রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


রাজশাহীতে বিএনপির গণসমাবেশ, নেতাকর্মীদের জনস্রোত


প্রকাশিত:
১ ডিসেম্বর ২০২২ ২০:৫০

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৬:২৭

ছবি: রাজশাহী পোস্ট

বিভাগীয় সমাবেশের অংশ হিসেবে আগামী শনিবার (৩ ডিসেম্বর) রাজশাহীতে গণসমাবেশ করবে বিএনপি।

বুধবার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে আট শর্তে বিভাগীয় এই সমাবেশের অনুমতিও দিয়েছেন রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশ (আরএমপি)। এরপর থেকেই নেতাকর্মীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠেছে পুরো রাজশাহী নগরী।

সরেজমিনে দেখা যায়, সমাবেশের দুই দিন আগে থেকেই বুধবার (৩০ নভেম্বর) রাতে নগরীর মাদ্রাসা মাঠে আসতে শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। ফায়ারা সার্ভিস মোড় ও মুক্তমঞ্চ শাহ মখদুম ঈদগাহ রোডে কয়েক হাজার নেতাকর্মীর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। তাদের মধ্যে বড় একটা অংশই নারী ও বয়স্ক লোক ছিল।

সমাবেশস্থলে পৌঁছাতে প্রশাসনের শত বাধা উপেক্ষা করতে হয়েছে বলে তাদের। তারা রাত্রিযাপনের প্রস্তুতিসহ এনেছেন খাবার তৈরির প্রয়োজনীয় উপকরণও। আলু, চাল-ডাল, সবজি ও ডিমসহ অনেক খাদ্যদ্রব্যই এনেছেন তারা। এমনকি গ্যাসের সিলিন্ডার কিংবা চুলাও এনেছেন আগতরা।

আসার পথে নানা বাধার স্ম্মুখীন হলেও যেন নিমিষেই তা শান্তিতে পরিণত হয়েছে নেতাকর্মীদের। বিভাগের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদের প্রাণ চাঞ্চল্যে উৎসবের আমেজ তৈরি হয়েছে আশপাশের এলাকায়। স্থানীয় নেতাকর্মীরাও আগতদের মেহমানদারি করতে পার করছেন বাড়তি ব্যস্ততা। রাতভর নেতাকর্মীরা সমাবেশস্থল সংলগ্ন এলাকাতেই অবস্থান করবেন বলে জানিয়েছেন নেতাকর্মীরা।

হাঁড়ি, চালের বস্তা, ডিম ও সবজিসহ রান্নার যাবতীয় উপকরণ নিয়ে এসেছেন বগুড়ার গাবতলি পৌর বিএনপির নেতা আল ইমরান বাবু। জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে তো গাড়ি চলাচল বন্ধ। গাড়ি বন্ধের জন্য দুদিন আগেই এসেছি, আর যেহেতু খাইতে হবে তাই রান্নার প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী নিয়ে গণসমাবেশে এসেছি। পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে বলে দাবি এই বিএনপি নেতারও।’

বগুড়ার সোনাতলা থেকে এসেছেন নুরন্নবী বজলু নামের এক বিএনপি নেতা। তিনি বলেন, ‘সোনাতলা থেকে রওনা হওয়ার পর থেকেই পুলিশের বাধা শুরু। নাটোরের বনপাড়া এসে পুলিশ পুরো বাস আটকে দেয়। বাস আর এদিকে আসবে না বলেও জানিয়ে দেন পুলিশ। আমাদের বাস ছাড়াও ২০/২৫টা বাস সেখান থেকে ঘুরে দিয়েছে। পরে নিরুপায় হয়ে যে যার মতো সমাবেশস্থল মুখে ছুটে পড়ে। অনেকেই হেঁটেই রওনা দিয়েছেন।’

রাত ১১টার দিকে সমাবেশস্থলে কথা হয় বগুড়া জেলা মহিলা দলের সহ-সাধারণ সম্পাদিকা মোছা. মুক্তার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘বুধবার দুপুরের পর রিজার্ভ বাস নিয়েই বগুড়া মহিলা দলের আমরা রওনা দিয়েছিলাম। রাজশাহীতে আসার পথে বিভিন্ন জায়গায় বাধার সম্মুখীন হই, পুরো বাস আটকিয়ে দেয়। পরে রাজশাহী থেকে নেতাকর্মীরা গিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্কের পরেও বাসটা ঢুকতেই দেয় নি। পরে চার্জার অটোতে করে রাত ১০টার দিকে গন্তব্যে এসেছি।’

এদিকে, বুধবার রাতে বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আগত নেতাকর্মীদের জায়গা তৈরি করে দিচ্ছিলেন বিএনপির মহানগর কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট শফিকুল হক মিলন। তিনি বলেন, ‘সমাবেশকে বানচাল করার জন্য পুলিশসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা সব রকমের চেষ্টা চালাচ্ছেন। তাদের সব বাধা অতিক্রম করে বিএনপি নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। পুলিশ তাদের কোথাও দাঁড়াতে দিচ্ছে না, রাস্তায় পথে পথে তাদের আটকিয়ে দিচ্ছে। তবে যে কোনোভাবেই হোক সমাবেশ সফল হবেই বলে দাবি এই বিএনপি নেতার।’

সমাবেশে আগত নারীদের খোঁজ নিচ্ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) সংরক্ষিত কাউন্সিলর ও নগর মহিলা দলের সিনিয়র সাধারণ সম্পাদক শামসুন্নাহার। তিনি বলেন, ৩ তারিখের বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে ইতোমধ্যে লোকজন আসতে শুরু করেছেন। বিএনপির পাশাপাশি বগুড়া, সিরাজগঞ্জ, জয়পুরহাট, নাটোর থেকে মেয়েরা এসে অবস্থান নিতে শুরু করেছেন। আসন্ন সমাবেশে সবচেয়ে বেশি মহিলা দলের উপস্থিতি থাকবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

এ বিষয়ে ঘটনাস্থলে দায়িত্বরত আরএমপির গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মাসুদের জানতে চাইলে মন্তব্য করতে রাজি হননি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পুরো বিষয় পর্যবেক্ষণ করছেন, তাই তাদের সঙ্গে কথা বলতে বলেন তিনি।

 

 

 

আরপি/এসআর-০৫



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top