রাজশাহী রবিবার, ২৮শে এপ্রিল ২০২৪, ১৬ই বৈশাখ ১৪৩১


সীমিত আকারে কিস্তি আদায় করতে চায় এনজিওগুলো


প্রকাশিত:
৬ মে ২০২০ ০০:১৯

আপডেট:
২৮ এপ্রিল ২০২৪ ২৩:২০

ছবি:সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসে নাকাল অর্থনীতি। গ্রামীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে সীমিত আকারে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি চায় এনজিওগুলো বলে খবর প্রকাশ করেছে ঢাকা টাইমস।

এনজিও সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এনজিও কার্যক্রম শুধু ক্ষুদ্র ঋণে অর্থাৎ কিস্তি আদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তারা শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ সমৃদ্ধির কাজ করে। উদ্যোক্তা তৈরি থেকে শুরু করে একজন ভিক্ষুককেও স্বচ্ছভাবে বাঁচার পথ দেখায়।


জানা যায়, দেশে পায় ৭০ লাখ স্বাস্থ্য পরিদর্শক কর্মরত। একটি ইউনিয়নে ১২ থেকে ২২ জন স্বাস্থ্য পরিদর্শক রয়েছেন। একজন কর্মী মাসে পাঁচশত পরিবারের সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। এসব স্বাস্থ্য পরিদর্শকরা পেপসার, ডায়বেটিক, গর্ভবর্তী মায়ের দেখাশুনা, ব্লাড গ্রুপ নির্ণয় ইত্যাদি করে থাকেন। কিন্তু বর্তমানে এই কাজগুলো করোনাসংকটের কারণে একবোরেই থমকে গেছে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান জানান, ‘সবকিছু যেহেতু সীমিত আকারে খোলা, সেহেতু এনজিও খুলে দেয়া উচিত। সেক্ষেত্রে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার বিষয়টি জোর দিতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে নতুন করে এ ভাইরাস যেন সংক্রমিত না হয়।’

করোনার কারণে যেসব এলাকা রেড জোন ঘোষিত সেসব এলাকায় এনজিও খোলার দরকার নেই উল্লেখ করে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক এই গভর্নর বলেন, ‘সরকার যেহেতু সীমিত আকারে দোকানপাট খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেহেতু ক্ষুদ্র ঋণের কার্যক্রমের প্রয়োজন দেখা দিবে। বিশেষ করে যারা সঞ্চয় জমা করেছে তারা এসময় উত্তোলন করতে চাইবে।’

‘এমতাবস্থায় এনজিওগুলো অনলাইনে সেবা দিতে পারে। কারণ এখন প্রত্যেকেরই প্রায় মোবাইল ব্যাংক হিসাব রয়েছে। গ্রাহক টাকা চাইলে তাদেরকে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দেয়া যেতে পারে। আর উঠোন বৈঠক করতে হলে অবশ্যই স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’

জানা গেছে, এনজিওগুলো দরিদ্রদের মধ্যে এখন পর্যন্ত সরাসরি বা স্থানীয় প্রসাশনের মাধ্যমে ৩০ কোটি টাকার ত্রাণ দিয়েছে। এনজিওগুলোর উদ্বৃত্ত থেকে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ জনকল্যানে ব্যয় করা বাধ্যতামূলক। এছাড়া সারা দেশে প্রায় সাড়ে সাত হাজার বৈকালিক স্কুল রয়েছে। এসব স্কুলে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের পাঠদান করা হয়।

আরোও পড়ুন: গোপনে কিস্তি আদায়ে ম্যানেজারসহ ১৫ কর্মী আটক

সীমিত আকারে এনজিও খোলার অনুমতি দিলে এনজিও কর্মীরা স্থানীয় প্রসাশনকে সহায়তা করতে পারে। এছাড়া করোনা সংকটের মধ্যে অসুস্থ রোগীকে হাতপাতালে পৌঁছে দিতে পারে। তাছাড়া এনজিওগুলো গরিব মানুষকে নিয়ে কাজ করে। তাই সীমিত আকারে হলেও তারা গরিব মানুষের পাশে দাঁড়াতে চায়। অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান স্থানীয় প্রসাশনকে সহায়তা করছে। মাইকিং বা বাড়ি বাড়ি গিয়ে করোনার সচেতনা করা ইত্যাদি করছে।

এনজিও সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র বলছে, গ্রাম অর্থনীতি স্বচল রাখতে এনজিওগুলো প্রতিবছর ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা ঋণ বিতরণ করে থাকে। এর মধ্যে ৯০ হাজার কোটি টাকা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের কাছে থাকে। কিন্তু বর্তমানে দোকানপাট বন্ধ থাকা, বৈশাখী উৎসব না হওয়া এবং রোজার মধ্যেও ব্যবসা করতে না পারায় এ টাকাগুলো স্থির হয়ে আছে।

বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা কেন্দ্র (বিআইডিএস) এর সিনিয়র ফলো ড. নাজনীন আহমেদ বলেন, ‘অর্থনীতির কথা চিন্তা করলে এমুহুর্তে সবকিছু খুলে দেয়া দরকার। কিন্তু আমাদের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই দুর্বল। তাই স্বাস্থ্য ঝুঁকির কথা ভেবে অন্তত চলতি মে মাস পর্যাবেক্ষণ করা উচিত।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমানে স্বাস্থ্য খাতের যে এনজিওগুলো আছে তার মধ্যে বেশকিছু এনজিও স্বাস্থ্য ঝুঁকির বিষয়ে কাজ শুরু করেছে। বাকিরা স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্থানীয় প্রশাসনের সাথে কথা বলে কাজ শুরু করতে পারে। আর ক্ষুদ্র ঋণভিত্তিক এনজিওগুলোর বিষয়ে মে মাসের পরে সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত।’

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top