রাজশাহী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১


শুরু হলো গৌরবময় বিজয়ের মাস


প্রকাশিত:
২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৪

আপডেট:
২ ডিসেম্বর ২০১৯ ০০:১৪

পহেলা ডিসেম্বর। শুরু হল মহান বিজয়ের মাস। ১৯৭১ সালের এই মাসেই অর্জিত হয় আমাদের স্বাধীনতা। দীর্ঘ প্রায় ৯ মাসের সশস্ত্র যুদ্ধ শেষে এ মাসেই আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী।

১৯৭১ সালে পহেলা ডিসেম্বরেই শত্রুমুক্ত হয় বাংলাদেশের অনেক অঞ্চল। বিভিন্ন অঞ্চলকে শত্রুমুক্ত করতে এদিনই চলতে থাকে বিভিন্ন মিশন ও পরিকল্পনা। এদেশের দামাল ছেলেরা মরিয়া হয়ে একের পর এক সফল অপারেশনের মাধ্যমে পাক বাহিনী ও সহযোগী রাজাকারদের মনোবল ভেঙ্গে দিচ্ছিলো। আর বাঙালি অধীর আগ্রহে গুনছিল শেষ প্রহর, কখন আসবে সেই কাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
 
সর্বশেষ এ মাসের ১৬ তারিখে আসে সেই মাহেন্দ্র ক্ষণ। আসে বাঙালির সেই কাঙ্ক্ষিত মহান স্বাধীনতা। পৃথিবীর বুকে জন্ম নেয় রক্তিম সূর্যের একটি লাল সবুজের দেশ, আমাদের বাংলাদেশ।
 
এ মাসের প্রথম দিন থেকে মুক্তিযোদ্ধারা একের পর এক বিভিন্ন জেলায় পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীকে পরাজিত করে অপ্রতিহত গতিতে এগিয়ে আসতে থাকে রাজধানীর দিকে। এর পর ১৬ ডিসেম্বর ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) পাকিস্তানি জেনারেল নিয়াজি ও তার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় চূড়ান্ত বিজয়।

 

একাত্তরের এই দিনে মুক্তি বাহিনী সিলেটের শমসের নগরে আক্রমণ চালিয়ে টেংরাটিলা ও দোয়ারাবাজার শত্রুমুক্ত করে। মুক্তিবাহিনীর অপারেশনের মুখে পাকিস্তানিরা সিলেটের গ্যরা, আলীরগাঁও ও পিরিজপুর থেকেও ব্যারাক গুটিয়ে নেয়। একই দিনে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী তার পার্লামেন্ট বক্তৃতায় উপমহাদেশে শান্তি প্রতিষ্ঠার স্বার্থে বাংলাদেশ থেকে পাকিস্তানি সৈন্য সরিয়ে নেওয়ার আহ্বান জানান ইয়াহিয়া খানের প্রতি।

 
এটি স্পষ্ট হয়ে ওঠে, বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে ৯ মাস আগে যে মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছে, সেই যুদ্ধে বিজয় এখন সুনিশ্চিত। যে ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে লাখ লাখ মানুষের সামনে দাঁড়িয়ে তিনি ৭ মার্চ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’ বলে স্বাধীনতার ডাক দেন, সেই উদ্যানেই ১৬ ডিসেম্বর পরাজয়ের দলিলে স্বাক্ষর করেন পাকিস্তানের জেনারেল নিয়াজি। ইতিহাসের নতুন এক মোড়ে এসে দাঁড়ায় হাজার বছরের বাঙালি জাতিসত্তা। ডিসেম্বরে তাই বাঙালি ও বাংলাদেশের গৌরব আর অহঙ্কারের মাস।

 

মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হন, ধর্ষিত হন চার লাখ নারী- যাদের বঙ্গবন্ধু স্বীকৃতি দেন নিজের কন্যা হিসেবে, অভিহিত করেন ‘বীরাঙ্গনা’ হিসেবে। ২০১৫ সাল থেকে তাদের মুক্তিযোদ্ধার মর্যাদা দেওয়ার কার্যক্রম শুরু করেছে বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার।



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top