিল না। তাই বিয়ে করে মেয়ে পক্ষের কাছ থেকে ১০ লাখ টাকা নিয়েছি এবং নিজেরা ৫ লাখ জোগাড় করে মোট ১৫ লাখ টাকার বিনিময়ে চাকরীটা নিয়েছি।’

এ ব্যাপারে কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মমিনুর রহমান মামুন বলেন, কোনো বিবাহিত ব্যক্তি চাকরীতে প্রবেশের নিয়ম নেই। আর অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে বা অসদুপায় অবলম্বন করে চাকরীতে নিয়োগের তো প্রশ্নই আসে না। এমন অনিয়মের কোনো তথ্যপ্রমাণ পেলে অবশ্যই তৎক্ষনাৎ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

 

 

 

আরপি/এসআর-০৯



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top