রাজশাহী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১


তিস্তা চুক্তি যেকোন সময় হতে পারে : রাজশাহীতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী


প্রকাশিত:
১৬ নভেম্বর ২০২০ ০১:০১

আপডেট:
১৬ নভেম্বর ২০২০ ০২:২০

রাজশাহী কলেজে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন বলেছেন, ভারতের আভ্যন্তরীন জটিলতা থাকায় তিস্তা চুক্তি এখনও স্বাক্ষর করা সম্ভব হয়নি। তবে যে কোনো সময় তা হতে পারে। এ জন্য আরও কিছুটা সময় প্রয়োজন বলেও মন্ত্রী মন্তব্য করেন।
রোববার সকালে রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর ও ঐতিহ্যবাহী রাজশাহী কলেজ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে এ মন্তব্য করেন তিনি।

এছাড়াও ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সি ও কিছু এনজিওদের চাপে ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর বিলম্বিত হচ্ছে বলে জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় প্রায় ১ লাখ রোহিঙ্গাকে ভাসানচরে স্থানান্তর করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তাদের বেশিরভাগই যেতে ইচ্ছুক। দিনক্ষন এখনো ঠিক না হলেও শুধুমাত্র এনজিও ও ইন্টারন্যাশনাল এজেন্সির চাপে এই স্থানান্তর প্রক্রিয়া বিলম্বিত হচ্ছে।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরো বলেন, রোহিঙ্গারা বর্তমানে যে জায়গায় রয়েছে সেই জায়গাটির পরিমাণ ৬ হাজার ৮০০ একর। পাহাড় ও টিলায় ঘর হলেও জায়াগাটি অনেক কনজাসটেড। কিন্তু সমস্যা হলো অতিবৃষ্টি হলে যেকোনো সময় ধসে রোহিঙ্গা মারা যেতে পারে। তখন সবাই আমাদের দোষ দিবেন। আর বর্তমানে যেখানে আছে বেশিরভাগ মাদক, মানবপাচারসহ নানা ধরনের অপকর্মে লিপ্ত তারা।

মন্ত্রী আরো বলেন, ভাসানচর অনেক সুন্দর জায়গা। আমার তো ইচ্ছা সেখানে রিসোর্ট করা। ভাসানচরে গেলে রোহিঙ্গারা ইকোনমিক অ্যাকটিভিজ করতে পারবে, কৃষি কাজ করতে পারবে, গরু-ছাগল পালন করতেও পারবে। দিনক্ষণ ঠিক না হলেও আমরা রোহিঙ্গাদের সেখানে স্থানান্তর করার চেষ্টা করছি।

আমেরিকার নতুন সরকারের সঙ্গে কুটনৈতিক সম্পর্ক আরো উন্নত হবে আশাবাদ ব্যক্ত করেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, আমেরিকা আমাদের কাছ থেকে যে জিনিসগুলো নেয় তাতে এক্সট্রা আরো ১৫ দশমিক ৬ শতাংশ ট্যারিফ দিতে হয়। গরীব দেশ হওয়া সত্ত্বেও আমরা পৃধিবীর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ট্যারিফ দিই। আর আমেরিকা ফ্রান্স থেকে যে জিনিস কিনে তার ট্যারিফ দিতে হয় মাত্র ০.৫ শতাংশ। অর্থাৎ আমরা ফ্রান্সের চেয়ে ৩৩ গুণ বেশি শুল্ক দিতে হয়।

আমেরিকার নতুন সরকারের কাছে পণ্য রফতানিতে আমেরিকার নতুন সরকারের কাছে ট্যারিফ কমানোর দাবি থাকবে বলে জানান তিনি। মন্ত্রী বলেন, নতুন যে আমেরিকা সরকার আসছেন তারা অত্যন্ত সলিড ও ম্যাচিউরড রাজনীতিবিদ। তাদের সঙ্গে আমরা আগেও কাজ করেছি। তারা হিউম্যান রাইটস ইস্যুতে খুব সোচ্চার। আর রোহিঙ্গা ইস্যুতে হিউম্যান রাইটস ভায়োলেট হয়েছে। সেক্ষেত্রে মনে করি, আমরা আমেরিকার কাছে শক্তিশালী অবস্থান পাবো। তাছাড়া আমাদের একটা বড় ইস্যু ক্লাইমেট চেঞ্জ। ক্লাইমেট চেঞ্জ বিষয়েও এই বাইডেন সরকারের কাছে আমরা যথেষ্ট সহায়তা পাবো।

পরে মন্ত্রী রাজশাহী কলেজের মিলনায়তনে শিক্ষক -কর্মচারীদের সাথে মতবিনিময় করেন। এর আগে তিনি জাতীয় নেতা শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামানের কবরে গিয়ে পুস্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তারপর রাজশাহীর বরেন্দ্র গবেষণা জাদুঘর পরিদর্শন করেন। এরপর রাজশাহী কলেজের বিভিন্ন স্থাপনা পরিদর্শন করেন। পরে ক্যাম্পাসে থাকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন এবং কলেজ অধ্যক্ষ মুহা. হবিবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে একটি গাছের চারা রোপন করেন।

রাজশাহী কলেজ ক্যাম্পাস পরিদর্শন শেষে মুগ্ধতা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, একটি আদর্শ কলেজ হিসেবে যেসব গুন থাকা দরকার তার সবই রয়েছে এ কলেছে। তিনি বলেন এটি বড় একটি বিদ্যাপিঠই নয়, এটি একটি শিক্ষাপার্কও বটে। তিনি বলেন, পাঠ্য বইয়ের বাইরের জ্ঞান অর্জনের জন্য এ কলেজে সবকিছু বিদ্যমান।

 

আরপি/এসকে



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top