রাজশাহী শুক্রবার, ২৯শে মার্চ ২০২৪, ১৬ই চৈত্র ১৪৩০


ভ্যাপসা গরমে সুস্থ থাকতে করণীয়


প্রকাশিত:
৮ আগস্ট ২০২১ ১৯:০৮

আপডেট:
২৯ মার্চ ২০২৪ ১৮:২৩

ছবি: সংগৃহীত

শ্রাবণের শেষভাগে ভাদ্রের ভ্যাপসা গরমে নাজেহাল নাগরিক জীবন। অতিরিক্ত গরমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। বৃষ্টি হচ্ছে কিন্তু গরম কমছে না। বরং বৃষ্টির পর গরম যেনো আরো বেড়ে যায়। এতে সুস্থ সবলরাই ঘেমেনেয়ে ক্লান্ত হয়ে পড়ছেন। বিশেষ করে শ্রমজীবী, রান্নার কাজে নিয়োজিত গৃহিণীরা, গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক নারী-পুরুষ এবং বিভিন্ন রোগে আক্রন্তদের অবস্থা আরো নাজুক। ভ্যাপসা গরমে কী কী অসুস্থতা হতে পারে জেনে নিন-

ভ্যাপসা গরমে কী কী অসুস্থতা হতে পারে

* এমন গরমে অতিরিক্ত কাজ, খেলা বা ব্যায়াম করলে পেশিতে তীব্র ব্যথা হতে পারে। একে বলে হিট ক্র্যাম্প। ঘাম ও তীব্র রোদের কারণে র‌্যাশ হতে পারে চামড়ায়।

* ভ্যাপসা গরমে খুব বেশি ঘাম হয়। অনেকেই দুর্বল ও ক্লান্ত হয়ে পড়েন। যারা অসুস্থ তাদের শ্বাস দ্রুত হতে থাকে। এমন অবস্থায় ততক্ষনাৎ ব্যবস্থা না নিলে হিট স্ট্রোক হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।

* হিট সিনকোপ সমস্যায় অসুস্থ রোগীরা হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন। আবার অনেক সময় হিট স্ট্রোকে তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা কম থাকায় হঠাৎ শরীরের তাপ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রির ওপরও হতে পারে। এটা কিন্তু জ্বর নয়। এর সঙ্গে ঘাম হয় না হলে শরীরের তাপ বেরোতে পারে না। এর ফলে বিপদ হতে পারে।

ভ্যাপসা গরমে সুস্থ থাকবেন যেভাবে

* রান্নাবান্না শেষ করেই এসি চালিয়ে বিশ্রাম নিলে কিংবা বাইরের গরম অবস্থা থেকে এসে ঘাম না শুকিয়ে ঠাণ্ডা পানি খেলে বা ঠাণ্ডা ঘরে বিশ্রাম নিলে জ্বর, সর্দি-কাশি হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল হয়।

* সারাদিন খুব ভ্যাপসা গরমের পর সন্ধ্যার দিকে বৃষ্টি হলে এলে হঠাৎ তাপমাত্রা কমে যায়। এ সময়টাতে অ্যাজমা রোগীদের নিশ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে। তাপমাত্রার ওঠা-নামায় অ্যাজমা রোগীদের অ্যাটাক হতে পারে।

* এ সমসয়টাতে যারা সুস্থ আছেন তাদের প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ লিটার পানি পান করা উচিত। প্রসাবের রঙ হলুদ হয়ে গেলে বা প্রসাবের পরিমাণ কমে গেলে পানি খাওয়ার পরিমাণ বাড়িয়ে দিন। আর যদি পানি খাওয়ায় বিধি-নিষেধ থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

* রোদে বের হলে সানস্ক্রিন লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন। ছাতা, টুপি, সানগ্লাস ও হালকা সুতির পোশাক পরুন। এসব আপনাকে গরম থেকে সুরক্ষা দেবে।

* ডিহাইড্রেশন এড়াতে চা-কফি ও কোমল পানীয় খাওয়া কমিয়ে দিন। এ সময় ভাত, ডাল, সবজি, মাছ খাওয়াই ভালো। হালকা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এবং পেট একটু খালি রাখুন। ভরপেট খেয়ে রোদে বের হবেন না। এবং খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে শুয়েও পড়বেন না।

* ভ্যাপসা গরমের তীব্র রোদে বাইরে যাওয়ার আগে আগে এক গ্লাস পানি খেয়ে নেবেন। ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা না থাকলে লবণ ও চিনির পানি বা ওরস্যালাইন খেতে পারেন। এছাড়া ডাবের পানি, আম, তরমুজ, লেবুর শরবতও খেতে পারেন। এগুলো শরীরের প্রয়োজনীয় পানি ও লবণের ঘাটতি পূরণ করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

* রোদে বা গরমের মধ্যে অনেকক্ষণ টানা কাজ করবেন না। কাজের ফাঁকে ঠাণ্ডা খোলা স্থানে বিশ্রাম নিয়ে আবার কাজে যোগ দিন। দেখবেন শক্তি পাচ্ছেন। আর হঠাৎ পেশিতে ব্যথা হলে ব্যথা না কমা পর্যন্ত বিশ্রাম নিন। এ সময় ওরস্যালাইনও খেতে পারেন।

* হিট এক্সারশন হলে দ্রুত গরম স্থান থেকে সরে গিয়ে বিশ্রাম নিন। এ সময়টাতে ওরস্যালাইন বা ডাবের পানি বেশ উপকার দেয়। ঘাম শুকানোর পর সম্ভব হলে হাত-মুখ ধুয়ে ফ্যান বা এসি চালিয়ে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন। হাঁপানি রোগীরা অবস্থা বুঝে এ সময় ইনহেলারের একটা পাফ নিতে পারেন। যদি মনে হয় কষ্ট শুরু হতে পারে তাহলে বিলম্ব না করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

* ভ্যাপসা গরমে কেউ অজ্ঞান হয়ে গেলে খুব তাড়াতাড়ি তাকে গরম স্থান থেকে সরিয়ে ঠাণ্ডা পানি দিয়ে বার বার শরীর মুছে দিন। এবং মাথা ধুয়ে দিন। ফ্যান বা এসি চালিয়ে দিবেন। স্বাভাবিক ঠাণ্ডা পানিতে গোসলও করাতে পারেন। পানি শূন্যতা পূরণের জন্য ডাবের পানি কিংবা ওরস্যালাইন খাওয়ান। তার পরেও যদি জটিলতা না কমে, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।

 

 

আরপি/এসআর-০৮



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top