রাজশাহী রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


সাংবাদিক না হয়েও পত্রিকার সম্পাদক সাহেদ!


প্রকাশিত:
২৬ জুলাই ২০২০ ১৬:৪১

আপডেট:
২৬ জুলাই ২০২০ ১৬:৪৪

প্রতারক সাহেদ। ফাইল ছবি

জাতীয় প্রতারক সাহেদ রাজনীতিক বা রাজনৈতিক বিশ্লেষক- তা ছাপিয়ে পত্রিকার প্রকাশক ও সম্পাদক বনে গিয়েছিলেন। এখানেই থেমে থাকেননি তিনি, একটি সংখ্যাও প্রকাশ না করে সরকারি বিজ্ঞাপনের বরাদ্দ পেতে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তর বা ডিএফপির মিডিয়া তালিকাভুক্তিও করে নিয়েছিলেন তার পত্রিকাটি।

বহুমাত্রিক প্রতারণায় সিদ্ধহস্ত সাহেদ সম্পাদক হতে সরকারের কাছে অভিজ্ঞতার একটি জাল সনদ জমা দিয়েছিলেন। যা সংশ্লিস্ট কর্তৃপক্ষ খোঁজ নিয়েও দেখেনি। মো: সাহেদ বা সাহেদ করীম। যার বর্তমান পরিচিতি প্রতারক হিসেবেই। অথচ তিনি সরকারি খাতায় একজন পত্রিকা সম্পাদক। যিনি প্রকাশকও।

সম্পাদক হতে হলে কমপক্ষে ১৫ বছরের সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। অথচ সাহেদ কোনদিনই সংবাদিকতার সাথে যুক্ত ছিলেন না। অনুসন্ধানে মেলে দৈনিক নতুন কাগজ নামে একটি পত্রিকাটির মালিকানা পরিবর্তন এবং সম্পাদক হতে আবেদন করেন ২০০৯ সালের ২৭ই মার্চ। সংবাদমাধ্যমে কাজ করেছেন ১৫ বছর, বিধি অনুযায়ী এমন অভিজ্ঞতাপত্রও আবেদনের সাথে যুক্ত করেছিলেন সাহেদ। পত্রিকাটির নাম দৈনিক গনমুক্তি। তাদের সাথে যোগাযোগ করা হলে তারা পরিস্কার জানিয়ে দেয় সাহেদ কখনোই তাদের সাথে যুক্ত ছিলেন না।

সাহেদ সম্পাদক ও প্রকাশক হিসেবে সরকারের তথ্য অধিদপ্তর থেকে পরিচয়পত্রও পান। যদিও তাকে আটকের পর পর সেটি বাতিল করেছে তথ্য অধিদপ্তর।

সাহেদের পত্রিকাটির মিডিয়া তালিকাভুক্তিতে দেখানো হয়েছে পত্রিকাটির দৈনিক প্রচার সংখ্যা ৬ হাজার ৬০। ছাপাখানা শরীয়তপুর প্রিন্টিং প্রেস। কিন্তু প্রেস কর্তৃপক্ষ জানায় একটি কপিও সেখান থেকে ছাপা হয়নি। তবে চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক স ম গোলাম কিবরিয়া বলছেন,বিভিন্ন রকম পর্যবেক্ষণের পরেই দৈনিকটিকে তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।

দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের সংগঠন সম্পাদক পরিষদ বলছে, সাহেদের সম্পাদক হওয়ার ঘটনাকে ধরেই তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। অন্ততপক্ষে সংবাদমধ্যকে যদি রাজনীতিকরন মুক্ত করা যায়, তবেই এধরনের সমস্যার সমাধান সম্ভব। সম্পাদক পরিষদ সভাপতি মাহফুজ আনাম জানান, 'এরকম অনেক ব্যক্তি বা গোষ্ঠি আছে, সাংবাদিকতা যাদের মূখ্য উদ্দেশ্য নয়। জিনিসটা অনেক বেশি পলিটিসাইজড হচ্ছে। বাংলাদেশে সবকিছু পলিটিসাইজড হতে হতে, কোয়ালিটি কন্ট্রোল বলতে তেমন কিছু নেই। এক ধরণের তদারকি হচ্ছে কিন্তু সরকারের যেখানে সত্যি সত্যি নিয়ন্ত্রণ থাকা দরকার সেখানে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই।'

সরকারি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দৈনিক নতুন কাগজে প্রকাশের অনুমতিপত্র বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।

 

আরপি/আআ-১৪



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top