রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


সারা দেশে করোনা চিকিৎসা

হাসপাতালে শয্যা খালি নমুনা স্বল্পতা ল্যাবে


প্রকাশিত:
১২ আগস্ট ২০২০ ১৩:৩৫

আপডেট:
১২ আগস্ট ২০২০ ১৩:৩৬

ছবি: প্রতীকি

সারা দেশে কোভিড-১৯ ডেডিকেটেড সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে নির্ধারিত ১৫ হাজার ৭৯৭ শয্যার মধ্যে ১১ হাজার ৩৯৮টি খালি পড়ে আছে। অর্থাৎ মোট শয্যার ৭২ দশমিক ১৬ শতাংশই ফাঁকা।
একইভাবে বর্তমানে ৮৩টি আরটি পিসিআর ল্যাবে কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা হলেও নমুনা পরীক্ষা আগের চেয়ে অর্ধেকে নেমে এসেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৪ হাজার ৮২০টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর আগে ২০ থেকে ২১ হাজার পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। সামগ্রিকভাবে দেশে নমুনা পরীক্ষার হার কমেছে, পাশাপাশি খালি হয়ে পড়েছে হাসপাতাল শয্যা।
এ বিষয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলম বলেন, মানুষের ভেতর ভয়টা কমেছে এবং সচেতনতা বেড়েছে বলেই এখন হাসপাতালে ভর্তি রোগীর সংখ্যা তুলনামূলক কম। অনেকেই টেলিমিডিসিন নিয়ে বাড়িতে বসে সুস্থ হয়ে উঠছেন। তিনি বলেন, কারিগরি দিক থেকে আমাদের কোনো স্বল্পতা বা সীমাবদ্ধতা নেই। দেশের বেশির ভাগ জেলায় আরটি-পিসিআর মেশিন পৌঁছানো হয়েছে।
কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে পর্যাপ্ত কিট মজুদ আছে। কিন্তু মানুষ এখন আর আগের মতো নমুনা পরীক্ষা করাতে আসছে না। এক্ষেত্রে নমুনা পরীক্ষার ফি একটি কারণ হতে পারে। তাছাড়া করোনার প্রকোপ প্রাথমিক পর্যায়ে বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসা না দিলেও এখন অনেক হাসপাতাল দিচ্ছে। তাই সচ্ছলদের অনেকেই বেসরকারি হাসপাতালে সেবা নিচ্ছেন।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সারা দেশে ১৪ হাজার ৮২০টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সর্বমোট নমুনা পরীক্ষা হয়েছে ১২ লাখ ৮৭ হাজার ৮৮টি। ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার বিবেচনায় শনাক্তের হার ২০ দশমিক ২২, মোট শনাক্তের হার ২০ দশমিক ৪৬ শতাংশ। শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৫৭ দশমিক ৬৭ শতাংশ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৩২ শতাংশ।
হাসপাতালে রোগী ভর্তির তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ঢাকা বিভাগে মোট কোভিড-শয্যার বিপরীতে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশ রোগী আছে। ফাঁকা পড়ে আছে ৭১ দশমিক ৪৩ শতাংশ শয্যা। ময়মনসিংহে ১৬ দশমিক শূন্য ৯ শতাংশ শয্যায় রোগী এবং ফাঁকা ৮৩ দশমিক ৯১ শতাংশ শয্যা। চট্টগ্রামে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশে রোগী এবং ৬৮ দশমিক ৭০ শতাংশ ফাঁকা। রাজশাহীতে ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ রোগী ভর্তি, ফাঁকা ৮৫ দশমিক ৬১ শতাংশ। রংপুরে ২০ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ ভর্তি, ফাঁকা ৭৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ শয্যা। খুলনায় ভর্তি ৩৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, ফাঁকা ৬৪ দশমিক ৮২ শতাংশ শয্যা। বরিশালে ভর্তি ৪০ দশমিক ১৭ শতাংশ, ফাঁকা ৫৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সিলেটে ৩৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভর্তি, ফাঁকা ৬৫ দশমিক ১৬ শতাংশ শয্যা।
স্বাস্থ্য অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানী ঢাকার ৭ হাজার ৪২ সাধারণ শয্যা এবং ৩০১টি আইসিইউ শয্যার বিপরীতে মোট রোগী ভর্তি আছেন যথাক্রমে ২ হাজার ১১১ এবং ১৯৭ জন। এ হিসাবে সাধারণ শয্যার বিপরীতে ২৯ দশমিক ৯৭ শতাংশ এবং আইসিইউ শয্যার বিপরীতে ৬৫ দশমিক ৪৪ শতাংশে রোগী ভর্তি আছেন। যা মোট শয্যার ৩১ দশমিক ৪৩ শতাংশ। অর্থাৎ বর্তমানে মোট শয্যার ৬৯ দশমিক ৫৭ ভাগ শয্যাই খালি রয়েছে।
রাজধানী ঢাকার কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালে ২১৬ শয্যার মধ্যে ১৩০ জন, পাঁচশ’ শয্যাবিশিষ্ট কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৮৫ শয্যায় ২৩০ জন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল-২ এবং বার্ন ইউনিটের ৯০৭ শয্যায় ৫৯৮ জন, পাঁচশ’ শয্যার মুগদা জেনারেল হাসপাতালে ৩৩০ শয্যায় ১৩৫ জন, রাজারবাগ পুলিশ হাসপাতালে ১ হাজার ২৭ শয্যায় ২২৩ জন, বিএসএমএমইউতে ৩৮৭ শয্যায় ২০০ জন, বাবুবাজারের ঢাকা মহানগর হাসপাতালে ১০৫ শয্যায় সাতজন, মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে ১০ শয্যায় একজন, মিরপুরের লালকুঠি হাসপাতালে ১২৫ শয্যায় ২৭ জন, কমলাপুর রেলওয়ে হাসপাতালের ৩০ শয্যায় একজনও রোগী নেই। ২৫০ শয্যার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতালে ১৫৩ শয্যায় ৮৯ জন, সরকারি কর্মচারী হাসপাতালে ৭২ শয্যায় ২৬ জন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ১৭৪ শয্যার বিপরীতে ১৪০ জন রোগী ভর্তি আছেন। অর্থাৎ সরকারি হাসপাতালে ৩ হাজার ৮২১ শয্যার বিপরীতে ১ হাজার ৮০৬ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এ হিসাবে মোট শয্যার বিপরীতে ৪৭ দশমিক ২৬ শতাংশ রোগী ভর্তি আছেন, ফাঁকা ৫২ দশমিক ৭৪ শতাংশ শয্যা।
এদিকে রাজধানীর হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ৪৩০ শয্যায় ১৩৩ জন, আনোয়ার খান মডার্ন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ২১০ শয্যায় ৬০ জন, বসুন্ধরা কোভিড হাসপাতালে ২০১৩ শয্যায় ৩১ জন, আসগর আলী হাসপাতালে ২০৪ শয্যায় ৭৩ জন, স্কয়ার হাসপাতালে ৯৯ শয্যায় ৬৯ জন, ইবনে সিনায় ৪০ শয্যায় ২০ জন, ইউনাইটেড হাসপাতালে ৮১ শয্যায় ৪১ জন, এভার কেয়ারে ৪২ শয্যায় ৩৬ জন এবং ইমপালস হাসপাতালে ৪০০ শয্যায় ৩৯ জন রোগী ভর্তি আছেন। অর্থাৎ বেসরকারি হাসপাতালের ৩ হাজার ৫১৯ শয্যার বিপরীতে ৫০২ জন রোগী ভর্তি আছেন। এ হিসাবে মোট শয্যার বিপরীতে ১৪ দশমিক ২৬ শতাংশ রোগী ভর্তি আছেন, ফাঁকা ৮৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ শয্যা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঢাকা বিভাগের ১ হাজার ৫৬৭ সাধারণ শয্যা এবং আইসিইউ ৬৪ শয্যার বিপরীতে যথাক্রমে ২৩৯ ও ১৭ জন রোগী ভর্তি আছেন। মোট ১ হাজার ৬৩১ শয্যার বিপরীতে ২৫৬ জন রোগী ভর্তি আছেন। এ হিসাবে মোট শয্যার বিপরীতে ১৫ দশমিক ৬৯ শতাংশ রোগী ভর্তি আছেন। ঢাকা বিভাগের ৮ হাজার ৯৭৪ শয্যার বিপরীতে রোগী আছেন ২ হাজার ৫৬৪ জন। এ হিসাবে মোট শয্যার বিপরীতে ২৮ দশমিক ৫৭ শতাংশে রোগী ভর্তি আছেন। ফাঁকা ৭১ দশমিক ৪৩ শতাংশ শয্যা।

ময়মনসিংহ বিভাগের ৪৯৭ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৮০ জন। এ হিসাবে ১৬ দশমিক ০৯ শতাংশ শয্যায় রোগী আছেন। ফাঁকা ৮৩ দশমিক ৯১ শতাংশ শয্যা।
চট্টগ্রাম বিভাগের ২ হাজার ৫৫৪ শয্যার বিপরীতে রোগী ভর্তি আছেন ৮০০ জন। এ হিসাবে চট্টগ্রামে মোট শয্যার বিপরীতে ৩১ দশমিক ৩২ শতাংশে রোগী ভর্তি আছেন এবং ৬৮ দশমিক ৭০ শতাংশ ফাঁকা।
রাজশাহীতে ১ হাজার ৩২৭ শয্যায় ১৯১ রোগী ভর্তি আছেন। এ হিসাবে মোট শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ১৪ দশমিক ৩৯ শতাংশ রোগী এবং ফাঁকা ৮৫ দশমিক ৬১ শতাংশ শয্যা।
রংপুরে ৭৭৭ শয্যার বিপরীতে ১৫৬ জন ভর্তি আছেন। এ হিসাবে মোট শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ২০ দশমিক ০৭ শতাংশ, ফাঁকা ৭৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ শয্যা।
খুলনায় ৭৭৩ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ২৭২ জন। এ হিসাবে মোট শয্যার বিপরীতে ভর্তি ৩৫ দশমিক ১৮ শতাংশ, ফাঁকা ৬৪ দশমিক ৮২ শতাংশ শয্যা।
বরিশালে ৪৫৩ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ১৮২ জন। এ হিসাবে মোট শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ৪০ দশমিক ১৭ শতাংশ, ফাঁকা ৫৯ দশমিক ৮৩ শতাংশ। সিলেটে ৪৪২ শয্যার বিপরীতে ভর্তি আছেন ১৫৪ জন। এ হিসাবে মোট শয্যার বিপরীতে ৩৪ দশমিক ৮৪ শতাংশ ভর্তি, ফাঁকা ৬৫ দশমিক ১৬ শতাংশ শয্যা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আক্রান্তদের অধিকাংশই বাড়িতে অবস্থান করছেন। খুব জটিলতা দেখা না দিলে তারা হাসপাতালে যাচ্ছেন না। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, করোনা সংক্রমণ মৃদু হওয়ায় অধিকাংশ বাসাবাড়িতেই প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছেন।
এ কারণে হাসপাতালে তাদের ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন পড়ছে না। টেলিমেডিসিন সেবায় সুফল মিলেছে। এ কারণে বাসাবাড়িতে অবস্থান করে টেলিমেডিসিন সেবা গ্রহণ করে অধিকাংশ রোগী সুস্থ হয়ে উঠছেন। এতে করে তাদের হাসপাতালে যাওয়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছন।
সরেজমিন রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গিয়ে একই পরিস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সোমবার যুগান্তরকে বলেন, হাসপাতালটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ১২ জন, সুস্থ হয়েছেন ২০ জন, আর একজনও মারা যাননি। বর্তমানে হাসপাতালে ১৩২ জন করোনায় আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এই কর্মকর্তা আরও জানান, অদ্যাবধি এ হাসপাতালে ৭৯০ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ৬৪৭ জন রোগী সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। আরও মৃত্যুবরণ করেছেন ১১ জন। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য হাসপাতালটিতে মোট ২০০টি বেড রয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সব রোগীকেই ভর্তি করা হয় না। কেবল গুরুতর অসুস্থ রোগীদের ভর্তি করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও পাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটে স্বল্পপরিসরে করোনা আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে এ নিয়ে চিকিৎসক, নার্স ও হাসপাতালটিতে থাকা সাধারণ রোগীদের মধ্যে বিভিন্ন বক্তব্য রয়েছে। সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, হাসপাতালটির ৮, ৯ ও ১৪ তলায় করোনা রোগী ভর্তি রয়েছে। ২৭ জুন থেকে হাসপাতালটিতে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের ভর্তি শুরু হয়।
সাধারণ রোগী, রোগীদের সঙ্গে থাকা স্বজন, চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফদের সংক্রমণ রোধে বিশেষ ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে- তবু আতঙ্ক রয়েছে সবার মধ্যে। করোনা রোগীদের জন্য জরুরি বিভাগের পাশ দিয়ে আন্ডারগ্রাউন্ড হয়ে ২টি লিফট নির্ধারণ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে ইন্সটিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. পার্থ শংকর পাল যুগান্তরকে জানান, ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল থেকেই মূলই এ ইন্সটিটিউটে তিনটি ফ্লোরে করোনা রোগীদের চিকিৎসা করানো হচ্ছে। ঢামেক হাসপাতালের চিকিৎসকরাই এখানে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বলেন, সোমবার ৮ তলায় ৩০ এবং ৯ তলায় ৩০ জন মোট ৬০ জন রোগী ভর্তি রয়েছে। আর ১৪ তলায় ৪২টি কেবিন রাখা হয়েছে। এসব কেবিনে করোনায় আক্রান্তদের চিকিৎসা করানো হচ্ছে। কেবিনে বর্তমানে ২১ জন আক্রান্ত রোগী রয়েছে। গত সপ্তাহে ১ জন আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল একেএম নাসির উদ্দিন জানান, ইন্সটিটিউটটিতে করোনা রোগীদের চিকিৎসা দিতে আমাদের ডাক্তার-নার্সসহ স্টাফরাই দায়িত্ব পালন করছেন। ইন্সটিটিউটের ও কিছু চিকিৎসক কাজ করছেন।
মূলত ঢাকা মেডিকেলের অধীনেই ওখানে করোনা রোগীদের ভর্তি করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। ওয়ার্ড ও কেবিনসহ আনুমানিক একশ’ কোভিড রোগীকে প্রথম পর্যায়ে ভর্তি করে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। একই ভবনে করোনা ও সাধারণ রোগীদের চিকিৎসায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না- হওয়ারও কথা নয়। কারণ ওয়ার্ড ও কেবিন ব্লক বেড়ার মাধ্যমে সম্পূর্ণ আলাদা করে চিকিৎসা প্রদান করা হচ্ছে।
শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও পাস্টিক সার্জারি ইন্সটিটিউটের সমন্বয়কারী ডা. সামন্ত লাল সেন জানান, রাজধানীতে দগ্ধ রোগীদের একমাত্র ভরসা এই বার্ন ইন্সটিটিউট। ৮ম তলার ৮০২ নম্বর ওয়ার্ড ও ৯ম তলার ৯০২ নম্বর ওয়ার্ডেই শুধু করোনা রোগীর চিকিৎসা হচ্ছে। বাকি ওয়ার্ডগুলোতে আগের মতোই দগ্ধ রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। তবে সম্পূর্ণ পৃথকভাবে তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

এদিকে সোমবার সকালে রাজধানীর মুগদা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, করোনায় উপসর্গ নিয়ে আসা লোকজনের ভিড়। লাইনে দাঁড়িয়ে লোকজন টেস্ট করাচ্ছেন। কেউ কেউ আবার ভর্তির জন্য সিরিয়াল অনুযায়ী অপেক্ষা করছেন। কেউ আবার হাসপাতাল চত্বরে ছায়ায় বসে বিশ্রাম নিচ্ছেন।

হাসপাতালটির পরিচালক ডা. আবুল হাশেম শেখ জানিয়েছেন, আগের তুলনায় রোগী ভর্তি হচ্ছে কম। টেস্ট করতে আসা লোকজনেরও ভিড় কম হচ্ছে। ডা. আবুল হাশেম শেখ জানান, ৩৩০টি বেডে করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এখন দিন দিন ভর্তির সংখ্যা কমে আসছে।

এ হাসপাতালে করোনা চিকিৎসা করাতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের চিকিৎসা সামগ্রী রয়েছে। এখানে আগ থেকেই ১০টি আইসিইউ ছিল- নতুন করে আরও ৪টি আইসিইউ বাড়ানো হয়েছে। আগে থেকেই এইচডিইউ ছিল ৫টি, করোনায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য আরও ৫টি বেড বাড়ানো হয়েছে। এখন অনেক রোগীই টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে বাসায় থেকেই চিকিৎসা নিচ্ছেন। সমস্যার কথা জানাতে পারছেন। চিকিৎসা পরামর্শ দিচ্ছেন- কি করতে হবে, ওষুধও লিখে দিচ্ছেন চিকিৎসকরা।
হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, এ হাসপাতালে এক সময় ২০-২৫ জন রোগী মারা যেত। এখন কোনোদিন একজন আবার কোনোদিন কোনো রোগী মারাই যায়নি। ২১ এপ্রিল থেকে হাসপাতালটিতে সোমবার পর্যন্ত ১৯৫০ করোনায় আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছে। সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ১৬০৬ জন। চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ২০৬ জন রোগী।

 

আরপি/ এআর-০১

 

সূত্র: যুগান্তর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top