সান্তাহার পৌর শহরের বহুমূখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান
আজমেরী গ্রুপের বিরুদ্ধে আবারও নিম্নমানের ও চারা গজানো গম আমদানীর অভিযোগ
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার সান্তাহার পৌর শহরের বহুমূখী ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আজমেরী গ্রুপের বিরুদ্ধে ভারত থেকে আবারোও নিম্নমানের ও চারা গজানো গম আমদানী করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর আগেও প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ভারত থেকে মেয়াদ উত্তীর্ন ও পোকা খাওয়া গম আমদানির অভিযোগ উঠেছিল।
রেলপথে আনা ভারতীয় এ সকল গম সান্তাহার জংশন ষ্টেশনে খালাস করা শুরু হয়েছে। বুধবার সকালে সরেজমিন সান্তাহার কলেজ রোড এলাকায় গিয়ে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে ।
স্থানীয়ভাবে পাওয়া অভিযোগে জানা গেছে, আজমেরী গ্রুপ নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘ দিন থেকে দেশীয় উৎস থেকে পাওয়া গম দিয়ে আটা, ময়দা, সুজি ও ভুসি উৎপাদন করে আসছে। বর্তমানে দেশীয় গমের দাম চড়া এবং প্রয়োজনীয় পরিমান না মেলার কারণে ভারত থেকে পোকা, নিম্নমানের ও চারা গজানো গম আমদানী করছে প্রতিষ্ঠানটি। বুধবার সকাল থেকে সান্তাহার জংশন স্টেশনের কলেজ রোড এলাকায় খালাস করা হচ্ছে গমগুলো।
সেখানে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায় গম গুলোর অধিকাংশ নিম্নমানের এবং বস্তা ফুটো করে গজিয়েছে গমের চারা। অনেক বস্তার গম পচে বস্তাসহ নষ্ট গেছে। আজমেরী গ্রুপ গত ফেব্রুয়ারি মাসে ভারত থেকে নিয়ে আসে পোকা খাওয়া ও মেয়াদ উত্তীর্ন প্রায় আড়াই হাজার মেট্টিক টন গম। এবারও ৪২টি গম বোঝাই ভারতীয় ওয়াগনে প্রায় আড়াই হাজার মেট্রিক টন গম এসেছে জংশন ষ্টেশন সান্তাহারে। সেগুলো দ্রুত গতিতে খালাস করে ট্রাক যোগে ওই প্রতিষ্ঠানের মিল ও গুদামে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
সান্তাহার শহরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন ব্যবসায়ী বলেন, আমরা আজমেরী গ্রুপের আজমেরী আটা, ময়দা ও সুজি বিক্রয় করে আসছি দীর্ঘ দিন থেকে। কিন্তু শহরের মানুষের মুখে পোকা খাওয়া গম আমদানির কথা শুনে ওই প্রতিষ্ঠানের পন্য বিক্রি করা নিয়ে আমরা আতংকিত।
এ বিষয়ে খালাস এলাকায় থাকা আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের দায়িত্বরত আকরাম হোসেন বলেন, বৃষ্টিতে ভেজার কারনে কিছু গমের বস্তায় চারা গজিয়েছে বাঁকি সব গম ভাল। তিনি আরোও জানান, আজমেরী গ্রুপের মালিক অপরিচিত কারো ফোন ধরেন না বা কথা বলেন না।
আদমদীঘি উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর থেকে পাওয়া গম আমদানী সংক্রান্ত কাগজপত্র অনুসন্ধান করে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই) এবং বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের মান নির্ধারণ সংক্রান্ত কোন কাগজপত্র মেলেনি। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক গোলাম রব্বানী বলেন, আমদানী করা গম বিষয়ে আমাদের কাছে কোন তথ্য নেই,আর এটি বাণিজ্য মন্ত্রনালয়ের বিষয়।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস এন্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউটের (বিএসটিআই) বগুড়া কার্যালয়ের পরিদর্শক জুলফিকার আলী বলেন, গম থেকে উৎপাদিত খাদ্য আমরা পরীক্ষা করে সনদ দেই। গম দেখভালের দায়িত্ব জাতীয় ভোক্ত অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের।
বিষয়টি নিয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষন অধিদপ্তরের বগুড়া কার্যালয়ের সহকারী পরিাচালকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানের মালিক রাকেশ সাহার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেন নি। তিনি আরোও বলেন, দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
আদমদীঘি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সীমা শারমিন বলেন, এটি দেকভালের দায়িত্বপ্রাপ্ত কৃর্তপক্ষকে বিষয়টি অবগত করবেন।
আরপি/এসআর-০৫
বিষয়: বগুড়া আদমদীঘি সান্তাহার আজমেরী গ্রুপ গম
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: