রাজশাহী বুধবার, ৮ই মে ২০২৪, ২৬শে বৈশাখ ১৪৩১


বিরোধী দলীয় চিফ হুইপের পদও খোয়াচ্ছেন রাঙ্গা!


প্রকাশিত:
১০ অক্টোবর ২০২২ ০১:৩১

আপডেট:
৮ মে ২০২৪ ০৮:০০

সংগ্রহীত

দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে এর আগে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সব পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তবে সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ পদে টিকে ছিলেন মসিউর রহমান রাঙ্গা। কিন্তু এবার সেই পদও হারাতে হচ্ছে দলের প্রভাবশালী এই নেতাকে। শুধু তাই নয়, জাতীয় পার্টির প্রাথমিক সদস্যপদও কেড়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটির নীতিনির্ধারণী ফোরাম।

জাপার প্রেসিডিয়াম (সভাপতিমণ্ডলী) ও সংসদ সদস্যদের যৌথ সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। গতকাল শনিবার (৮ অক্টোবর) বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা সাড়ে ৩টা পর্যন্ত ঢাকার বনানীতে জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে রুদ্ধদ্বার ওই সভা হয়।

গুরুত্বপূর্ণ ওই সভায় জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য মিলে ৩৮ জন উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে সংসদ সদস্য ছিলেন ২০ জন আর প্রেসিডিয়াম সদস্য ছিলেন ১৮ জন। দলের ৪১ সদস্যের সভাপতিমণ্ডলীতে সংসদ সদস্য ২৪ জন। সংসদ সদস্যদের মধ্যে রওশন এরশাদ, সাদ এরশাদ, সেলিম ওসমান ও পীর ফজলুর রহমান দেশের বাইরে। আর ডাকা হয়নি মসিউর রহমান রাঙ্গাকে।

জানা গেছে, শনিবারের সভায় অনেকটা সর্বসম্মতভাবে রাঙ্গাকে সংসদের বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ ও দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তার ব্যাপারে এমন সিদ্ধান্তে কেউ আপত্তি করেননি।

গত ১৪ সেপ্টেম্বর দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের দলীয় গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতাবলে প্রেসিডিয়াম সদস্যসহ সব পদ থেকে মসিউর রহমান রাঙ্গাকে অব্যাহতি দেন। ইতোমধ্যে এই আদেশ কার্যকর হয়েছে।

দলীয় সিদ্ধান্ত ভঙ্গের অভিযোগের কথা বলা হলেও মূলত রওশনকে বিরোধীদলীয় নেতার পদ থেকে সরিয়ে জাপার চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদেরকে স্থলাভিষিক্ত করার সিদ্ধান্তের প্রক্রিয়ায় রাঙ্গা সম্পৃক্ত ছিলেন। কিন্তু পরে ভিন্ন অবস্থান নেন তিনি। স্পিকারের কাছে এ সংক্রান্ত চিঠি দেওয়া নিয়েও রাঙ্গা গড়িমসি করেন বলে জানা যায়। এরপরই তার বিরুদ্ধে অ্যাকশনে যান দলের চেয়ারম্যান রওশন এরশাদ।

যদিও প্রথমে এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাঙ্গা। কিন্তু একদিন না যেতেই আবার সুর নরম করেন পরিবহন খাতের প্রভাবশালী এই নেতা।

অব্যাহতি দেওয়ার পর রাঙ্গা গণমাধ্যমকে বলেন, ‘উনি (জি এম কাদের) স্বপ্নে দেখে ওইটা (অব্যাহতি) দিয়ে দিয়েছেন। ওনার ইচ্ছেমতো মনের মাধুরী মিশিয়ে যখন যাকে দলে নিয়ে আসবেন, যখন যাকে ইচ্ছা বিতাড়ন করবেন। এইবার আমি এটা চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করলাম। আমি দেখব উনি কোন আইনে এটা করেছেন।’ শুধু তাই নয়, রংপুরে জিএম কাদেরকে নামতে না দেওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন রাঙ্গা।

তবে পরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সংবাদ সম্মেলন করে জাতীয় পার্টির রাজনীতির বাইরে কোনো চিন্তা করছেন না বলে জানান রাঙ্গা। অব্যাহতির আদেশ নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমি আমার অব্যাহতির আদেশে অখুশি নই। তবে আমি আমার বহিষ্কার (অব্যাহতি) আদেশ প্রত্যাহার চাই। চেয়ারম্যানের সঙ্গে যুদ্ধ করে দলে থাকা যায় না।’ তবে তার এমন অবস্থানেও সিদ্ধান্ত বদলায়নি জাতীয় পার্টি। এবার আরও হার্ডলাইনে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সংসদের এই বিরোধী দল।

বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ মসিউর রহমান রাঙ্গা রংপুর-১ আসনে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য, পরিবহন মালিক সমিতির নেতা। তিনি বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি। তিনি একসময় জাতীয় পার্টির মহাসচিবের দায়িত্বও পালন করেছেন।

২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তিনি। জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা এইচ এম এরশাদ জীবিত থাকাকালে ২০১৮ সালে রাঙ্গাকে দলের মহাসচিব করা হয়। ২০২১ সালের অক্টোবরে রাঙ্গাকে সরিয়ে মজিবুর রহমান চুন্নুকে মহাসচিব করা হয়।

আরপি/ এসএইচ ০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top