রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৩শে এপ্রিল ২০২৪, ১১ই বৈশাখ ১৪৩১


‘মিয়ানমার আর আকাশসীমা লঙ্ঘন করবে না’


প্রকাশিত:
৩০ নভেম্বর ২০২২ ০৫:৩০

আপডেট:
২৩ এপ্রিল ২০২৪ ১৮:০০

ফাইল ছবি

সাম্প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকবার দেশের আকাশসীমা লঙ্ঘন করলেও মিয়ানমার আর এমনটা করবে না বলে বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছে। বারবার সীমান্ত লঙ্ঘনের ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে মিয়ানমারের সীমান্তরক্ষী বাহিনীকে সতর্ক করার পর তারা বিজিবিকে এই আশ্বাস দিয়েছে।

মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে রাজধানীর পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দফতরে অষ্টম সীমান্ত সম্মেলন নিয়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা জানিয়েছেন বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ।

বিজিবি মহাপরিচালক জানান, মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিপি) কথা দিয়েছে, ভবিষ্যতে আর সীমালঙ্ঘন করবে না। পাশাপাশি মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে অবৈধভাবে ইয়াবা ও ক্রিস্টাল মেথ আইসসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক পাচাররোধে দেশটির জাতীয় মাদক নিয়ন্ত্রণ নীতি অনুসরণ করে তারা মাদকবিরোধী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করবে বলেও জানিয়েছে।

মেজর জেনারেল শাকিল আহমেদ বলেন, আকাশসীমা লঙ্ঘনের বিষয়টি আমরা তাদের কাছে গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করেছি। আমরা তাদের বলেছি, সীমান্তবর্তী আকাশপথে যদি ড্রোন অথবা হেলিকপ্টার ওড়ানোর প্রয়োজন হয়, তাহলে অবশ্যই সেটি আগাম আমাদের জানাতে হবে। তাহলে আমরা ওইদিন লক্ষ্য রাখতে পারি আকাশপথে সীমালঙ্ঘন হচ্ছে কি-না। মিয়ানমারের পক্ষ থেকে আমাদের আশ্বস্ত করা হয়েছে, ভবিষ্যতে আর আকাশসীমা লঙ্ঘন হবে না।

বিজিবির শীর্ষ এই কর্মকর্তা জানান, সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণের ঘটনায় বেশকিছু হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এতে বাংলাদেশের পাশাপাশি তাদের নাগরিকও হতাহত হয়েছে। এছাড়া সীমান্তে কাঁটাতারে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়েছে মিয়ানমার। এই কাঁটাতারের সংস্পর্শে এলে দুই দেশের নাগরিক হতাহতের শিকার হতে পারে। এর জবাবে তারা জানিয়েছে, এই বিষয়টি দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী যৌথভাবে পর্যবেক্ষণ করবে।

অষ্টম সীমান্ত সম্মেলনে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার সীমান্তে বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী বা সন্ত্রাসী সংগঠনের বিরুদ্ধে একযোগে কাজ করার বিষয়ে উভয় দেশ একমত হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে বাংলাদেশ ‘জিরো টলারেন্স’ নীতির বিষয়টিতে গুরুত্বারোপ করে। পরে অবৈধ অনুপ্রবেশ বা সীমান্ত পারাপার রোধে কার্যকরভাবে একে-অপরকে সহযোগিতা করতে উভয় দেশ সম্মত হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি মহাপরিচালক আরও জানান, সম্মেলনে প্রতি দুই মাসে একবার ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ের সমন্বয় সভা/পতাকা বৈঠক ছাড়াও বছরে দুইবার রিজিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে এবং দুইবার বিজিবি ও বিজিপির (এমপিএফ) মধ্যে শীর্ষ পর্যায়ের সীমান্ত সম্মেলনের আয়োজন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এছাড়া প্রতিমাসে/পরিস্থিতি বিবেচনায় বিওপি/কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ের বৈঠক, সীমান্তের দুই পাশে আন্তঃসীমান্ত অপরাধী চক্র/সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর অবস্থান পরিলক্ষিত হলে তাদের অপতৎপরতা রোধকল্পে তাৎক্ষণিক তথ্য আদান-প্রদান এবং উভয় পক্ষ ব্যাটালিয়ন পর্যায়ে পতাকা বৈঠক/এডহক বৈঠকের মাধ্যমে নিজ নিজ দেশের প্রচলিত আইন অনুসরণ করে দুই দেশের কারাগারে আটক নাগরিকদের কারাবাসের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আনুষ্ঠানিকভাবে হস্তান্তর ও গ্রহণের বিষয়েও বাংলাদেশ ও মিয়ানমার একমত হয়েছে।

এ দিন সম্মেলনের বাইরেও বিজিবি মহাপরিচালক মিয়ানমারের উপ-স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং ইউনিয়ন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলাদাভাবে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি বলপূর্বক বাস্তুচ্যূত মিয়ানমার নাগরিকদের দ্রুত প্রত্যাবাসনের পাশাপাশি দুই বাহিনীর পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় এবং অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন।

 

 

আরপি/এসআর-০৭


বিষয়: বিজিবি


আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top