রাজশাহী বৃহঃস্পতিবার, ২৫শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


রাজধানীতে আজ প্রাথমিক শিক্ষকদের মহাসমাবেশ


প্রকাশিত:
২৩ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:৫২

আপডেট:
২৫ এপ্রিল ২০২৪ ১১:৫৪

ছবি: সংগৃহীত

আজ বুধবার ঢাকায় মহাসমাবেশ করবেন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। সকাল ১১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ও প্রধান শিক্ষকদের মোট ১৪টি সংগঠন মিলে গঠিত হওয়া 'বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদ'-এর ডাকে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে। ৮ মেপ্টেম্বর থেকে বেতন বৈষম্য নিরসনের এক দফা দাবিতে এ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা।

আয়োজকরা জানিয়েছেন, দেশের ৫৬ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাড়ে তিন লাখ শিক্ষকের মধ্যে অন্তত এক লাখ শিক্ষককে এ সমাবেশে হাজির করা তাদের টার্গেট।

ঐক্য পরিষদের একাধিক নেতা সাংবাদিকদের জানান, প্রাথমিক শিক্ষকদের মর্যাদা নিশ্চিত করা ও বেতন বৈষম্য নিরসন করা না হলে তারা আগামী মাসে অনুষ্ঠিতব্য প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা-২০১৯ বর্জনের ডাক দিতে পারেন। আজকের মহাসমাবেশে শিক্ষকদের চাওয়া বুঝে তারপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। পরীক্ষা বর্জনের সিদ্ধান্ত হলে মহাসমাবেশ থেকেই তা শিক্ষকদের জানিয়ে দেওয়া হবে।

এদিকে, মহাসমাবেশকে ঘিরে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর রাজধানী ঢাকা ও ঢাকার বাইরে একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও শিক্ষক নেতাদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে। এতে সারাদেশের শিক্ষকদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ঠিক কতজনকে শোকজ করা হয়েছে, তার সংখ্যা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে নানা সূত্র থেকে জানা গেছে, এ সংখ্যা ২৫ জনের কম নয়।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আন্দোলনের প্রধান মুখপাত্র ও রাজধানীর দক্ষিণখান থানা এলাকার ফায়দাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বদরুল আলমকে শোকজ করা হয়েছে। তিনি শিক্ষক সমিতির সভাপতি। গেন্ডারিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষককেও একই কারণে শোকজ করা হয়েছে। এতে আছেন পুরোনো ঢাকার সুরিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১৫ জন শিক্ষকও।

গতকাল মঙ্গলবার দেখা গেছে, মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে প্রাথমিক শিক্ষকদের মধ্যে টান টান উত্তেজনা বিরাজ করছে। কর্তৃপক্ষের হুমকির পরও লাখো শিক্ষক মহাসমাবেশে জড়ো হচ্ছেন। প্রাথমিক শিক্ষক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আনিসুর রহমান বলেন, 'যে কোনো কিছুর বিনিময়ে শিক্ষকরা মহাসমাবেশ সফল করবেন।'

ঐক্য পরিষদের সদস্য সচিব মোহাম্মদ শামছুদ্দীন মাসুদ বলেন, 'আজকের মহাসমাবেশ করার পর শিক্ষকদের দাবির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হবে।' ঐক্য পরিষদের প্রধান মুখপাত্র মো. বদরুল আলম বলেন, 'আমাদের ১ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চলতে থাকবে।' প্রধান উপদেষ্টা আনোয়ারুল হক তোতা বলেন, 'পরিপত্রের ভয়কে জয় করে শিক্ষকরা শহীদ মিনারে উপস্থিত হবেন।' প্রধান সমন্বয়ক আতিকুর রহমান বলেন, 'প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস ছাড়া আমরা কর্মসূচি প্রত্যাহার করব না।'

জানা গেছে, প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৈষম্য নিরসন করতে গত ২৯ জুলাই বেতন বাড়ানোর প্রস্তাব অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ৮ সেপ্টেম্বর তা নাকচ করে দেয় অর্থ মন্ত্রণালয়। এর পর সারাদেশের শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ হয়ে এ আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

এদিকে, গত রাতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন শিক্ষকরা। প্রতিমন্ত্রী রংপুর যাওয়ার পথে কমলাপুর রেলস্টেশনের ভিআইপি লাউঞ্জে শিক্ষকদের ৩০ নেতার সঙ্গে এ বৈঠক করেন। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠকের পরও মহাসমাবেশের সিদ্ধান্ত হয়। পুলিশ সমাবেশে বাধা দেবে না। তবে সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করতে হবে। শিক্ষকদের সংখ্যা বেশি হলে প্রয়োজনে তারা রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেও অবস্থান নিতে পারবেন। প্রতিমন্ত্রী নিজেও মোবাইল ফোনের মাধ্যমে শিক্ষকদের এ সমাবেশে বক্তব্য দেবেন। আলোচনায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, আগামী এক মাসের মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষক নেতাদের নিয়ে বৈঠক করবেন প্রতিমন্ত্রী। সেখানে প্রধান শিক্ষকদের দশম গ্রেডে আর সহকারী শিক্ষকদের ১১তম গ্রেডে বেতনের দাবির বিষয়ে আলোচনা করবেন।

 

আরপি/এমএইচ



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top