রাজশাহী মঙ্গলবার, ২৬শে আগস্ট ২০২৫, ১২ই ভাদ্র ১৪৩২


দেশে ১০ বছরে ২৬ হাজার ৭৫২ কর্মীর মরদেহ ফেরত


প্রকাশিত:
২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৭:০৫

আপডেট:
২৬ নভেম্বর ২০১৯ ০৮:৪৭

ফাইল ছবি

২০১০ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গত ১০ বছরে বিদেশ থেকে দেশে ফিরেছে ২৬ হাজার ৭৫২ কর্মীর মরদেহ। ‘নারী শ্রমিক কণ্ঠ’ নামক একটি সংগঠন এ তথ্য জানিয়েছে।

অভিবাসী নারী শ্রমিকের নিরাপদ বিদেশ গমন ও নিরাপদ কর্মস্থল নিশ্চিত করার দাবিতে  সোমবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরেন কর্মজীবী নারী’র পরিচালক রাহেলা রব্বানী।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে প্রলোভনের শিকার হওয়া নারী অভিবাসী শ্রমিকরা প্রতিদিনই শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। কিন্তু এ বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট অপরাপর মন্ত্রণালয় এবং সরকারের কোনো পর্যায় থেকে কোনো ধরনের পদক্ষেপ দৃশ্যমান নয়। বরং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করে ওই সব দেশে কর্মরত নারী শ্রমিকরা তাদের অবস্থা তুলে ধরেও রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ভূমিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। ফলে নারী শ্রমিকদের মৃত্যুর মিছিল শুরু হয়েছে। প্রায় প্রতিদিনই দেশে ফিরছে অভিবাসী নারী শ্রমিকের মরদেহ।

রাহেলা রব্বানী আরও বলেন, এসব ঘটনায় সংবাদ মাধ্যমে একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশ সরকার ও তার মন্ত্রণালয় কোনো দায়িত্বশীল পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বরং নারী শ্রমিকদের প্রতি দায়িত্বহীন ও অবমাননাকর বক্তব্য-বিবৃতি প্রদান করে নারীর মানবিক সত্তাকে অপমান করা হয়েছে, যা রীতিমতো বিস্ময়কর!

এ সময় নারী অভিবাসী শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় সংগঠনটি ১৩টি দাবি উত্থাপন করে। তাদের দাবিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে— অভিবাসী শ্রমিক প্রেরণের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নীতি অনুযায়ী সকল প্রকার সমঝোতা স্মারক, চুক্তি মেনে অভিবাসন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে; নারী অভিবাসী শ্রমিকদের শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতন প্রতিরোধে বাংলাদেশ সরকার ও সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্রের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদন ও বাস্তবায়নে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে; প্রবাসে কর্মরত নারী শ্রমিকদের নিয়োগকর্তার নাম, কর্মস্থলের ঠিকানাসহ নারীশ্রমিকের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার তথ্য প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে প্রকাশ ও অভিবাসী শ্রমিকের পরিবার তথ্য পেতে হেল্প ডেস্ক চালু করা; প্রলোভন দেখানো রিক্রুটিং এজেন্টের লাইসেন্স বাতিলসহ তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ করা; অভিবাসী শ্রমিকদের মানবিক মর্যাদা ও অধিকার সুরক্ষায় ঘোষিত আন্তজার্তিক মানদণ্ড বাস্তবায়ন করা; অভিবাসী শ্রমিকরা যেকোনো ধরনের বিরূপ পরিস্থিতির শিকার হলে সঙ্গে সঙ্গে বাংলাদেশি দূতাবাস ও কনস্যুলেটের মাধ্যমে তাৎক্ষণিক উদ্ধার, আবাসন, খাদ্যসহ আইনি সহায়তা প্রদান করা; সরাসরি সরকারিভাবে নারী অভিবাসী শ্রমিক প্রেরণ নিশ্চিত করা; নারী শ্রমিকদের শারীরিক, মানসিক ও যৌন নির্যাতনের তথ্য জানার পরও দূতাবাসসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি, তাদের প্রত্যেককে বিচারের আওতায় আনা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন নারী শ্রমিক জোটের সভাপতি উম্মে হাসান ঝলমল, প্রগতিশীল গার্মেন্টস শ্রমিক ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কামরুন নাহার প্রমুখ।

 

আরপি/আআ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top