রাজশাহী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১


বিনা দোষে র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা গর্হিত কাজ


প্রকাশিত:
২৮ মার্চ ২০২২ ২৩:১৮

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ০৪:৩১

ছবি: সংগৃহীত

র‌্যাব ও বাহিনীটির সাবেক-বর্তমান সাত শীর্ষ কর্মকর্তার ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি গর্হিত কাজ বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

সোমবার (২৮ মার্চ) বেলা ১১টায় র‍্যাবের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতার এমন মন্তব্য করেন তিনি। অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হন সরকারপ্রধান।

শেখ হাসিনা বলেন, অপরাধীদের যারা আশ্রয় দেয় তারাই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। আর এর পেছনে দেশের কিছু মানুষ অপপ্রচার চালিয়েছে।

গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে র‍্যাব ও সংস্থাটির সাবেক-বর্তমান সাত কর্মকর্তার ওপর গত বছরের ১০ ডিসেম্বর নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে পৃথকভাবে এই নিষেধাজ্ঞা দেয় যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট (রাজস্ব বিভাগ) ও পররাষ্ট্র দপ্তর।

নিষেধাজ্ঞার আওতায় আসা কর্মকর্তাদের মধ্যে র‍্যাবের সাবেক মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ রয়েছেন। তিনি এখন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি)। বেনজীর আহমেদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি ডিপার্টমেন্টের নিষেধাজ্ঞার আওতায়ও পড়েছেন তিনি।

এছাড়া র‍্যাবের বর্তমান মহাপরিচালক (ডিজি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন, অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) খান মোহাম্মদ আজাদ, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) তোফায়েল মোস্তাফা সরোয়ার, সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. জাহাঙ্গীর আলম ও সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন্স) মো. আনোয়ার লতিফ খানের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মার্কিন ট্রেজারি ডিপার্টমেন্ট।

র‌্যাবের ১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, র‌্যাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়াটা গর্হিত কাজ। অপরাধীদের যারা আশ্রয় দেয় তারাই এই নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে।

অনুষ্ঠানে দেশের উন্নয়নে র‍্যাবের ভূমিকার কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সরকারে এসে বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছি। আজকে আমাদের যে উন্নয়ন এই উন্নয়নে আমি মনে করি আমাদের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানেরসহ র‍্যাবের বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। এতে কোনো সন্দেহ নেই।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিচারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এক বেলা খাবার খেতে পারত না, থাকার মত বাসস্থান ছিল না, চিকিৎসা ব্যবস্থা ছিল না, শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল না, কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা ছিল না, বাংলাদেশের প্রায় ৮০ থেকে ৯০ ভাগ মানুষের এই অবস্থা ছিল। কাজেই অবস্থা পরিবর্তন ঘটিয়ে একটা উন্নত জীবন দেওয়া ছিল তার (বঙ্গবন্ধুর) একমাত্র লক্ষ্য। কিন্তু পঁচাত্তরের পনেরোই আগস্ট ঠিক যে সময় জাতির পিতা হাত ধরে বাংলাদেশে একটা বিধ্বস্ত অর্থনীতি শূন্যের উপর দাঁড়িয়ে যাত্রা শুরু করে, দেশ আর্থসামাজিক ভাবে উন্নয়নের পথে এগিয়ে যাচ্ছে, ঠিক সেসময় ৭৫ এর ১৫ আগস্টের আঘাত আসে। এরপর শুরু হয় অন্ধকার যুগ।

র‍্যাবের অবদানের কথা তুলে ধরে বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, বাংলাদেশের একটা ঘটনা ঘটেছিল হলি আর্টিজানে। এরপর থেকে আর কোনো ঘটনা ঘটতে পারেনি। কারণ র‍্যাবসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আগে সে অপকর্মগুলো ধরে ফেলে। এজন্য আমি তাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। মাদক একটা ব্যাধি। বিশ্বব্যাপী এই মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু হয়েছে। আমি মনে করি র‍্যাব যে মাদকবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে তাতে অনেক কাজ হয়েছে। আমাদের সরকার ইতিমধ্যে মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছে।

শেখ হাসিনা জানান, মাদক বর্তমানে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে আছে এবং মাদক নির্মূলে র‍্যাবের অভিযান নিয়মিত রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন কোন এলাকা থেকে মাদক প্রবেশ করে, সেগুলো আমরা চিহ্নিত করেছি। বিশেষ করে কক্সবাজার। যেখানে আমরা প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিয়েছি। সেই সঙ্গে সেখানে মাদকের ব্যাপকভাবে বেড়ে গেছে। এ অঞ্চলের জন্য আমরা এইটা পূর্ণাঙ্গ ব্যাটেলিয়ান প্রতিষ্ঠা করে দিচ্ছি।

ভেজালবিরোধী অভিযান, মজুদদার, চোরাকারকারি, নারী নির্যাতন এসিড সন্ত্রাস, সুন্দরবন দস্যুমুক্ত করা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ে র‍্যাব কাজ করছে বলেও জানান শেখ হাসিনা। কোভিডকালে দেশবাসীকে সহযোগিতা করতে গিয়ে অনেক র‍্যাব সদস্য মৃত্যুবরণ করেছে বলে জানান সরকারপ্রধান।

 

আরপি/এসআর-০২



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top