রাজশাহী সোমবার, ২৯শে এপ্রিল ২০২৪, ১৭ই বৈশাখ ১৪৩১


উত্তাল হংকং: এবার মুখোশ আইনবিরোধী বিক্ষোভ


প্রকাশিত:
৭ অক্টোবর ২০১৯ ১৯:৫১

আপডেট:
২৯ এপ্রিল ২০২৪ ১৭:২৮

মুখোশ আইনবিরোধী বিক্ষোভ

হংকংয়ের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ নতুন মোড় নিয়েছে। গণতন্ত্রপন্থীরা এবার মুখোশ নিষিদ্ধের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে। গড়ে তুলেছে তীব্র আন্দোলন।

 

ওয়ানচাই অঞ্চলে বিক্ষোভ শুরু হলে কয়েকটি স্থানে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের সংঘর্ষ বাধে। টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। ওই এলাকার কয়েকটি সরকারি অফিস ভাংচুর করে উত্তেজিত ও ক্ষুব্ধ একটি দল।

এ ঘটনায় বিক্ষোভকারীদের অনেককেই ধাওয়া দিয়ে লাঠিপেটা করে সশস্ত্র দাঙ্গা পুলিশ। বেশ কয়েকজনকে আটকও করা হয়েছে। এদিন এক ট্যাক্সিচালককে গণপিটুনি দেয় বিক্ষোভকারীরা।

তার গাড়িটিও ভেঙে গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে। বিক্ষোভের ভিড়ের মধ্যে গাড়ি উঠিয়ে দেয় ওই চালক। এতে আহত হন তিন নারী বিক্ষোভকারী। খবর এএফপি ও বিবিসির।

 

তিন মাস ধরে চলা আন্দোলনের শুরু থেকেই মুখোশ ব্যবহার করছে বিক্ষোভকারীরা। কখনও পরিচয় লুকানোর জন্য, আবার কখনও টিয়ার গ্যাস ও জলকামান থেকে বাঁচতে।

কিন্তু চলতি সপ্তাহের শুরুতে ‘অবৈধ’ এবং ‘অননুমোদিত’ কাজে মুখোশ ব্যবহার নিষিদ্ধের ঘোষণা দেন হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম। মুখোশ নিষিদ্ধ করে শনিবার থেকে নতুন আইন কার্যকর হয়েছে।

আইন অমান্যকারীর এক বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং ২৫ হাজার হংকং ডলার জরিমানা হতে পারে। মুখোশে নিষেধাজ্ঞার বিতর্কিত ঔনিবেশিক আইনটির জরুরি স্থগিতাদেশ চেয়ে আদালতে মামলা করেন গণতন্ত্রপন্থী আইনপ্রণেতারা। কিন্তু রোববার তাদের সেই মামলা বাতিল করে নিষেধাজ্ঞা বহাল রাখার পক্ষে রায় দিয়েছেন এক সিনিয়র বিচারক।

 

শুক্রবার ক্যারি লামের মুখোশ নিষিদ্ধের ঘোষণার পরই মুখোশ পরেই রাস্তায় একটি ছোটখাটো বিক্ষোভ হয়েছিল। শনিবার সে বিক্ষোভে শামিল হয় আরও বেশি মানুষ। রোববার তা আরও বড় আকার ধারণ করে।

বিচারকের পক্ষপাতমূলক রায়ের পরই রাজপথে নেমে আসে লাখ লাখ মানুষ। বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেয়া নীল মুখোশধারী এক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী বলেন, মুখোশবিরোধী ওই আইন কেবল আমাদের ক্ষোভই বাড়িয়েছে।

আরও অনেক মানুষ এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামবে। আমরা নতুন আইনকে ভয় পাই না। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। আমাদের অধিকারের জন্য লড়ব। আমি মুখোশ পরেছি সরকারকে এ বার্তাই দিতে যে তাদের দমনপীড়নকে আমি ভয় করি না।’

হংকং পুলিশের ভাষ্য, বিক্ষোভকারীরা বেআইনিভাবে সমাবেশে যোগ দিচ্ছে, প্রধান প্রধান সড়ক বন্ধ করে দিচ্ছে। ফলে বিক্ষোভকারীরা দ্রুতই ঘরে না ফিরলে তাদের ছত্রভঙ্গ করার অভিযান শিগগিরই চালানো হবে।

 

পর্যবেক্ষকরা বলছেন, নতুন আইনটি খুবই বিতর্কিত এবং এটি কার্যকর করাও কঠিন হবে। তাছাড়া হংকংয়ে বিক্ষোভের বিরুদ্ধে এটিই প্রথম এমন কড়া পদক্ষেপ বলে সতর্ক করেছেন সমালোচকরাও। চীনের মূলভূখণ্ডে বন্দি প্রত্যর্পণ নিয়ে একটি প্রস্তাবিত বিল বাতিলের দাবিতে জুনে হংকংয়ে আন্দোলন শুরু হয়েছিল।

টানা আন্দোলনের মুখে ওই বিল প্রথমে ‘মৃত’ এবং পরে বাতিল ঘোষণা করা হলেও আন্দোলন থামেনি। বরং গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীরা এখন হংকংয়ের চীনপন্থী সরকারের পদত্যাগ দাবি করছে। চার মাস ধরে চলা আন্দোলনের সবচেয়ে সংঘাতময় দিনটি ছিল চীনে কমিউনিস্ট শাসনের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কীর দিন। পুলিশ ও বিক্ষোভকারীদের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় ১৮ বছরের এক তরুণ একটি ধাতব লাঠি হাতে এক পুলিশের দিকে এগিয়ে গেলে তাকে থামাতে পুলিশ সরাসরি তার বুকে গুলি করে।

হংকংজুড়ে এদিন ২৬৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়, যাদের ১৭৮ জন পুরুষ ও ৯১ জন নারী। বিক্ষোভ শুরুর পর এর আগে একদিনে এত বিক্ষোভকারী গ্রেফতার হয়নি।

আরপি/ এআর



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top