রাজশাহী শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল ২০২৪, ৭ই বৈশাখ ১৪৩১


এসিআইয়ের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের অভিযোগ


প্রকাশিত:
৮ জানুয়ারী ২০২১ ২১:৪৯

আপডেট:
১৯ এপ্রিল ২০২৪ ২০:৩৬

ফাইল ছবি

দেশের অন্যতম শীর্ষ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান অ্যাডভান্সড কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রির (এসিআই) বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধান করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত সংস্থা সিআইডি। সম্প্রতি এসিআই’র কয়েকজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সিআইডি কার্যালয়ে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোস্তফা কামাল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, এসিআই’র বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগে অনুসন্ধান চলছে। অনুসন্ধানে পাওয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সিআইডি ও সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত বছরের ৪ অক্টোবর এসিআই বাংলাদেশ লিমিটেডের গাজীপুরস্থ বাসন থানাধীন ভোগড়া বাইপাস এলাকার একটি গুদামে র‌্যাবের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়। এ সময় গুদাম থেকে নিম্নমানের মেয়াদোত্তীর্ণ কেমিক্যাল ব্যবহার করে তৈরি হ্যান্ড স্যানিটাইজার জব্দ করা হয়।

র‌্যাবের পক্ষ থেকে সে সময় জানানো হয়, এসিআই উৎপাদিত স্যাভলন হ্যান্ড স্যানিটাইজারের গায়ে ‘আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল' দিয়ে তৈরি লেখা থাকলেও তাতে আইসোপ্রোপাইল অ্যালকোহল পাওয়া যায়নি। এর পরিবর্তে এসিআই’র কারখানায় বিষাক্ত মিথানল দিয়ে হ্যান্ড স্যানিটাইজার তৈরির প্রমাণ পাওয়া যায়। হ্যান্ড স্যানিটাইজারে মিথানল ব্যবহার নিষিদ্ধ ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এ সময় র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত বিষয়টি আমলে নিয়ে এসিআইকে এক কোটি টাকা জরিমানা করেন। একইসঙ্গে বাজার থেকে স্যাভলন হ্যান্ড স্যানিটাইজার প্রত্যাহার করার নির্দেশও দেন।

সিআইডি কর্মকর্তারা জানান, ভেজাল বা স্বত্ব লঙ্ঘন করে পণ্য উৎপাদন করা মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে দণ্ডনীয় অপরাধ। বিষয়টি মানি লন্ডারিং আইনের তফসিলভুক্ত হওয়ায় অনুসন্ধান শুরু করে সিআইডি। এরই ধারাবাহিকতায় নিয়োগকৃত কর্মকর্তা সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম স্কোয়াডের উপ-পরিদর্শক মোবারক হোসেন চৌধুরী এসিআই’র প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা বা কোম্পানির মনোনীত ব্যক্তিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য চিঠি দেন। গত ১৫ ডিসেম্বর কোম্পানির কয়েকজন কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি।

জানতে চাইলে সিআইডির উপ-পরিদর্শক মোবারক হোসেন চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জিজ্ঞাসাবাদে তাদের কাছে কিছু নথি চাওয়া হয়েছিল। তারা তা দিয়েছেন। বিষয়টি অনুসন্ধান করে দেখছি। এরপর মামলার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

এদিকে করোনাকালে নিম্নমানের জীবনরক্ষাকারী সামগ্রী সরবরাহ করায় এসিআই কোম্পানির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করেছিল সংসদীয় কমিটি। গত বছরের ২৪ ডিসেম্বর সংসদে অনুষ্ঠিত কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি এ বিষয় নিয়েও আলোচনা হয়। পরে কমিটির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়কে এসিআই’র বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়।

মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ অনুসন্ধানের বিষয়ে বক্তব্য জানতে এসিআই’র চিফ ফাইন্যান্স অফিসার (সিএফও) প্রদীপ কর চৌধুরীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি এসএমএস-এ কোম্পানির লিগ্যাল ডিপার্টমেন্টে যোগাযোগের পরামর্শ দেন। কোম্পানির সেক্রেটারি মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমানের কাছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বক্তব্য জানতে চাইলেও তিনি কোনও সাড়া দেননি।

সূত্র: বাংলা ট্রিবিউন

 

 

আরপি/এসআর-০৪



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top