রাজশাহী শুক্রবার, ২৬শে এপ্রিল ২০২৪, ১৩ই বৈশাখ ১৪৩১


রাশিয়ার জ্বালানি রপ্তানির আয়ে নজিরবিহীন উল্লম্ফণ ঘটছে


প্রকাশিত:
১৯ আগস্ট ২০২২ ০৪:২৯

আপডেট:
১৯ আগস্ট ২০২২ ০৪:৩০

ছবি: সংগৃহিত

বিশ্বজুড়ে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বৃদ্ধির ফলে চলতি বছর তেল ও গ্যাস রপ্তানির মাধ্যমে অন্তত ৩৩৭.৫ বিলিয়ন (১ বিলিয়ন=১০০ কোটি) ডলার আয় করবে রাশিয়া। শতকরা হিসেবে এই আয় গত ২০২১ সালের চেয়ে ৩৮ শতাংশ বেশি।

রাশিয়ার অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক নথিতে এ তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে বলে সোমবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে রয়টার্স। নথিটির একটি অনুলিপি পেয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক বৈশ্বিক এই বার্তাসংস্থা।

মন্ত্রণালয়ের নথি বিশ্লেষণ করে জানা গেছে, মুনাফার একটি বড় অংশই জ্বালানি তেল রপ্তানি থেকে আসবে বলে আশা করছে সরকার।

ইউক্রেনে সামরিক অভিযানের জেরে যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের জারি করা নিষেধাজ্ঞার কারণে ইউরোপে তেলের বাজার অনেকাংশে হারিয়েছে রাশিয়া, তবে একই সঙ্গে এশিয়ার অনেক দেশে নতুন বাজার তৈরি হয়েছে রুশ তেলের।

এবং সেই বাজার ইউরোপের বাজারের থেকেও বড়। এশীয় ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে তাই বিগত বছরসমূহের তুলনায় চলতি বছর তেলের উৎপাদনও বাড়িয়ে দিয়েছে রাশিয়া। অর্থ মন্ত্রণালয়ের নথি পর্যালোচনা করে জানা গেছে আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত দেশটি বাড়তি উৎপাদন অব্যাহত রাখবে।

নিষেধাজ্ঞা জারির পর থেকে রাশিয়ার জ্বালানি তেলের সবচেয়ে বড় ক্রেতা চীন। সম্প্রতি রাশিয়া থেকে গ্যাস কেনার পরিমাণও বাড়িয়েছে দেশটি। তবে এখনও ইউরোপ রুশ গ্যাসের সবচেয়ে বড় ক্রেতা বলে উল্লেখ করা হয়েছে সরকারি নথিতে।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার ইউরোপীয় মিত্রদের নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে রাশিয়া। সেই সঙ্গে কমেছে সাধারণ জনগণের আয় ও জীবনযাত্রার মান।

চলমান এই মন্দা অবস্থায় যদি এ পরিমাণ অতিরিক্ত মুনাফা আসে, সেক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট পুতিন রুশ বাহিনীকে আরও সম্প্রসারণ করতে পারবেন, সরকারি প্রশাসন ও পরিষেবাকর্মীদের বেতন-ভাতা বাড়াতে পারবেন বছর শেষে, সামাজিক কল্যাণমূলক যেসব তহবিল চালু রয়েছে রাশিয়ায়— সেসব পূর্ণমাত্রায় সচল করা সম্ভব হবে।

তবে ইউরোপীয় অর্থনীতিবিদদের মতে, নিষেধাজ্ঞার ফলে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে রুশ অর্থনীতির, জ্বালানি মুনাফার সুবাদে তার মাত্র কিছু অংশ পূরণ সম্ভব।

ইউরোপে রাশিয়ার জ্বালানির সবচেয়ে বড় ক্রেতা জার্মানির থিঙ্কট্যাঙ্ক সংস্থা ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড সিকিউরিটি অ্যাফেয়ার্সের জ্যেষ্ঠ সহযোগী গবেষক জেনিস ক্লাগ রয়টার্সকে এ সম্পর্কে বলেন, ‘নিষেধাজ্ঞার প্রভাবে রাশিয়ার অর্থনীতিতে এক ধরনের ভারসাম্যহীনতা দেখা দিয়েছে। রুশ অর্থনীতির সবচেয়ে শক্তিশালী তিন স্তম্ভ হলো জ্বালানি, তথ্যপ্রযুক্তি ও ব্যাংকিং।’

‘জ্বালানির মুনাফার কারণে হয়তো অর্থনীতির ক্ষয়ক্ষতি খানিকটা মেরামত করা যাবে, কিন্তু তথ্যপ্রযুক্তি ও ব্যাংকিং ব্যবস্থায় নিষেধাজ্ঞার কারণে এ দু’টি খাত থেকে মুনাফার আর সম্ভাবনা নেই রাশিয়ার।’

আরপি/ এসএইচ ০৬



আপনার মূল্যবান মতামত দিন:

Top