রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০

বাবা-ছেলের অসাধারণ প্রতিভা


প্রকাশিত:
১৪ মার্চ ২০২১ ১৭:৪৮

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৫:০০

ছবি: সংগৃহীত

রাস্তার পাশে শতাধিক মানুষ জড়ো হয়েছেন। কাছে গিয়ে দেখা গেল, বিভিন্ন পশু-পাখির ডাক হুবহু নকল করছে ১০ বছরের এক শিশু। তার পারদর্শিতা দেখে মুগ্ধ সবাই। শুনে মনে হয় হাঁস, মুরগি, ব্যাঙ, শেয়াল, ‍কুকুর-বিড়াল ও পাখিসহ বিভিন্ন প্রাণী ডাকছে। অসাধারণ প্রতিভা তার।

পাশাপাশি মধ্যবয়সী এক ব্যক্তি কালো কাপড়কে মুহূর্তেই লাল বানিয়ে ফেলেন। আবার লাল কাপড়কে সাদা বানিয়ে ফেলছেন। এরপর সাদা কাগজকে টাকায় রূপ দিচ্ছেন। এরই ফাঁকে ফাঁকে বিভিন্ন পশু-পাখির ডাক দিচ্ছে শিশুটি। মূলত তাদের জাদু দেখতে জড়ো হন শতাধিক মানুষ।

বুধবার (১০ মার্চ) দুপুরে ঠাকুরগাঁও শহরের কলেজপাড়া এলাকায় এ দৃশ্য দেখা যায়। তাদের জাদু দেখে ১০-২০ টাকা করে দিয়েছেন অনেকেই। খোঁজ নিয়ে জানা গেল জাদু দেখানো শিশু আর মধ্যবয়সী লোকটি বাবা-ছেলে। ছেলে মো. সুমনকে সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন জেলায় জাদু দেখান বাবা হিরা মিয়া। প্রতিদিন ৩০০-৪০০ টাকা উপার্জন হয়।

দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জ উপজেলার মুরসিদাহাট ইউনিয়নের সুলতানপুর গ্রামে হিরা মিয়ার বাড়ি। তার ছেলে সুমন সুলতানপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, রাস্তার পাশে সাউন্ডবক্সে গান ছেড়ে দিয়ে জাদু দেখান বাবা-ছেলে। জাদু দেখিয়ে যা উপার্জন হয়, তা দিয়ে সংসার চলে।

দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জাদু দেখা আনসারুল ইসলাম বলেন, যাওয়ার সময় চোখে পড়ল বিষয়টি। এসে দেখি শিশুটি ও তার বাবা বিভিন্ন ধরনের জাদু দেখাচ্ছেন। দেখে ভালো লাগল।

ফিরোজ আলম বলেন, বিভিন্ন পশু-পাখির ডাক হুবহু নকল করতে পারে শিশুটি। বিড়াল-কুকুর ও পশু-পাখির মতো ডাকতে পারে। এর আগে এমন জাদু দেখিনি। দেখে ভালোই লেগেছে। তাই কিছু টাকা উপহার দিলাম।

সুমন জানায়, পড়াশোনার পাশাপাশি বাবার সঙ্গে জাদু দেখাই। আমারও ভালো লাগে। স্কুল বন্ধ থাকায় বাবার সঙ্গে বিভিন্ন স্থানে যাই। এতে কিছু উপার্জন হয়। রাতে বাসায় গিয়ে পড়তে বসি।

জাদুশিল্পী হিরা মিয়া বলেন, ১১ বছর ধরে জাদু দেখাই। সৎ পথে চলি বলেই এখন পর্যন্ত বিপদে পড়তে হয়নি। আমার ছেলে বিভিন্ন পশু-পাখির ডাক হুবহু নকল করে ডাকতে পারে। এটি আল্লাহর দান। তবে সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়।

তিনি বলেন, জাদু দেখানো ছাড়া কোনো কাজ করি না। জাদু দেখিয়ে যা উপার্জন হয়, তা দিয়ে সংসার চলে। কষ্ট হলেও কিছু করার নেই। জীবিকার জন্য করতে হয়। ছেলেকে নিয়ে বিভিন্ন জেলায় গিয়ে জাদু দেখাই। বিভিন্ন গ্রামেও যাই। গ্রামে জাদু দেখালে মানুষ চাল-ডাল দেয়। শহরে দেখালে কিছু টাকা পাই। সারাদিন জাদু দেখিয়ে সন্ধ্যায় বাসায় যাই।

আরপি / এমবি-৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top