এসিডির প্রতিবেদন
রাজশাহীর ২৪ শতাংশ শিশু ইন্টারনেটে যৌন হয়রানির শিকার
রাজশাহীর ২৪ শতাংশ শিশু ইন্টারনেটে যৌন হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন। গত সেপ্টেম্বরে রাজশাহীর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্টের (এসিডি) একটি জরিপে এ তথ্য উঠে এসেছে। বৃহস্পতিবার নগরের সাগরপাড়ায় সংস্থার কার্যালয়ে এক মতবিনিময় সভায় জরিপের প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।
জরিপের প্রতিবেদন তুলে ধরেন এসিডির প্রকল্প সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল। তিনি জানান, প্রশ্নমালা প্রণয়ন ও সরাসরি প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী ১০০ জন শিশুর ওপর এ জরিপ করা হয়। তারা সবাই শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ৫০ জন ছেলে এবং ৫০ জন মেয়ে। রাজশাহী নগরীর ও গোদাগাড়ী উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়ন এলাকায় জরিপ কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়।
এতে দেখা যায়, রাজশাহীর ৭১ শতাংশ শিশু কোনো না কোনোভাবে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকেন। এদের মধ্যে ৯৭ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করে মোবাইল ফোনে। বাকি ৩ শতাংশ ব্যবহার করেন কম্পিউটার বা অন্যান্য ডিভাইসে। ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের মধ্যে ২৪ শতাংশ শিশু কোনো না কোনোভাবে ইন্টারনেটে যৌন নির্যাতন বা হয়রানির শিকার হয়েছে। ১০ শতাংশ একাধিকবার একই রকম বিড়ম্বনার শিকার হয়।
জরিপে উঠে এসেছে- মেসেঞ্জারে অশ্লীল ছবি ও ভিডিও পাঠিয়ে, ন্যুড গ্রুপ লাইভে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বা খারাপ ভাষায় সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়ে যৌন হয়রানির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া ব্যক্তিগত ছবি অসৎ উদ্দেশ্যে সম্পাদনা করে ছড়িয়ে দেয়ার ঘটনাও আছে। যারা হয়রানির শিকার হয়েছে তাদের মধ্যে ৪১ শতাংশ বিষয়টি কাউকেই জানাতে পারেননি। আর ৫৯ শতাংশ শিশু কাছের বন্ধুদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে পরামর্শ নিয়েছে।
জরিপে অংশগ্রহণকারী শিশুরা জানিয়েছে, তাদের ইন্টারনেট সাময়িক বা দীর্ঘমেয়াদি বন্ধ করে রেখে প্রতিকার পাওয়ার চেষ্টা করেছেন। কেউ কেউ ফেসবুক ও মেসেঞ্জার ব্লক করে রেখেছেন। আবার কেউ কেউ অভিভাবকের মাধ্যমে যারা হয়রানি করেছে তাদের অভিভাবককে বিষয়টি অবহিত করে তার সন্তানকে এ ধরনের কার্যক্রম থেকে বিরত রাখার জন্য অনুরোধ করেছে। কিন্তু কেউ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের চেষ্টা করেনি।
এসিডির প্রকল্প সমন্বয়ক মোস্তফা কামাল ইন্টারনেট যৌন নির্যাতন ও হয়রানি কমিয়ে আনতে এ বিষয়ে কিছু সুপারিশমালা দেন সংস্থাটি। এর মধ্যে ইন্টারনেটের ব্যবহার সম্পর্কে ব্যাপকহারে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি স্কুলপর্যায়েই এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেয়া, শিশুদের বিষয়টি খোলামেলাভাবে অভিভাবকদের জানানোর মতো পরিবেশ বাড়িতে রাখা এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব সঠিকভাবে পালনের সুপারিশ করা হয়।
মতবিনিময় সভায় এসিডির প্রোগ্রাম অফিসার শাহানা শারমিন উপস্থিত ছিলেন। সভায় শিক্ষক, পুলিশ, সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। তারা এ বিষয়ে নিজেদের মতপ্রকাশ করেন।
আরপি/এসআর
বিষয়: এসিডি শিশু যৌন হয়রানি ইন্টারনেট
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: