‘একদিনের পেট্রোলও নেই শ্রীলঙ্কার’
ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটের মধ্যে থাকা শ্রীলঙ্কার জ্বালানি তেলের মজুত নিয়ে কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন দেশটির জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা উইজেসেকেরা। তিনি বলেছেন, ব্যবহারের মতো একদিনের কম পেট্রোল মজুত রয়েছে। আর পেট্রোলের পরবর্তী চালান আসতে দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় লাগতে পারে। এ অবস্থায় তাদের জন্য সামনে আরো কঠিন পরিস্থিতি অপেক্ষা করছে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এদিকে দেশটির শিক্ষামন্ত্রী ঘোষণা দিয়েছেন যে, ৪ জুলাই থেকে আরো এক সপ্তাহ বন্ধ থাকবে সরকারি-বেসরকারি সব ধরনের স্কুল। আগামী গ্রীষ্মকালিন ছুটির মেয়াদে সিলেবাস সম্পূর্ণ করা হবে।
রবিবার জ্বালানিমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, তাদের কাছে এখন ১২ হাজার ৭৭৪ টন ডিজেল ও চার হাজার ৬১ টন পেট্রোল আছে। পেট্রোলের পরবর্তী চালান ২২-২৩ জুলাইয়ের মধ্যে পাওয়া যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে। ডিজেলের একটি চালান এই সপ্তাহের শেষদিকে পৌঁছাবে বলে আশা করলেও উইজেসেকেরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, পর্যাপ্ত জ্বালানি ও অপরিশোধিত তেল আমদানির ক্ষেত্রে যথেষ্ট অর্থ শ্রীলঙ্কার হাতে নেই। জ্বালানি কিনতে শ্রীলঙ্কার কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন কেবল ১২ কোটি ৫০ লাখ ডলার দিতে পারবে, যা জ্বালানির পুরো চালান খালাসের জন্য প্রয়োজনীয় ৫৮ কোটি ৭০ লাখ ডলারের চেয়ে অনেক কম। এ বছর জ্বালানি দেওয়া সাত সরবরাহকারী দেশটির কাছে এখনো ৮০ কোটি ডলার পায় বলেও জানিয়েছেন উইজেসেকেরা। শ্রীলঙ্কা ব্যক্তিগত যানবাহনে জ্বালানি তেল বিক্রিতে আগামী সপ্তাহ পর্যন্ত নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পর দেশটির জ্বালানি তেল ফুরিয়ে যাওয়ার এ খবর এল।
বিশেষজ্ঞদের ধারণা, ৭০-এর দশকের তেল সংকটের সময় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে জ্বালানি তেল রেশনিংয়ের পর সম্ভবত শ্রীলঙ্কাই প্রথম দেশ, যারা সাধারণ মানুষের কাছে পেট্রোল বিক্রি বন্ধ করল। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানির অর্থ পরিশোধে পর্যাপ্ত বিদেশি মুদ্রা না থাকায় ১৯৪৮ সালে যুক্তরাজ্যের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর সোয়া দু্ই কোটি জনসংখ্যার দ্বীপদেশটি এখনই সবচেয়ে খারাপ অর্থনৈতিক সংকট পার করছে।
জ্বালানি, খাবার এবং ওষুধের ব্যাপক ঘাটতি শ্রীলঙ্কায় জীবনযাত্রার ব্যয়কে রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সাহাঘ্য করেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় শ্রীলঙ্কা কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিদেশি বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সংস্থার দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের একটি দলের সঙ্গে ৩০০ কোটি ডলার বেইলআউটের একটি চুক্তি নিয়ে তাদের আলোচনা বৃহস্পতিবার শেষও হয়েছে। দুই পক্ষের মধ্যে কোনো চুক্তি না হলেও আইএমএফের দলটি আলোচনায় ‘ব্যাপক অগ্রগতি’ হয়েছে বলে দাবি করেছেন।
বিষয়: শ্রীলঙ্কা
আপনার মূল্যবান মতামত দিন: