মৌসুম শুরু হলেও খোলেনি চিনিকল, হতাশা প্রকাশ করছেন আখ চাষিরা

মৌসুম শুরু হলেও রাজশাহী চিনিকল (রাচিক) খোলার দিনক্ষণ এখনও ঠিক হয়নি। এতে প্রায় ১৮ হাজার চাষী জমিতে আখ নিয়ে বেকাদায় পড়েছেন। শুধু চাষিরা নয়, বেতন নিয়ে বেকাদায় রয়েছেন ৬২২ শ্রমিক-কর্মচারী। তাদের চার মাসের বেতন বাকি রয়েছে।
শ্রমিক নেতারা জানান, আখ মাড়াই শুরুর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে কিছুদিন আগে চিনিকলের সার্বিক বিষয়ে (যন্ত্রপাতি, জমি, পরিবহন ইত্যাদি) রির্পোট হয়েছে। কেন্দ্র থেকে আভাস আসছে ১৫ টি চিনি কলের মধ্যে নয়টি চালু রেখে, ছয়টি বন্ধ করা হতে পারে। এ নিয়ে চাষিরা তাদের উৎপাদিত আখ বিক্রি নিয়ে এখন দুশ্চিন্তায় আছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত মাড়াই মৌসুমে ১৭ নভেম্বর চিনিকলের আখ মাড়াই মৌসুম শুরু হয়। ২১ নভেম্বর আখ ওজন নেয়া শুরু হয়। আর চলতি বছরের (২০২০-২১) মাড়াই মৌসুমে এখনও চিনিকলের বয়লার স্লো-ফায়ারিং করা হয়নি। ফলে এই মৌসুমের আখ মাড়াই মৌসুম শুরু নিয়ে তৈরি হয়েছে অনিশ্চয়তা।
সূত্র জানায়, রাজশাহী চিনিকল আওতায় প্রায় ১৮ হাজার আখচাষী রয়েছে। এরমধ্যে বেশিরভাগ চাষী চিনিকলের পক্ষ থেকে প্রতিবছর নগদ অর্থসহ সার, কীটনাশক, আখের বীজ ঋণ নিয়ে থাকেন। এমন আখচাষীর সংখ্যা প্রায় ১০ হাজার। এদের মধ্যে দরিদ্র আখচাষীই বেশি। তারা চিনিকল থেকে ঋণগ্রহণ করে ফসল ফলিয়ে থাকেন। ২০২০-২১ মাড়াই মৌসুমকে কেন্দ্র করে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। এছাড়াও প্রায় ৮ হাজার সাধারণ আখচাষী রয়েছেন।
রাজশাহী চিনিকল শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি মজিবুর রহমান জানান, বিগত বছরগুলোতে এ সময়ে চিনিকলে আখ ওজন নেয়া হয়েছে। কিন্তু এই বছর এখনো আখমাড়াই মৌসুম শুরু দিন নির্ধারণ হয়নি।২০১৯-২০ মাড়াই মৌসুমে রাচিক-এ ১ লাখ ২৯ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই হয়েছিল। আর এই মৌসুম অর্থাৎ (২০২০-২১) আখ মাড়াইয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন। চিনিকলের গুদামে এই মুহূর্তে ১৮ শ’ মেট্রিক টন চিনি অবিক্রিত আছে।
আখচাষী মোয়াজ্জেম আলী জানান, প্রতি বছরের নির্দিষ্ট সময় থাকে চিনিকল খোলার। এবছর চিনিকল খোলার বিষয়ে আমাদের (চাষীদের) এখন পর্যন্ত কিছু জানানো হয়নি। সময় মতো চিনি কলে আখ সরবারহ না নিলে পাগালি (ডগায়) ফুল হয়ে যায়। এতে আখের ওজন কমে যায়। এছাড়া আখের জমিতে সাথি ফসলও করা সম্ভব হয় না। ফলে চাষিদের লোকসান হয়।
এদিকে, রাচিক-সহ আরও ১৫টি চিনিকল চালু রাখার দাবিতে আন্দোলন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভা ১৫ টি চিনিকল একসাথে চালু রাখার দাবি জানানো হয়েছে।
আরপি/ এমআই
বিষয়: সুগার মিল চালু রাখার দাবি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: