রাজশাহী বুধবার, ২৪শে এপ্রিল ২০২৪, ১২ই বৈশাখ ১৪৩১


‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন’ কঠোরভাবে বাস্তবায়নের দাবি


প্রকাশিত:
৩১ মে ২০২০ ১৮:১৫

আপডেট:
২৪ এপ্রিল ২০২৪ ১৫:৫৮

ফাইল ছবি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের মধ্যে তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী তামাকমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার এই লক্ষ্য অর্জনে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন’ কঠোরভাবে বাস্তবায়নের দাবি জানিয়েছে ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কম্যুনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’। 

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষ্যে শনিবার বিকেলে উন্নয়ন ও মানবাধিকার সংস্থাটির তামাক নিয়ন্ত্রণ প্রকল্প থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ দাবি জানানো হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৮৭ সাল থেকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং এর সহযোগী সংস্থাসমূহ ৩১ মে তারিখকে ‘বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস’ হিসেবে পালন করে আসছে। তারই ধারাবাহিকতায় প্রতিবছর বাংলাদেশেও সরকারি-বেসরকারি উদ্যোগে দিবসটি পালন করা হয়। ‘তামাক কোম্পানির কূটচাল রুখে দাও, তামাক ও নিকোটিন থেকে তরুণদের বাঁচাও’ এই প্রতিবাদ্যকে সামনে রেখে রবিবার (৩১ মে) বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত হবে। আন্তর্জাতিক তামাক নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ‘ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশন অন টোব্যাকো কন্ট্রোল-এফসিটিসি’ প্রণয়ন প্রক্রিয়া এবং ২০০৩ সালে চূড়ান্ত হওয়া ‘এফসিটিসি’-তে বাংলাদেশ প্রথম স্বাক্ষরকারী দেশ। এফসিটিসির আলোকে ২০০৫ সালে ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন’ প্রণয়ন করা হয়, যা ২০১৩ সালে সংশোধন করে সরকার। অথচ প্রতিবছর জাকজমকভাবে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত হলেও দেশে কঠোরভাবে এই তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন বাস্তবায়ন হচ্ছে না।

প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন লঙ্ঘন করে তামাকের বহুজাতিক কোম্পানিগুলোসহ দেশিয় তামাক কোম্পানি প্রতিনিয়ত অবৈধ বিজ্ঞাপন প্রমোশন চালিয়ে যাচ্ছে। কিশোর-তরুণ প্রজন্মকে ধূমপানসহ তামাকের ভয়ানক নেশায় ধাবিত করতে এসব তামাক কোম্পানি প্রতারণামূলক প্রচার-প্রচারণা, তামাক কোম্পানি কর্তৃক পৃষ্ঠপোষকতার নামে বিভ্রান্তিকর প্রচারণামূলক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। যা তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী নিষিদ্ধ। তাই তামাকমুক্ত দিবসে তামাক কোম্পানিগুলোর অবৈধ চটকদার প্রচার-প্রচারণা, বিভ্রান্তিকর প্রচারণামূলক কার্যক্রম বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের দাবি জানায় এসিডি।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, পরিসংখ্যান অনুযায়ী- তামাকজনিত বিভিন্ন রোগে দেশে প্রতিবছর প্রায় ১ লাখ ৬১ হাজার মানুষ অকালেই মারা যাচ্ছে। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত কয়েক লাখ মানুষ হাসপাতালে বেডে কাতরাচ্ছে। বিশ্বব্যাপী অকাল মৃত্যুর ৫টি প্রধান কারণের মধ্যে ২ টিই ফুসফুস ও শ্বাসতন্ত্র সংক্রান্ত অসুস্থতা থেকে হয়ে থাকে। তামাক ব্যবহার এবং পরোক্ষ ধূমপানের ফলে ফুসফুসের যেসমস্ত রোগ হয়ে থাকে তার মধ্যে ফুসফুস ক্যান্সার, ক্রনিক অবস্ট্রাক্টিভ পালমোনারি ডিজিস (সিওপিডি) যক্ষা এবং অ্যাজমা বা হাঁপানি অন্যতম। বিশেষ করে বর্তমানে কোভিড-১৯ (করোনাভাইরাস) এ ধূপমায়ীরাই বেশি আক্রান্ত কিংবা মৃত্যুবরণ করছে বলে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক গবেষণা উঠে এসেছে। এজন্য বাংলাদেশে তামাক নিয়ন্ত্রণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়েছে। এজন্য বিজ্ঞপ্তিতে তামাকচাষ নিয়ন্ত্রণ, তামাকের বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর অবৈধ ব্যবসা বন্ধসহ আসন্ন (২০২০-২০২১) বাজেটে উচ্চহারে তামাকের ওপর করারোপের দাবি জানানো হয়।

উচ্চহারে তামাকের ওপর এই করারোপ হলে প্রায় ৩.২ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপায়ী (১.৩ মিলিয়ন সিগারেট ধূমপায়ী এবং ১.৯ মিলিয়ন বিড়ি ধূমপায়ী) ধূমপান ছেড়ে দিতে উৎসাহিত হবে। সিগারেটের ব্যবহার ১৪% থেকে হ্রাস পেয়ে প্রায় ১২.৫% এবং বিড়ির ব্যবহার ৫% থেকে হ্রাস পেয়ে ৩.৪% হবে। এছাড়া দীর্ঘমেয়াদে ১ মিলিয়ন বর্তমান ধূমপায়ীর অকাল মৃত্যু রোধ সম্ভব হবে এবং ৬ হাজার ৬৮০ কোটি থেকে ১১ হাজার ৯৮০ কোটি টাকার মধ্যে (জিডিপি’র ০.৪ শতাংশ পর্যন্ত) অতিরিক্ত রাজস্ব আয় অর্জিত হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top