রাজশাহী শনিবার, ২৭শে এপ্রিল ২০২৪, ১৫ই বৈশাখ ১৪৩১


ভোট দিলে থাকব, না হয় জনগণের কাতারে চলে যাব: প্রধানমন্ত্রী


প্রকাশিত:
৭ জানুয়ারী ২০২৩ ১০:০৪

আপডেট:
২৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:৩৪

ছবি: সংগৃহীত

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, আগামী নির্বাচনে জনগণ ভোট দিলে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা অব্যাহত রাখবে। আর ভোট না দিলে তারা জনগণের কাতারে চলে যাবেন। তবে সরকারি বা বিরোধী দল যেখানেই থাকুন না কেন জনগণের সেবা করে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন তিনি।

শুক্রবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় জাতির ‍উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় ফেরার চার বছর পূর্তি উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন সরকারপ্রধান।

আগে ধারণ করা ভাষণটি বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতারসহ বিভিন্ন বেসরকারি টেলিভিশনে একযোগে সম্প্রচার করা হয়। প্রায় ২০ মিনিটের এই ভাষণে সরকারপ্রধান তিন মেয়াদে নানা উন্নয়নের কথা তুলে ধরেন। বিভিন্ন সূচকে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার চিত্র পেশ করেন। বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় থেকে দেশ কতটা এগিয়ে গেছে সেটাও তুলনামূলক চিত্রে তুলে ধরেন। গত তিন মেয়াদে আওয়ামী লীগ সরকার কী করেছে সেটার বিচারের ভার তিনি জনগণের কাঁধে তুলে দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের দল, জনগণের শান্তিতে বিশ্বাসী, জনগণের শক্তিতে বিশ্বাসী। জনগণ ভোট দিয়ে বিজয়ী করলে আওয়ামী লীগ দেশ গড়ার জাতীয় দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে। যদি বিজয়ী না করে, তাহলে আমরা জনগণের কাতারে চলে যাব। তবে, যেখানেই থাকি, আমরা জনগণের সেবা করে যাব।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু ষড়যন্ত্র করে কেউ যাতে জনগণের অধিকার কেড়ে নিতে না পারে, সেদিকে সকলের সজাগ দৃষ্টি রাখার আহ্বান জানাচ্ছি। একইসঙ্গে, কেউ যাতে আন্দোলনের নামে অরাজকতা সৃষ্টি করে মানুষের জানমালের এবং জীবিকার ক্ষতিসাধন করতে না পারে, সেদিকে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’

এ বছরের শেষে অথবা সামনের বছরের শুরুতেই জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কিন্তু এখন থেকেই স্বাধীনতাবিরোধী, ক্ষমতালোভী, জনগণের সম্পদ লুণ্ঠনকারী আর পরগাছা গোষ্ঠীর সরব তৎপরতা শুরু হয়েছে। এদের লক্ষ্য ঘোলাটে পরিস্থিতি সৃষ্টি করে পেছনের দরজা দিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করা। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা। এরা লুণ্ঠন করা অর্থ দিয়ে দেশে-বিদেশে ভাড়াটে বুদ্ধিজীবী এবং বিবৃতিজীবী নিয়োগ করেছে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে কুৎসা রটিয়ে এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরা মিথ্যে এবং ভুয়া তথ্য দিয়ে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। এদের মিথ্যাচারে বিভ্রান্ত হবেন না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গণতন্ত্র এবং আইনের শাসনে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দলসমূহ এবং প্রতিষ্ঠানের প্রতি অনুরোধ- সাংবিধানিক প্রক্রিয়া ব্যাহত হয় এমন কোনো উদ্ভট ধারণাকে প্রশ্রয় দেবেন না এবং ইন্ধন যোগাবেন না।

আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ এবং প্রতিযোগিতামূলক নির্বাচনের প্রত্যাশা করছি। নির্বাচন কমিশন গঠনের জন্য বাংলাদেশে এই প্রথম একটি আইন পাস করা হয়েছে। সেই আইনের আওতায় সার্চ কমিটি করে নির্বাচন কমিশন গঠন করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনকে আর্থিক স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে। কমিশন স্বাধীনভাবে কাজ করছে এবং ভবিষ্যতেও করবে। সরকার সুষ্ঠু এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানে নির্বাচন কমিশনকে সব ধরনের সহায়তা দিয়ে যাবে।’

যধংরহধ২

টানা তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকাকালে দেশের কী কী উন্নয়ন হয়েছে সেই চিত্র তুলে ধরেন সরকারপ্রধান। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশ এগিয়েছে অনেক। তবে আরও এগিয়ে নিতে হবে। একটি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ অর্জন আমাদের লক্ষ্য। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার পর আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের নানা অনুসঙ্গ ধারণ করে আমরা তরুণদের প্রশিক্ষিত করে তোলার উদ্যোগ নিয়েছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ, স্মার্ট গভার্মেন্ট, স্মার্ট জনগোষ্ঠী, স্মার্ট শিল্প কলকারখানা ও ব্যবসা-বাণিজ্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, বাণিজ্যি, কৃষিসহ সকল ক্ষেত্রে রোবোটিকস, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, ন্যানো টেকনোলজি, জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, জৈব প্রযুক্তি অর্থাৎ ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহার নিশ্চিত করা হবে। সকল ক্ষেত্রে গবেষণার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।’

বঙ্গবন্ধু কন্যা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শোষণ-বঞ্চনামুক্ত একটি সোনার বাংলা গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন। আসুন, স্মার্ট দেশ গড়ার মাধ্যমে একটি সুখী-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তুলে আমরা তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করি। এদেশের সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটাই।’

 

 

আরপি/এসআর-০৯



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top