তুরস্ক-কাতার যৌথ সামরিক ঘাঁটি ‘খালিদ বিন ওয়ালিদ’
তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েব এরদোগান বলেছেন, কাতারের মাটিতে তুরস্কের নতুন সামরিক ঘাঁটির নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। শীঘ্রই সেটি চালু করা হবে। বিখ্যাত মুসলিম সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদের নামে নামকরণ করা হবে ঘাঁটির।
সোমবার রাষ্ট্রীয় সফরে কাতারের রাজধানী দোহায় যান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট। সেখানে এদিন সকালেই তিনি তুর্কি-কাতার হাই স্ট্রাটেজিক কমিটির বৈঠকে অংশ নেন। পরের কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আলে ছানির সাথেও বৈঠক করেন। তুর্কি ঘাঁটিতে মোতায়েন ৫ হাজার তুর্কি সেনা সদস্যের সাথেও সাক্ষাৎ করেন এরদোগান। দুই বছর আগে কাতারের ওপর সৌদি আরবের নেতৃত্বে কয়েকটি প্রতিবেশী দেশ অবরোধ আরোপ করলে তুরস্ক কাতারে সেনা মোতায়েন করে।
স্থানীয় মিডিয়ার খবর অনুযায়ী, তুরস্ক থেকে ১০০টি অত্যাধুনিক ট্যাঙ্ক কিনতে চায় কাতার। এই বিষয়টি নিয়ে অগ্রগতির এক পর্যায়ে তুর্কি প্রেসিডেন্টকে সফরের আমন্ত্রণ জানান শেখ তামিম।
স্ট্রাটেজিক কমিটির সাথে বৈঠকের পর এরদোগান সাংবাদিকদের বলেন, তুরস্ক-কাতার জয়েন্ট ফোর্স কমান্ড শুধু কাতারের জন্য নয়, এটি উপসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতা রক্ষায়ও কাজ করবে। এই বাহিনীর ঘাঁটির নামকরণ করা হবে, মহানবীর (সা.) সেনাপতি খালিদ বিন ওয়ালিদের নামানুসারে। বীরত্বের জন্য যাকে ‘সাইফুল্লাহ’ বা আল্লাহর তরবারি উপাধি দেয়া হয়েছিল।
এরদোগান বলেন, এই সামরিক ঘাঁটি হবে ভ্রাতৃত্ব, বন্ধুত্ব, সৌহার্দ ও আন্তরিক সম্পর্কের প্রতীক। তিনি বলেন, আমরা কখনো বন্ধুকে বিপদের মুখে এক ফেলে যাই না। ইতিহাস তার সাক্ষী, ভবিষ্যতে এমনটি হবে না কখনো।
সফররত তুর্কি প্রেসিডেন্টের প্রতিনিধি দলে রয়েছেন দেশটির একাধিক প্রভাবশালী মন্ত্রী ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন মিত্র হিসেবে পরিচিত কাতারের সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে তুরস্কের। ২০১৭ সালে সৌদি জোটের কাতারবিরোধী অবরোধ দৃশ্যত একাই ব্যর্থ করে দেয় আঙ্কারা। ওই অবরোধের কয়েক মাসের মাথায় দেশটিতে তুর্কি রফতানির পরিমাণ বৃদ্ধি পায় প্রায় তিনগুণ। ২০১৭ সালের ৫ জুন কাতারবিরোধী অবরোধ আরোপ করে সৌদি জোট। একই বছরের আগস্টে তুর্কি অর্থমন্ত্রী নিহাদ জিবেকজি মন্তব্য করেন, কাতারের চাহিদা পূরণে তুরস্কই যথেষ্ট।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আঙ্কারার এ অবস্থানের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ বেশ কিছু কারণ রয়েছে। ২০১৬ সালে তুরস্কের ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের সময় এরদোগানের পাশে দাঁড়ান কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-ছানি। অভ্যুত্থান চেষ্টার পর এরদোগানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাতারের বিশেষ বাহিনীর ১৫০ সদস্যের একটি ইউনিট তুরস্ক পাঠানো হয়। মুসলিম ব্রাদারহুড ও হামাসের মতো রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যাপারে দুই দেশেরই দৃষ্টিভঙ্গি সৌদি আরবের বিপরীত মেরুতে। সূত্র:আলজাজিরা
আরপি/ এএস
বিষয়: তুরস্ক কাতার সামরিক ঘাঁটি
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: